ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উন্নয়নের পক্ষেই গেল চট্টগ্রাম উপনির্বাচনের রায়

প্রকাশিত: ১১:২৮, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

উন্নয়নের পক্ষেই গেল চট্টগ্রাম উপনির্বাচনের রায়

হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে বড় ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদের বিজয়ে আশায় বুক বেঁধেছে বোয়ালখালীবাসী। কেননা প্রার্থীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল শতবর্ষ প্রাচীন কালুরঘাট সেতুর জায়গায় একটি নতুন সেতু, যা বোয়ালখালীকে যুক্ত করবে চট্টগ্রাম মহানগরের সঙ্গে। প্রয়াত সংসদ সদস্য মইনউদ্দিন খান বাদলের এই স্বপ্নের সেতু বাস্তবায়িত হবে মোছলেম উদ্দিনের হাত দিয়ে, এমনই আশা ওপারের অধিবাসীদের। ভোটে বিজয়ের পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় নতুন এমপি সেই অঙ্গীকারই পুনর্ব্যক্ত করেছেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ একজন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিক। কিন্তু নানা সমীকরণে এতদিন পর্যন্ত তিনি নিজের আসন চান্দগাঁও-বোয়ালখালীতে দলের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পাননি। জাসদ নেতা মইনউদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হলে তিনি নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন লাভ করেন। এ আসনে বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। ভোটের প্রচারে উভয়েরই প্রধান অঙ্গীকার ছিল কালুরঘাট সেতু। কেননা, কালুরঘাটের পুরনো রেল কাম সড়ক সেতুটি শতবছরের পুরনো। যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই একটি সেতু নগরের সঙ্গে বোয়ালখালীর মেলবন্ধন সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু দুই প্রার্থীর অঙ্গীকারের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর আশ^াসকে ভোটারদের কাছে বেশি বিশ^াসযোগ্য মনে হয়েছে। কারণ, মোছলেম উদ্দিন আহমদ নিজেও বোয়ালখালীর বাসিন্দা। তাছাড়া তিনি সরকারদলীয় প্রার্থী। অপরদিকে, বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ানের বাড়ি কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায়। আর তার দলও এখন ক্ষমতার বাইরে। চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের উপ-নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রে সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রভাব তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা গেছে। ভোট পড়ার হার কম। তবে একেবারে শতভাগ প্রশ্নহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও ভোটের ফলে হেরফের হতো না বলেই মনে করে চান্দগাঁও- বোয়ালখালীর জনগণ। কেননা, উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারী আনুকূল্য পেতে প্রয়োজন হয় সরকারদলীয় এমপির। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদের প্রচারে ছিল এলাকার উন্নয়ন। তিনি কালুরঘাট সেতুর পাশাপাশি সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার স্বপ্নও দেখিয়েছেন। অপরদিকে, বিএনপির প্রার্থীর প্রচারে উন্নয়নের পাশাপাশি ছিল বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। কিন্তু এই একটিমাত্র আসনে জয় দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় পরিবর্তন আসবে না। গণতন্ত্র কতটা পুনরুদ্ধার হতে পারে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। এমপি বিরোধীদলের হলে উন্নয়ন বরাদ্দ কেমন মিলবে, তা নিয়েও বেশ আলোচনা ছিল ভোটারদের মধ্যে। নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ থাকলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হওয়াকে স্বপ্নের কালুরঘাট সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বড় একধাপ অগ্রগতি হিসাবে দেখছে নির্বাচনী এলাকার মানুষ। কালুরঘাট সেতু এ আসনের মানুষদের প্রাণের দাবি। বোয়ালখালী চট্টগ্রাম শহরের একেবারেই কাছে, যা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে একটি সেতু না থাকায়। সেতুটি হয়ে গেলে নদীর ওপাড়েও হয়ে যাবে নগরায়ন।
×