ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জাহিদুল আলম জয়

শুরু ছয় জাতির শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই...

প্রকাশিত: ১২:৩০, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

শুরু ছয় জাতির শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই...

নতুন বছর ২০২০ সালের শুরু থেকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক খেলাধুলার হাট বসেছে লাল-সবুজের বাংলাদেশে। উপলক্ষটা সবারই জানা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০০তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে সরকার যেসব কর্মসূচী নিয়েছে সেখানে বড় অংশ জুড় আছে খেলাধুলা। কিংবদন্তি মহানায়কের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে সরকারের এক বছরব্যাপী আয়োজনের অন্যতম প্রধান নির্মল বিনোদনের এই মাধ্যম। এর মধ্যে শীর্ষে আছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল। অপেক্ষার প্রহর শেষে আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে পর্দা উঠছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ষষ্ঠ আসরের। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে আয়োজিত আসরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ছয়টি দেশ। উদ্বোধনী ম্যাচে আজ বিকেলে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিনের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। ‘এ’ গ্রুপে এই দুই দেশের সাথে আছে এশিয়ার দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। ছয় দেশ দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। প্রতি গ্রুপের সেরা দুই দল সেমিফাইনালে খেলবে। সেখান থেকে দুটি দল খেলবে ফাইনালে। শিরোপা নির্ধারণী লড়াই হবে ২৫ জানুয়ারি। ‘বি’ গ্রুপে আছে বুরুন্ডি, সিশেলস ও মরিশাস। মজার বিষয় হচ্ছে, ‘এ’ গ্রুপের তিনটি দলই এশিয়ার আর ‘বি’ গ্রুপের তিনটি দেশই আফ্রিকার। এ কারণে প্রত্যাশিত ফাইনালে খেলতে হলে সেমিফাইনালে নিশ্চিতকরেই আফ্রিকান দলের মুখোমুখি হতে হবে জামাল, মামুনুল, রানাদের। ফিফা র‌্যাঙ্কিং ও টুর্নামেন্টের পরিসংখ্যানের বিচারে কঠিন গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। কেননা তাদের গ্রুপে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিন। প্রতিপক্ষ কঠিন হলেও তেমন প্রস্তুতি নিতে পারেনি টিম বাংলাদেশ। মাত্র সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই প্রতিপক্ষ নিয়ে কাটাছেঁড়া, কৌশল ও পরিকল্পনা সাজাতে হচ্ছে কোচ জেমি ডে’কে। টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেললেও এখন পর্যন্ত শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি লাল-সবুজদের। তাই সেমিফাইনালে খেলার প্রাথমিক লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ। ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়াই আপাতত লক্ষ্য। গ্রুপ প্রতিপক্ষ ফিলিস্তিন ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। ফিলিস্তিন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, শ্রীলঙ্কাও উন্নতি করেছে। তাই গ্রুপপর্ব পার করার প্রাথমিক লক্ষ্য স্থির করেছে স্বাগতিকরা। এ বিষয়ে জাতীয় ফুটবল দলের সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট ওয়াটকিস বলেছেন, আন্তর্জাতিক ম্যাচে কেউই সহজ প্রতিপক্ষ নয়। ফিলিস্তিন ফেবারিট, শ্রীলঙ্কাও সহজ হবে না। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ পরিকল্পনা করছি। পরের রাউন্ড নিশ্চিত করতে চাই। