ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সূচী নিয়ে প্রশ্ন

মেলবোর্নে দাবানলের ছোবল, শারাপোভার ম্যাচ বাতিল

প্রকাশিত: ১২:১৩, ১৬ জানুয়ারি ২০২০

মেলবোর্নে দাবানলের ছোবল, শারাপোভার ম্যাচ বাতিল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত কয়েক মাস ধরেই অস্ট্রেলিয়ায় দেখা গেছে ভয়ঙ্কর দাবানল। তীব্র ধোঁয়াশায় ঢেকেছে মেলবোর্নের আকাশ। আর মাত্র তিনদিন পরই পর্দা উঠবে নতুন মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট। অথচ মেলবোর্নের দূষণ এতোটাই ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কুয়ং ক্ল্যাসিকে মারিয়া শারাপোভার ম্যাচ বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোর্টে মারাত্মক কাশিজনিত সমস্যায় অবসর নিতে বাধ্য হয়েছেন স্লোভেনিয়ার নারী খেলোয়াড় দালিলা ইয়াকোপোভিচও। যে কারণেই প্রশ্ন উঠেছে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ভবিষ্যত নিয়েও। পাঁচ গ্র্যান্ডস্লামের মালিক মারিয়া শারাপোভা অবশ্য বলছেন, ‘ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত সঠিক।’ স্কোর যদিও বলছে, এতে শাপে বর হয়েছে মাশার। কারণ রাশিয়ান তারকা তখন ৬-৭ (৪-৭) এবং ৫-৫ ব্যবধানে পিছিয়ে জার্মানির লরা সিগমুন্ডের বিরুদ্ধে। আম্পায়ার ম্যাচ বন্ধ করার সময় বলেন, ‘দূষণের ফলে খেলোয়াড়দের সমস্যা হচ্ছিল। তাই ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’ দূষণের কবলে এখন অত্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের এমন অবস্থা যে, সামনের সপ্তাহে শুরু হওয়া অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের অনেক খেলোয়াড়ের অনুশীলন পর্ব বাতিল করে দেয়া হয়েছে। ধোঁয়াশার মধ্যে অনুশীলন করতে গিয়ে এমন কাশি হতে থাকে এক খেলোয়াড় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে নাম তুলে নিতে বাধ্য হন। নিজের ম্যাচের পর মাশা তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘এখানকার পরিস্থিতি চরম। দ্বিতীয় সেটে খেলার সময়ই আমার কাশি হচ্ছিল। এরপরই আম্পায়াররা কোর্টে নেমে আসেন। বলেন, আরও একটা গেম খেলতে। আমরা ইতোমধ্যেই ওই পরিস্থিতির মধ্যে দুই ঘণ্টা ধরে ছিলাম। যার ফলে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছিল। যে কারণে আমি বলব ম্যাচ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত একদমই সঠিক হয়েছে।’ এমন পরিস্থিতি খেলার আদর্শ নয় বলে মন্তব্য করেছেন শারাপোভার প্রতিপক্ষ সিগমুন্ডও। এ প্রসঙ্গে জার্মান তারকা বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে আমি প্রথমবার খেলছি। দ্বিতীয় সেট খেলার সময় আমারও সমস্যা হচ্ছিল। আপনারাও এটা দেখলেই বুঝতে পারবেন। তবে খেলতে গিয়ে আমরা বিষয়টা টের পেয়েছি। এই পরিস্থিতি কোনভাবেই খেলার আদর্শ নয়।’ বাছাইপর্বে ম্যাচ খেলার সময় মারাত্মক কাশিজনিত সমস্যায় অবসর নিতে বাধ্য হওয়া স্লোভেনিয়ার নারী খেলোয়াড় দালিলা ইয়াকোপোভিচ বলেন, ‘আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল আমি পড়ে যাব। আমি মাটিতে বসে পড়ি, কারণ আমার হাঁটার মতো অবস্থা ছিল না তখন।’ খেলার ফাঁকে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছেন ইউজেনি বাউচার্ডও। এদিন তিনি শেষ পর্যন্ত ৪-৬, ৭-৬ (৪) এবং ৬-১ সেটে পরাজিত করেন চীনের শিয়াওদি ইউকে। দাবানলের পর এমন পরিস্থিতির কারণে গত সপ্তাহেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন সার্বিয়ান তারকা নোভাক জোকোভিচ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বলেছিলেন, দাবানলের কারণে ধোঁয়ায় দূষিত বায়ু অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। এটা মেনে নিয়েও টুর্নামেন্টের আয়োজকরা নির্ধারিত সময়েই মৌসুমের প্রথম মেজর এই টুর্নামেন্টের শুরুর কথা ভাবছেন। টেনিস অস্ট্রেলিয়ার প্রধান ক্রেগ টাইলি নির্ধারিত সময়ে খেলার পেছনে যুক্তিও তুলে ধরেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মেলবোর্ন পার্কে তিনটি ছাদঢাকা মাঠ আছে। এছাড়াও আরও ৯টি ইনডোর কোর্ট রয়েছে। পরিস্থিতি খুব খারাপ না হলে সূচী পেছানোর কোন কারণ নেই।’ তবে দাবানলের প্রভাব অন্যান্য খেলার মধ্যেও পড়েছে। গত নবেম্বরে বাতিল হয়েছে ২০১৯ এফআইএ ওয়ার্ল্ড র‌্যালির ফাইনাল রাউন্ড। ডিসেম্বরে হতে পারেনি সিডনি-হোবার্ট নৌকা র‌্যালি। তবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের বিষয়ে এখনও সে রকম কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। যে কারণে নির্ধারিত সময়েই শুরু হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মৌসুমের প্রথম মেজর টুর্নামেন্টের পুরুষ এককের চ্যাম্পিয়ন নোভাক জোকোভিচ। মহিলা এককে গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিলেন জাপানের তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় নাওমি ওসাকা। এবারও শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়ে কোর্টে নামবেন তারা।
×