ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘শুধু অর্থের লোভে খালেদা ও তার পুত্র দেশের সর্বনাশ করে গেছেন’

প্রকাশিত: ১২:৩২, ১৬ জানুয়ারি ২০২০

‘শুধু অর্থের লোভে খালেদা ও তার পুত্র দেশের সর্বনাশ করে গেছেন’

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা বলেছেন, শুধুমাত্র অর্থের লোভে খালেদা জিয়া ও তার পুত্র দেশের যে সর্বনাশ করে গেছেন, তা কোনদিন পূরণ হবে না। এখনও দেশের কিছু কুলাঙ্গার বঙ্গবন্ধু ও মুজিববর্ষ নিয়ে কটাক্ষ করার দুঃসাহস দেখায়। জাতি এদের কোনদিন ক্ষমা করবে না। অন্যদিকে বিএনপির সংসদ সদস্য গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বুধবার রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আফম রুহুল হক, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সরকারী দলের ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, বেনজীর আহমেদ, বেগম কানিজ ফাতেমা আহমেদ, বিএনপির রুমিন ফারহানা ও বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আফম রুহুল হক বলেন, মাত্র এক দশকে বাংলাদেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্যের হার ৪৩ ভাগ থেকে কমে ২০ ভাগে নেমে এসেছে। প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, রিজার্ভ সবকিছুই বেড়েছে। গ্রামের চেহারা আজ বদলে গেছে। আজ সাড়ে ৯ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। একদম গ্রাম পর্যায়ে প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, মাত্র এক দশকে প্রযুক্তিতে সারাবিশ্বে নেতৃত্বদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করেছে। কিন্তু দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে কারাগারে বন্দী খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকতে শুধুমাত্র তথ্য পাচার হবে এমন কথা বলে ওই সময় সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে দেশকে সবদিক থেকে পিছিয়ে দিয়ে গেছেন। স্যামসাং ওই সময় বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এসেছিল। কিন্তু তার ছেলে হাওয়া ভবন খুলে স্যামসাং থেকে ঘুষ দাবি করায় তারা বাংলাদেশ থেকে চলে গিয়ে ভিয়েতনামে বিনিয়োগ করে। এখন ভিয়েতনামে স্যামসাংয়ের কারখানায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। অর্থের লোভে তারেক জিয়ারা দেশের যে সর্বনাশ এবং অপূরণীয় ক্ষতি করে গেছে তা কোনদিন পূরণ হবার নয়। ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, দেশের কিছু কুলাঙ্গার বঙ্গবন্ধু ও মুজিববর্ষকে নিয়ে কটাক্ষ করার দুঃসাহস দেখায়। জাতি এদের কোনদিন ক্ষমা করবে না। শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়, হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারকে হত্যার সঙ্গেও জড়িত জিয়াউর রহমান। তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও হত্যার রাজনীতি করেছে। স্বাধীন দেশে এদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, খুনীরা বঙ্গবন্ধুর মুখের দিকে তাকিয়ে গুলি চালাতে সাহস পায়নি, ঘুরে দাঁড়ালে গুলি করা হয়। কী নির্মম, নিষ্ঠুরতা। বঙ্গবন্ধুকে নিরাপত্তা দিতে ব্যাকআপ দল আসেনি। এ বিষয়গুলো অবশ্যই তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য জাতিকে জানানো উচিত। সরকারের অনেক সাফল্য রয়েছে এটা সবাইকে স্বীকার করতে হবে। কিন্তু এখনও এক কোটির ওপরে অতিদরিদ্র্য রয়েছে। দেশে একজন বিচারকের কাছে পাঁচ সহ¯্রাধিক মামলা। দেশে ফরেনসিক এভিডেন্সের জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় করা প্রয়োজন। বিএনপির রুমিন ফারহানা সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ৩০ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশের কোন রাজনৈতিক দল ও বিশ্বের কারও কাছে ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। দেশের অর্থনীতি প্রচ- খারাপ অবস্থায় রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস দিচ্ছে সকল অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। দেশে বিনিয়োগের কোন পরিবেশ নেই। বাজেট ঘাটতি অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ব্যাংকখাতে লুটপাট চলছে, সরকার কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পুঁজিবাজার ধসে পড়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা লুন্ঠন হয়েছে পুঁজিবাজার থেকে।
×