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে বিদেশী দলগুলোর মধ্যে সবার আগে ঢাকা পৌঁছেছে ফিলিস্তিন। সোমবার সকালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি ঢাকায় পা দিয়েই শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। বিমানবন্দরে ফিলিস্তিন দলের ম্যানেজার জাবের জারিন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। এবারও চ্যাম্পিয়ন হতে এসেছি। ফিলিস্তিন দলের খেলোয়াড়রা-কর্মকর্তাদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জাানান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্মকর্তারা। ফিলিস্তিন ছাড়াও ঢাকা এসেছে আফ্রিকান দেশ মরিশাস ও বুরুন্ডি, এশিয়ার দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। সবশেষে আফ্রিকার আরেক দেশ সিশেলস আসছে টুর্নামেন্ট শুরুর একদিন পর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে। ১৯৯৬-৯৭ সালে শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল। প্রথম আসর থেকেই জাতির জনকের নামে হওয়া আসরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন বুনতে থাকে লাল-সবুজের দেশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত হওয়া পাঁচ আসরে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। প্রতিটি আসর শেষেই হতাশা আর দীর্ঘশ্বাস সঙ্গী হয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশের। আগের পাঁচ আসরের মধ্যে ২০১৫ সালে ফাইনালে মালয়েশিয়া অনুর্ধ-২৩ দলের কাছে ৩-২ গোলে হেরে রানার্সআপ হওয়াটাই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অর্জন। ২০১৬ ও ২০১৮ সালে সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিতে হয়। এবার ষষ্ঠ আসরেও অধরা ট্রফি জয়ের মন্ত্র খুঁজছে জামাল ভুঁইয়ার দল। আন্তর্জাতিক এই আসরটি ২০১৯ সালের শেষদিকে আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। কিন্তু টুর্নামেন্টটি একমাস পিছিয়ে ২০২০ সালের ১৫ থেকে ২৫ জানুয়ারি করা হয়েছে। এর মূল কারণ আয়োজকরা টুর্নামেন্টটি করতে চেয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০০তম জন্মবার্ষিকীর সালে। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। চলতি ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। শুধু জন্মদিনটিই নয়; বছরটি স্মরণীয়ভাবে উদযাপন শুরু হয়ে গেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির ১০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। মূলত এ জন্যই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ২০১৯ সালের বদলে ২০২০ সালে হচ্ছে। আগের আসরগুলোতে সফল হতে না পারলেও এবার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। এ জন্য ফুটবলারদের নানাভাবে অনুপ্রাণিত করা হচ্ছে। বাফুফে সভাপতি ও কিংবদন্তি ফুটবলার কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সবসময়ই খোঁজ-খবর নিচ্ছেন খেলোয়াড়দের। সাফল্যের জন্য তিনি অনুপ্রাণিত করে চলেছেন জেমি ডে’র শিষ্যদের। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে তিনি জাতীয় দলের ফুটবলারদের সঙ্গে দেখা করে তাদের উৎসাহ যুগিয়েছেন। শুধু মুখের কথাতেই নয়, আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণাও দেয়া হয়েছে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে। অর্থাৎ বোনাসের ঘোষণা দিয়েছে বাফুফে। গেল ডিসেম্বরে শেষ হওয়া সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসেও ফুটবলারদের জন্য লোভনীয় বোনাস ঘোষণা করেছিল দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কিন্তু ঘোষিত সেই অর্থ (৫০ হাজার মার্কিন ডলার) নিজেদের করে নিতে পারেননি জামাল ভুঁইয়ারা। বোনাস ঘোষণার পরও সর্বশেষ এসএ গেমসে ভরাডুবি হয়েছে লাল-সবুজ দলের। তবে পেছনের ব্যর্থতা ঝেড়ে এগিয়ে যাওয়াটাই এখন লক্ষ্য। ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে বঙ্গবন্ধু কাপে নিজেদের প্রমাণ করতে চান ফুটবলাররা। তাদের এই প্রমাণের মঞ্চে আবারও রসদ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাফুফে। বাংলাদেশ যদি আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় তাহলে তাদের ১ লাখ ডলার বোনাস দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। এই ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ রানার্সআপ হলে ৫০ হাজার ডলার বোনাস পাবে। বাফুফের এই বোনাস ঘোষণাকে পজিটিভ হিসেবে দেখছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। তারমতে বাফুফের এই বোনাস ফুটবলারদের আরও ভাল খেলতে অনুপ্রেরণা যোগাবে। ২০১৮ সালে পঞ্চম বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে ফিলিস্তিন টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে তাজিকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এবারও দলটির লক্ষ্য অভিন্ন। তবে প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ হওয়ায় ছক কষে এগিয়ে যেতে চায় দলটি। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে বলেছেন, গত আসরে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে আমরা সেমিফাইনালে খেলেছি। যে কারণে ফিলিস্তিনের শক্তি সম্পর্কে আমরা জানি। এটাও জানি যে, ম্যাচটি কঠিন হবে। এ ম্যাচে ছেলেদের ভাল পরীক্ষা দিতে হবে। আমরা যদি ফিলিস্তিনকে হারাতে পারি, সেটা হবে অসাধারণ। তবে আমাদের চোখ আসলে থাকবে পরিচিত শ্রীলঙ্কার দিকে। এই ম্যাচটি জিতেই আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত হবে। এবারের আসরের অন্যতম আকর্ষণ আফ্রিকান দল। দলগুলোকে নিয়ে ইংলিশ কোচ জেমি ডে বলেছেন, আফ্রিকান দলগুলো শক্তিশালী। তারা শারীরিকভাবে খুবই শক্তিশালী। আমরা যদি সেমিফাইনালে উঠতে পারি, তাহলে আফ্রিকান একটি দল পাব। সেটা হবে আমাদের জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ। আসর শুরু হলেও কয়টি দেশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে চলছিল একের পর এক নাটকীয়তা। প্রথমে চার দেশকে নিয়ে টুর্নামেন্টের আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়ে চরম সমালোচিত হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। সমালোচনা এড়ানোর জন্য পরে জানানো হয় দল দুটি বাড়বে। তারও পরে জানানো হয়, পাঁচ দল অংশ নেবে। বিজোড় সংখ্যার দল হওয়ায় গ্রুপভিত্তিক নয়, লীগ ভিত্তিতে নাকি দলগুলো খেলবে এবং পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দেশ ফাইনালে খেলবে। অথচ গত ৪ জানুয়ারি রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে টুর্নামেন্টের গ্রুপিং ড্র অনুষ্ঠানে জানানো হয়, টুর্নামেন্ট ৬ দেশ নিয়েই আয়োজিত হবে। ড্রতে র‌্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে ৬ দলকে রাখা হয়েছিল ৩টি পটে। সেখান থেকেই লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হয় দুই গ্রুপের প্রতিদ্বন্দ্বী দলকে। ফাইনালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। প্রতিযোগিতার সব ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বেসরকারী টেলিভিশন আরটিভি। এবারের আসরে মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া থেকে কোন দেশ না খেলায় আসরের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ফলে আবারও বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছে বাফুফে। ফুটবলামোদীরা বলছেন এসএ গেমস ফুটবলে দুর্দান্ত খেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া নেপাল ও রানাসর্আপ ভুটানকে রাখা হলে এই আসরের গুরুত্ব ও আকর্ষণ বহুলাংশে বৃদ্ধি পেত। একমাত্র ফিলিস্তিন বাদে বাকি চার অতিথি দেশের