অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা কমেছে দেশী পেঁয়াজের দাম। জাত ও মানভেদে নতুন উঠা প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ ৯০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। শীতকালীন শাক-সবজির দামও নি¤œমুখী। তবে নিত্যপণ্যের বাজারে আরেকদফা দাম বেড়েছে সরু চাল, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল ও এলাচের।
শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট এবং মিরপুর সিটি কর্পোরেশন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, নতুন উঠা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি মিসর, তুরস্ক, চীন ও মিয়ানমার থেকে আমদানি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া উৎপাদন ভাল হওয়ায় প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে ফের পেঁয়াজ আসা শুরু হতে পারে।
রাষ্ট্রীয় বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবি ট্র্যাকসেলে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকায় বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আশা করা হচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে। কাপ্তান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মনির হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, শ্যামবাজার ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। পাইকারিতে দাম কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় খুচরা বাজারেও দাম কমতে শুরু করেছে। রাজধানীর বেশিরভাগ বাজারে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ ৯০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আমদানিকৃত বড় সাইজের পেঁয়াজ ৭০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।
জানা গেছে, গত এক সপ্তায় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মসলা পণ্য এলাচের দাম। প্রতিকেজি এলাচ ৬ হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গত পনের দিন আগেও প্রতিকেজি এলাচ ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে খুচরা বাজারে। এছাড়া বাড়তে শুরু করেছে সরু চালের দাম। মিনিকেট ও নাজিরশাইল খ্যাত প্রতিকেজি সরু চাল মানভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দাম বেড়ে সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ৯৪-৯৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। প্রতিকেজি মসুর ডাল ৬৫-১২৫ টাকা, চিনি ৬২-৬৫, রসুন ১৪০-২০০, আদা ১১০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।
এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে কমেছে সবজির দাম। বাজারে সবজিভেদে কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। অপরিবর্তিত আছে গরু-খাসির মাংস ও মুরগির দাম।
বাজারে কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো (আধা কাঁচা) ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ক্ষিরা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শিম (কালো) ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শিম (সাদা) ৩০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৮০ টাকা, নতুন আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পুরনো আলু ৩৫ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ১৫ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া আকারভেদে প্রতিপিস বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ফুলকপি ২০ থেকে ৩০ টাকা, লাউ ৩৫ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি আটি (মোড়া) কচুশাক পাঁচ থেকে সাত টাকা, লালশাক আট টাকা, মুলা ১০ টাকা, পালংশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, লাউশাক ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
তবে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। বর্তমানে কাঁচা মরিচ কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিদরে। অপরিবর্তিত আছে মাছের বাজার। প্রতিকেজি কাচকি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, মলা ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৬৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বাগদা ৫৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, মৃগেল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙাস ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাতল ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসব বাজারে প্রতিকেজি বয়লার মুরগি ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, লেয়ার ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা, সোনালি ২৬০ থেকে ২৬০ কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস ৫৫০ টাকা, খাসি ৭৮০ টাকা, বকরি ৭২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: