ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার নষ্ট করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ১১:১৮, ১৭ জানুয়ারি ২০২০

গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার নষ্ট করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্র ও সাধারণ জনগণের ভোটের অধিকার নষ্ট করে দিয়েছে। খালেদা জিয়া মুক্ত না হলে গণতন্ত্র ভোটের অধিকার মুক্ত হবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া গণমানুষের নেতা। তাই এ সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। তিনি কারাগারের বাইরে থাকলে আওয়ামী লীগ এসব অন্যায় করতে পারত না। খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করলে এ দেশে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না। কারণ গণতন্ত্র এবং খালেদা জিয়া অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। খালেদা জিয়া সেই ব্যক্তি, সেই নেত্রী, যে সারাটাজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। লড়াই করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় শিল্পকলা একাডেমির সম্মেলন কক্ষে নীলফামারী জেলা বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, প্রধান বক্তা ছিলেন রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, বিশেষ বক্তা ছিলেন রংপুর বিভাগীয় দুইজন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক যথাক্রমে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল খালেক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জহুরুল আলম। বিএনপির মহাসচিবের ভাষ্য, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল। এ সরকার রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানাচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বানাচ্ছে। তারা যে মুক্তিযুদ্ধের সরকার-সরকার করে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ইতো বানিয়েছেন খালেদা জিয়া। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার ঘোষক ছিলেন জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতন্ত্রের চেতনা, সে চেতনাকে নিয়ে আমরা লড়াই করছি। সেই বাংলাদেশ এখন নেই। এই সরকারের সময় দুর্নীতি লুটপাট চলছে ও শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে। আর হত্যা, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ যেন একটা সাধারণ বিষয় হয়ে গেছে। মানুষ এখন আর কথা বলে না। কথা বলার সুযোগ নেই। ভয়ভীতি ছড়িয়ে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে। ঢাকার দুটি সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, যাদের নৈতিকতা নেই, তাদের এই নির্বাচনে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি ইভিএমেরও সমালোচনা করে বলেন নির্বাচন কমিশনকে আমরা ভাল করে চিনি, অযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন। আর এই সরকার কখনও একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে দেবে না। তারা জানে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে কোন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জিততে পারবে না। সে কারণে এ সময় বাধা, গোলযোগ সৃষ্টি করবে, বিএনপি বা বিরোধী দলের প্রার্থীদের প্রতি চড়াও হবে। তারপরও নির্বাচনে বিএনপি আছে, থাকবে এবং এভাবে বিজয় হবে ইনশাল্লাহ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ভারতের এনআরসি প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৭১ সালের পর এ দেশের মানুষ ভারত কেন যাবে। ভারত আমাদের চেয়ে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত না। বরং ভারতের ১০ লাখ মানুষ বাংলাদেশে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ২য় অবস্থানে বাংলাদেশ। তাই স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের কোন নাগরিক ভারতের নাগরিকত্ব নেয়নি। প্রধান বক্তার বক্তব্যে রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, দেশের গণতন্ত্রের পাশাপাশি ব্যাংকে টাকা, জনগণের ভোটের অধিকার নেই। খালেদা জিয়াকে মুক্তসহ এই জালেম সরকারের পতন ঘটাতে আগামীতে বিএনপির আন্দোলন হবে ভূমিকম্প ও সুনামির মতো। আমরা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সঠিক সময়ে ঘোষণার মাধ্যমে আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে। সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে আলমগীর সরকার ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জহুরুল আলমের নাম ঘোষণা করা হয়।
×