ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অসাধু মুদ্রাকরদের সামাল দেয়ার চেষ্টা

মাধ্যমিকসহ অন্যান্য স্তরের বই ছাপতেও অনলাইনে দরপত্র

প্রকাশিত: ১২:১৩, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

মাধ্যমিকসহ অন্যান্য স্তরের বই ছাপতেও অনলাইনে দরপত্র

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অসাধু মুদ্রাকরদের তৎপরতা সামাল দিতে প্রাথমিকের মতো মাধ্যমিকসহ অন্যান্য স্তরের পাঠ্যবই ছাপতে ‘ই-জিপি’ (ই-গবর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) বা অনলাইনে দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ২০২১ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ কার্যক্রম ‘ই-জিপি’ প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রথমবারের মতো এই দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। শিক্ষা সচিব মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ‘পাঠ্যপুস্তক’ মুদ্রণে ‘ই-জিপি’ আহ্বানের বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এনসিটিবিকে। সভা শেষে এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তা সরকারের এ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তারা একই সঙ্গে বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর নির্দেশনা অনুযায়ী ‘ই-জিপি’ টেন্ডার আহ্বানের বিষয়ে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে এনসিটিবি। এনসিটিবির সদস্য (টেক্সট) অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেছেন, এখন আর কেউ সিন্ডিকেট করতে পারবে না। কারণ দরপত্র প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে। মূলত যাদের অনেক ওয়েব মেশিন আছে এবং একটি মাত্র ওয়েব মেশিন আছে, তারাও সমান সুযোগ পাবে। অর্থাৎ সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাবে। কাজেও অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। এনসিটিবি কর্মকর্তারা বলছেন, অসাধু মুদ্রাকরদের টেন্ডার বাণিজ্যের লাগাম টানতে ২০১১ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের পাঠ্যবই মুদ্রণে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে আসছে সরকার। এতে সুফলও মিলছে। বিদেশী প্রতিষ্ঠান খুব একটা কাজ না পেলেও দেশের অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট অনেকটাই দুর্বল হয়েছে। সরকারের মোটা অঙ্কের টাকাও সাশ্রয় হচ্ছে। স্থানীয় মুদ্রণ শিল্পের সম্প্রসারণও ঘটছে। এই অভিজ্ঞতা থেকেই মাধ্যমিক ও অন্যান্য স্তরের পাঠ্যবই ছাপতে ‘ই-জিপি’ দরপত্র প্রক্রিয়া চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, ২০২০ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ৩৫ কোটি পাঠ্যবই মুদ্রণ করা হয়েছে ৩২০টি লটে। আর ই-জিপি দরপত্রে ওই লট কমিয়ে ২৫০টি নির্ধারণ করা হয়েছে। মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে লট কমানো হয়েছে। এতে করে যাদের ‘ওয়েব মেশিন’ রয়েছেÑ এমন প্রায় সব ব্যবসায়ীই কম-বেশি পাঠ্যপুস্তক ছাপার কাজ পেতে পারেন। এদিকে ই-জিপি টেন্ডারের বিষয়ে ইতোমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘সেন্টাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট’ (সিপিটিইউ) থেকে এনসিটিবির ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবি বিতরণ নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক জিয়াউল হক। তিনি জানান, ই-জিপি টেন্ডারের বিষয়ে শতভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এনসিটিবি। এমনকি পেশাধার প্রিন্টার্সদেরও (মুদ্রাকর) এনসিটিবিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। গত ১ জানুয়ারি থেকে চলতি ২০২০ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক স্তর থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫৪ কপি বই বিতরণ করেছে এনসিটিবি।
×