ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পুরুষ সমাজেরও দায়িত্ব রয়েছে

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ১৬ জানুয়ারি ২০২০

পুরুষ সমাজেরও দায়িত্ব রয়েছে

একজন ধর্ষকের কাছে শিক্ষিত-অশিক্ষিত. ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী সব মেয়েই সমান। ধর্ষণ যে করে সেই শুধু দোষী নয়। ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে যারা কথা বলে, ধর্ষণের শিকার নারীকে ঘৃণা করে, একঘরে করে রাখে, নির্যাতন করে তারাও ধর্ষকের চেয়েও কোন অংশে কম নয়। ধর্ষক শারীরিক নির্যাতন করে কিন্তু সমাজ, পরিবার করে মানসিক নির্যাতন যার ফলে ধর্ষিতা আত্মহত্যার পথ অবলম্বন করে অথবা হতাশ হয়ে ভবিষ্যতের নিজের পথকে রুদ্ধ করে দেয়। শারীরিক নির্যাতনের চেয়ে মানসিক নির্যাতন সবচেয়ে বড় বেদনাদায়ক। বাসা বাড়ি, গণপরিবহন, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিসের গ-ি পেরিয়ে এবার সৌন্দর্যবর্ধনের ফুলের বাগানে, ঝোপ-ঝাড়ে ধর্ষণের শিকার হতে হলো দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থীকে। তা আবার একজন মাদকাসক্তের হাতে। এ লজ্জা রাখার জায়গা নেই। আর কতকাল নারীরা ধর্ষিত হবে? ধর্ষণকারী সমাজে আর দশটি পুরুষের মতো হলেও ধর্ষক নির্যাতনকারী, বর্বর, লম্পট, অসভ্য, নারী প্রগতিবিরোধী। শহরের ব্যস্ততম ভিআইপি সড়ক নামে খ্যাত বিমানবন্দর সড়কেও ধর্ষণকারী তিন ঘণ্টা একজন নারীর ওপর নির্যাতন করল অথচ কোন পথচারী অথবা টহলে কোন নিরাপত্তাকর্মীর নজরে এলো না। ব্যস্ততম সড়কের পাশে ফুটপাথের ঝোপে মাদকাসক্তদের যাতায়াত/অবস্থান/ধর্ষণের ঘটনা অপরাধীদের বেপরোয়া মনোভাবের চিত্র ফুটে ওঠে। যারা রাস্তার ফুটপাথ সৌন্দর্যের দায়িত্ব নিয়ে দেখ-ভাল করছেন তাদের উচিত ঝোপ-ঝাড়গুলো পরিষ্কার রাখা যাতে অপরাধী চক্র কোনভাবেই অপকর্মের স্থান হিসেবে বেছে নিতে না পারে। আর কোন নারীর যেন সর্বনাশ না হয়। নুসরাত, তনু, মিতু, রিসা, নীহার রিমা, তানিয়া নামা না জানা আর কত নারীকে ধর্ষণের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হবে অথবা গ্লানি নিয়ে সমাজে বেঁচে থাকতে হবে? যে সব পুরুষ নারীদের যৌনদাসী মনে করে তাদের বিরুদ্ধে পুরুষদেরই প্রতিবাদ করতে হবে, পুরুষদেরই ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়তে হবে, একজন পুরুষ আর একজন পুরুষের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। এ সমাজে বাস করতে হলে নারীর সঙ্গেই বসবাস করতে হবে। নারী নির্যাতন বন্ধে পুরুষদের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যে নারী যেখানেই নিগৃহীত হবে সেখানেই প্রতিবাদের ঝড় তুলতে হবে। আইনের আশ্রয় নিতে হবে। নারীকে জাগ্রত হতে হবে, সচেতন হতে হবে। প্রতিবাদে পুরুষকেও নারীর পাশে থাকতে হবে। প্রতিবাদী হলে প্রতিরোধ করা সম্ভব। সচেতনতা প্রতিটি মানুষই জানে। দরকার সদিচ্ছার। ধর্ষিতার প্রতি সমাজকে সহানুভূতিশীল ভূমিকা রাখতে হবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে যাতে কোন অপরাধী অপরাধ করতে সাহস না পায়। আমরা ধর্ষণমুক্ত সমাজ চাই, সভ্য সমাজ গড়তে চাই মুজিববর্ষে এ প্রত্যাশা রাষ্ট্র ও সমাজের সচেতন নাগরিকদের প্রতি। পঞ্চগড় থেকে
×