ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চুক্তি সই

এক বছরে পাঁচ লাখ প্রিপেইড মিটার বসাবে নেসকো

প্রকাশিত: ১১:০৮, ১৬ জানুয়ারি ২০২০

এক বছরে পাঁচ লাখ প্রিপেইড মিটার বসাবে নেসকো

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মোট গ্রাহকের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রিপেইড মিটারে বিদ্যুত সরবরাহ করতে চায় নর্দার্ন ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে বুধবার ৫ লাখ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার কেনার চুক্তি করেছে দেশের উত্তর-পশ্চিমে বিদ্যুত বিতরণকারী কোম্পানিটি। চীনা কোম্পানি সেনজেন স্টার ইনস্ট্রুমেন্ট এবং অকুলিন টেকের সঙ্গে নেসকো একটি চুক্তি সই করেছে। রাজধানীর বিদ্যুত ভবনে অনুষ্ঠিত চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ডিজিটালাইজেশনের ঝুঁকি মোকাবেলায় উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। চুক্তিতে নেসকোর পক্ষে কোম্পানি সচিব সৈয়দ আবু তাহের এবং চীনা কোম্পানি সেনজেন স্টারের প্রেসিডেন্ট লাউ চুন ডেন এবং অকুলিন টেকের সাদাব সাজ্জাদ নিজ নিজ কোম্পানির পক্ষে সই করেন। প্রিপেইড মিটার স্থাপন করায় বিদ্যুত বিতরণে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, অনলাইন রিয়েল টাইম ডাটা এক্সেস, ভার্সেটাইল পেমেন্ট, যে কোন স্থান থেকে বিদ্যুত বিল সংগ্রহ ও পরিশোধের ব্যবস্থা করা, অকারিগরি লোকসান শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব বলে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১৪ কোটি ৮২ লাখ ৬২ হাজার টাকা। এর মধ্যে জিওবি অর্থায়ন ৪০০ কোটি ৬৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা এবং নেসকো ১৪ কোটি ১২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করবে। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমরা দিন দিন ডিজিটাল হচ্ছি। বিভিন্ন খাতে ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লাগছে। এর ভালো দিক যেমন আছে তেমনি ঝুঁকিও রয়েছে। বিশে^র বিভিন্ন দেশ সাইবার এ্যাটাকের শিকার হচ্ছে। আমাদের এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। যেন এমন কোন আঘাত আমাদের ওপর না এসে পড়ে। ডিজিটালাইজেশনের সঙ্গে এর নিরাপত্তায় পৃথক উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ঝুঁকি মোকাবেলায় কমিটি করার পরামর্শও দেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ মুজিব শতবর্ষকে বিদ্যুত বিভাগ সেবাবর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ বছরই দেশের সব মানুষের ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেয়া হবে। বছরটিকে বিদ্যুত বিভাগের জন্য বিশেষ গুরুত্ববহ বলে উল্লেখ করা হয়। উপদেষ্টা বলেন, গ্রাহক সেবার মান বজায় না থাকলে সরকারের উদ্যোগ ভেস্তে যাবে। এজন্য গ্রাহকসেবার মান বাড়াতে তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। অনুষ্ঠানে বিদ্যুত সচিব ড. সুলতান আহমেদ বলেন, সবার ঘরে মানসম্মত বিদ্যুত পৌঁছে দিতে প্রিপেইড মিটারের এই মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার আহ্বান জানিয়ে সচিব বলেন, গ্রাহকদের সাশ্রয়ী হতে এই স্মার্ট প্রিপেইড মিটার সহায়তা করবে। স্মার্ট মিটার স্থাপন ছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় এ্যাডভান্স মিটারিং ইনফ্রাস্টাকচার (এএমই) সিস্টেম বাস্তবায়ন করা হবে, যার মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় এক লাখ ৩১ হাজার ৩৫৩টি সিঙ্গেল ফেজ, ৮ হাজার ৯৫টি থ্রি ফেজ মিটার এবং ৮৩৯টি ডিসিইউ স্থাপন করা হবে। নেসকো বলছে এক ফেজের মিটারের খরচ ধরা হয়েছে ১০৭ কোটি ৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। প্রথম পর্বে স্মার্ট মিটার পাবে মোট নয় জেলা। প্রথমেই যেসব নেসকোর প্রশাসনিক অংশকে স্মার্ট মিটার দেয়া হচ্ছে এরা হলো রাজশাহী-১, রাজশাহী-৪, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১, চাঁপাইন-বাবগঞ্জ-২, নাটোর, পাবনা-১, পাবনা-২, বগুড়া-১, বগুড়া-২, দিনাজপুর-১, দিনাজপুর-২, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, সৈয়দপুর ও নীলফামারীর গ্রাহকরা। অন্যদের মধ্যে পিডিবির চেয়ারম্যান সাঈদ আহমেদ, নেসকোর চেয়ারম্যান এ কে এম হুমায়ুন কবীর, নেসকোর এমডি জাকিউল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। নেসকোর গ্রাহকদের মধ্যে সিরাজগঞ্জ ও বগুড়াতে প্রিপেইড মিটারে বিদ্যুত বিতরণ হচ্ছে। এখন ২০ হাজার গ্রাহক এই মিটার ব্যবহার করছে। যদিও এই মিটারগুলো সাধারণ মানের। এবার স্মার্ট প্রিপেইড মিটার দেয়া হচ্ছে। উত্তর এবং উত্তর পশ্চিমের জেলাগুলোতে বিদ্যুত বিতরণকারী নেসকোর এখন গ্রাহক সংখ্যা ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৬ জন।
×