ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এ বছরই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ করবে আরইবি

প্রকাশিত: ১১:২৭, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

এ বছরই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ করবে আরইবি

মামুন রশিদ ॥ চলতি বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। দেশের সর্বাধিক সংখ্যক গ্রাহকের এই বিতরণ প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যুত বিতরণে অভিযোগও সবচেয়ে বেশি। অভিযোগ রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন দূরের কথা আরইবির কাছে স্বাভাবিক সরবরাহ মেলাও দুস্কর। কিন্তু এবার সেই আরইবিই ঘোষণা দিয়েছে গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করবে তারা। নিরবচ্ছিন্ন অর্থ হচ্ছে দিন রাতের কোন সময়ই গ্রাহক বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হবেন না। কোন কারণে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় বিদ্যুত না থাকাকেই লোডশেডিং বলা হয়। আরইবির এই উদ্যোগের সফল বাস্তবায়ন হলে দেশে গ্রামের মানুষই প্রথম নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুত সুবিধা পাবেন। এখনও পর্যন্ত বিদ্যুত বিতরণে গ্রামের তুলনায় শহরের অবস্থা অনেক ভাল। তবে কোন শহুরে বিদ্যুত বিতরণকারী কোম্পানি এখনও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের ঘোষণা দিতে সাহস দেখায়নি। সরকার ’১২ সাল থেকেই বলে আসছে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের তারা উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে গত সাত বছরে কাগজে কলমে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হলেও বাস্তবে মানুষ নানা কারণে বিদ্যুতবিহীন সময় কাটাচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের ব্যর্থতার জন্য বিতরণ ও সঞ্চালন কোম্পানি একে অপরের ওপর দায় চাপিয়েছে বারবার। তবে উৎপাদনকারীরা বলছে চাহিদার প্রায় দ্বিগুণ উৎপাদন ক্ষমতায় বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা কঠিন কোন বিষয় নয়। সঙ্গতকারণেই কেউ যদি নিরবচ্ছিন্ন দিতে না পারে তার দায় উৎপাদনকারীদের ওপর চাপানো যাবে না। এখন ২০ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিপরীতে গ্রীষ্মেই সর্বোচ্চ চাহিদা তৈরি হয় ১৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের। আর শীতে চাহিদা আরও অন্তত তিন থেকে চার হাজার মেগাওয়াট কমে যায়। উন্নত দেশগুলোতেও চাহিদার অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ উৎপাদন ক্ষমতা বেশি থাকে। দেশে যা ইতোমধ্যে রয়েছে। এরপরও নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুত সুবিধা নিশ্চিত করতে বিদ্যুত বিভাগের উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিদ্যুত বিভাগ এখন কেবলমাত্র শতভাগ বিদ্যুতায়নের দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে। কিন্তু সংযোগ পাওয়ার পর কোন ভোক্তা মানসম্মত বিদ্যুত পাচ্ছেন কি না সেদিকে নজর দিচ্ছে না। আরইবি সূত্র বলছে প্রতিটি পল্লী বিদ্যুত সমিতিকে প্রত্যেকটি ফিডারের কি দুর্বলতা রয়েছে তা চিহ্নিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরপর ফিডারগুলোর দুর্বলতা দূর করা হবে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ কিভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব তা খতিয়ে দেখতে দু’জন পরামর্শক নিয়োগ করে আরইবি। সম্প্রতি ওই দুই পরামর্শক নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহে করণীয় নির্ধারণ করে দিয়েছে। আরইবি বলছে এখন ওই পরামর্শ বাস্তবায়ন করা হবে। আরইবির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা এতদিন বিদ্যুত সুবিধা সম্প্রসারণ করেছি। আগামী বছরের মধ্যে আরইবি এলাকায় সব মানুষ বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আসবে। আমরা চেষ্টা করছি নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের। আশা করছি মানুষ বিদ্যুত পাচ্ছেন না এখন আর কেউ সে অভিযোগ করতে পারবেন না।
×