ফিফা র‌্যাঙ্কিং এবং ফুটবল শক্তিমত্তা খুব একটা আহামরি কিছু নয়। এদের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও সিশেলস তো বাংলাদেশের চেয়েই র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক পিছিয়ে। ছয় দলের মধ্যে র‌্যাঙ্কিংয়ে সবার ওপরে আছে ফিলিস্তিন। তারা অবস্থান ১০৬তম। এরপর আছে বুরুন্ডি (১৫১) ও মরিশাস (১৭২)। বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৭তম। সিশেলস রয়েছে বরাবর ২০০তম স্থানে। শ্রীলঙ্কা রয়েছে সবার নিচে (২০৫)। র‌্যাঙ্কিংয়ে খুব বেশি ভাল অবস্থানে না থাকলেও ইউরোপের অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে মরিশাস। দেশটি ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র। বিশ্বব্যাপী ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে দেশটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। দেশটি দীর্ঘদিন শাসন করেছে হল্যান্ড, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড। স্থানীয় ফুটবলারদের পাশাপাশি ফরাসী বংশোদ্ভূতরাও রয়েছেন জাতীয় দলে। স্থানীয় বিভিন্ন দল ছাড়াও ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, গ্রিস ও রোমানিয়ার বিভিন্ন ক্লাবে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে দলটির খেলোয়াড়দের। আদেল ল্যানগু মরিশাসের মিডফিল্ডার। স্বদেশী ক্লাব সার্কেল ডি জোয়াকিমে সিনিয়র লেভেলের ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০১৪ সালে। পরের বছর জায়গা করে নেন জাতীয় দলে। চার বছর কিউরপাইপ শহরের ক্লাব সার্কেল ডি জোয়াকিমের হয়ে খেলা চালিয়ে যান। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো সুযোগ আসে ফ্রান্সের লীগ টুয়ের দল প্যারিস এফসির হয়ে খেলার। একই বছর স্প্যানিশ লা লিগার দল ডিপোর্টিভো আলাভেসের হয়ে নিজের নাম লেখান আদেল ল্যানগু। মরিশাস অনুর্ধ-১৭ দলে ২০০৮ সালে খেলেন লিনসডে রোজ। প্রতিভাবান এই সেন্টারব্যাক ফ্রান্সের জার্সিতে অনুর্ধ-১৮, ১৯ ও ২১ দলে খেলেছেন। অপেক্ষায় ছিলেন ফ্রান্সের জাতীয় দলে অভিষেকের। যদিও শেষ পর্যন্ত ফিরেছেন স্বদেশে। ২০১৮ সালে মরিশাসের হয়ে খেলতে নামেন রোজ। এছাড়া ক্লাব পর্যায়ে লেভাল, ভ্যালেনসিয়েনেন্স, অলিম্পিক লিও, লরিয়েন্ত ও বাস্তিয়ার মতো ফ্রেঞ্চ দলের হয়ে খেলেছেন রোজ। সম্প্রতি গ্রীক দল আরিসের সঙ্গে সংযুক্ত হন ২৭ বছর বয়সী রোজ। ২০০৪ সাল থেকে কেভিন ব্রু খেলেছেন ফ্রান্সের রেনে, দিজো, বোলোগনে, ইস্ত্রেসের মতো দলে। বুলগেরিয়ার লেভেসকি সোফিয়ায় চার বছর মাঠ মাতিয়েছেন এই মিডফিল্ডার। ইংলিশ ক্লাব ইপসউইচ টাউনে ২০১৪-২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করেছেন। সাইপ্রাসের এ্যাপোলেন লিমাসলের পর বর্তমানে রোমানিয়ান দল ডায়নামো বুকুয়েরেস্টির হয়ে খেলছেন কেভিন। ২০০৭ সালে ফ্রান্স অনুর্ধ-১৯ দলের হয়ে খেললেও ২০১১ সালে নাম লেখান মরিশাস জাতীয় দলে। কিলিয়ান ইয়ানার্ড বেলজিয়ামে জন্ম হলেও বর্তমানে মরিশাসের হয়ে খেলছেন। বেলজিয়ান ক্লাব আন্দ্রের লেচট, আর এ ই সি মনসের পর বর্তমানে আর আর সি ওয়াটারলোতে খেলছেন এই ডিফেন্ডার। ডেমিয়েন বালিসন ঘরোয়া দল সার্কেল ডি জোয়াকিমের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু। বর্তমানে ফ্রেঞ্চ দল থনন ইভাইনের জার্সিতে খেলছেন এই ডিফেন্ডার। ২০১৮ সালের ফিফা র‌্যাঙ্কিং নিচের দিকে নামতে শুরু করে মরিশাস। সে সময় দলের ব্রাজিলিয়ান কোচ ফ্রান্সিস্কো ফ্লিহোকে ছাঁটাই করা হয়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটের সাবেক এই সহকারী কোচের বদলে দলের হাল ধরেন আকবর প্যাটেল। মরিশাসে জন্ম নেয়া এই কোচ এর আগেও দু’বার জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করেছেন।
×