ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার ও বিসিবি যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই সফরসূচী করা হয়েছে

পাক সফর নিয়ে সমালোচনায় বিস্মিত পাপন

প্রকাশিত: ১২:১২, ১৬ জানুয়ারি ২০২০

পাক সফর নিয়ে সমালোচনায় বিস্মিত পাপন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর চূড়ান্ত হয়ে গেছে। বাংলাদেশ সরকার ও ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই সফর হয়েছে। আগে টি২০ সিরিজটি খেলে আসবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এরপর টেস্ট খেলতে যাবে। তাও আবার দুই টেস্ট একসঙ্গে খেলবে না। প্রথম টেস্ট খেলার পর দ্বিতীয় টেস্ট আরেকটা সময়ে খেলবে। সরকার থেকে বিসিবিকে যেভাবে আদেশ দেয়া হয়েছে, সফরে গেলে স্বল্প সময় অবস্থান করতে হবে। বেশিদিন থাকা যাবে না। সেভাবেই সফর হয়েছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তাই বুধবার বলেছেন, ‘আমরা একই ধারাতে আছি। আমরা যেভাবে বলেছি, সেভাবেই হয়েছে।’ সফরে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ, দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের সঙ্গে একটি ওয়ানডে ম্যাচও যুক্ত হয়েছে। এ নিয়ে আবার সমালোচনাও হচ্ছে। ক্রিকেট কূটনীতিতে নাকি বিসিবি’র হার হয়েছে। পিসিবি’র (পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড) জয় হয়েছে। আসলে সে রকম কিছুই ঘটেনি। বিসিবি সভাপতি বারবারই বলেছেন, ‘আমরা আগে টি২০ সিরিজ খেলতে দল পাঠাতে চাই। এরপর সময় সুযোগ বুঝে টেস্ট খেলতে যাওয়া হবে।’ তাই হয়েছে। শুধু একটি ওয়ানডে সফরে বেড়েছে। বিসিবি একসঙ্গে তিন ম্যাচের টি২০, দুই টেস্ট ও এক ওয়ানডের সিরিজ খেলতে দলকে পাঠাচ্ছে না। তিন মাসে তিনবার দল পাঠানো হবে। শুরুতে এই মাসে ২৪ থেকে ২৭ জানুয়ারি তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ হবে। লাহোরে ২৪, ২৫, ও ২৭ জানুয়ারি যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি২০ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য দল যাবে ২২ জানুয়ারি। আসবে ২৭ অথবা ২৮ জানুয়ারি। তার মানে ৭ দিনের বেশি লাহোরে থাকা হচ্ছে না বাংলাদেশ টি২০ দলের ক্রিকেটারদের। এরপর ফেব্রুয়ারিতে আবার দল পাঠানো হবে। এবার এক টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। রাওয়ালপিন্ডিতে ৭ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি প্রথম টেস্ট ম্যাচটি হবে। যেটি আইসিসি’র টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। এবারও ৭ দিনের বেশি দল পাকিস্তানে থাকবে না। প্রথম টেস্টের পর এপ্রিলে হবে দ্বিতীয় টেস্ট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে করাচীতে ৫ থেকে ৯ এপ্রিল দ্বিতীয় টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। এ টেস্টের আগে করাচীতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার ৩ এপ্রিল একটি ওয়ানডে ম্যাচও হবে। এবার এক দুইদিন বেশি থাকা হবে। বিসিবি সভাপতি আগে যা বলেছিলেন, সেভাবেই সব হয়েছে। এরপরও সমালোচনা হচ্ছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তাই বুধবার দুবাই থেকে আইসিসি সভা শেষে দেশে ফিরে বলেছেন, ‘আমি জানি না এটা (সমালোচনা) কেন বলছে। ওরা (পাকিস্তান) কখনই বলেনি আমরা টি২০ খেলে আসব। ওরা প্রথমে বলেছে পুরো সিরিজ খেলতে হবে। পরে বলেছে আগে টেস্ট খেলতে হবে। এখন এটা তারা (সমালোচকরা) কেন বলছে, এটার কোন কারণই খুঁজে পাচ্ছি না। আমার কাছে এটা অদ্ভুত লাগছে। আমরা যেটা বলেছি আমার মনে হয় এটাই হয়েছে। আমি যেদিন প্রথম মিডিয়াতে বলেছি, এটাই বলেছি আমরা প্রথমে যাব টি২০ খেলে আসব। পরে আমরা টেস্ট খেলব।’ সফর নিয়ে বাংলাদেশ সরকার থেকে যে সিগন্যাল মিলেছিল সেভাবেই হয়েছে বলেও পাপন বলেন, ‘সরকার থেকে বলা আছে, আগের থেকে আমরা যেটা বলে আসছি, সেটাই লেখা আছে। তারা বলেছে সংক্ষিপ্ত অবস্থান। অবস্থা বিবেচনা করে পরবর্তীতে টেস্টগুলো খেলবে। আমরা এখন পর্যন্ত সেই ধারাতেই আছি।’ দুবাইয়ে হওয়া আইসিসি সভায় সফরটি কিভাবে আইসিসি’র প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহর, বিসিবি সভাপতি ও পিসিবি সভাপতি এহসান মানি মিলে করেছেন, তাও বোঝানোর চেষ্টা করেছেন বিসিবি সভাপতি পাপন। তিনি বলেছেন, ‘আইসিসি প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহরের সঙ্গে আমার আগেই কথা হয়েছিল এই সময়টায় উনি থাকবেন, আমি সময় পেলে যেন দেখা করি। গিয়ে দেখলাম পাকিস্তানও আছে ওইখানটায়। আমাদের আগেই তারা গিয়েছে। উনাদের সঙ্গে কথাও হয়েছে। আমার সঙ্গে যখন প্রথম কথা হলো বলল যে আড়াইটার সময় আমাদের সঙ্গে বসবে।’ একটা টেস্ট ও টি২০ খেলে আসার পিসিবি’র প্রস্তাবও যে বাদ দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি তাও জানান, ‘তারা বলল, একটা টেস্ট এবং টি২০ খেলে আসা যায় কিনা। আমরা বলেছি শুধু টি২০ খেলে চলে আসতে চাই। তারপর একটা সময় যাব। পাকিস্তানের বেশ ক্ষতি হচ্ছে। পাকিস্তানে গিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে খেলার আগে আমাদের একটা প্র্যাক্টিস ম্যাচ দরকার। ওরা বলেছিল টি২০ করা যায় কিনা। টি২০ হলে তাদের আয় কিছুটা পোষাবে। তিনবারে একটা টুর্নামেন্ট হোস্ট করা তাদের জন্য অনেক খরচ বেড়ে গেছে। এত সময়ও নেই তারা নতুন করে মার্কেট করতে পারবে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে টি২০’র চেয়ে একটা ওয়ানডে ম্যাচ (দ্বিতীয় টেস্টের আগে) হলে অনুশীলনটা একটু ভাল হবে।’ সবদিকেই দেখা যাচ্ছে, সরকার ও বিসিবি যেভাবে শুরু থেকে সফর নিয়ে চেয়েছে, সেভাবেই সফর হয়েছে। আগে টি২০ সিরিজ হবে। এরপর দুই ধাপে টেস্ট সিরিজ হবে। সঙ্গে একটি ওয়ানডে যুক্ত হয়েছে।
×