ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হাইকোর্টে রিট খারিজ ॥ ৩০ জানুয়ারি ভোটে বাধা নেই

প্রকাশিত: ১১:২১, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

হাইকোর্টে রিট খারিজ ॥ ৩০ জানুয়ারি ভোটে বাধা নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরস্বতী পূজার কারণে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পেছানোর রিট খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে ৩০ জানুয়ারি ভোট হতে কোন বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়। আদালতে রিটকারী আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ শুনানি করেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম। এ সময় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত ও সহসভাপতি সুব্রত চৌধুরী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রিটকারী আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ বলেছেন , হাইকোর্টের এই আদেশে আমরা সংক্ষুব্ধ। আমরা আপীল বিভাগে যাব। তার রিট আবেদনে বলা হয়েছিল সংবিধানের ৮, ১২, ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিককে ধর্ম পালনের যে মৌলিক অধিকার দেয়া হয়েছে, নির্বাচনের ঘোষিত তারিখ সংবিধানের এই অনুচ্ছেদগুলোর সঙ্গে ‘সাংঘর্ষিক’। আজ বুধবার সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী ও রানাদাশ গুপ্তের সঙ্গে বৈঠক করে কবে আপীলে যাওয়া হবে তার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এদিকে সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ও সর্বশেষ হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত হতাশাগ্রস্ত করেছে। আমরা হতাশ । সবাইকে আহত করল। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত বছর ডিসেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির যে ক্যালেন্ডার আছে সেখানে সরস্বতী পূজার ছুটি ২৯ জানুয়ারি বলা হয়েছে। সুপ্রীমকোর্টের ক্যালেন্ডারেও একই কথা বলা হয়েছে। ছুটির তালিকা দেখেই ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন আর ভোটের তারিখ পেছানোর সুযোগ নেই। হাইকোর্টের আদেশের ফলে ৩০ জানুয়ারি নির্বাচন হতে বাধা নেই। ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি সরস্বতী পূজা থাকায় ভোটের তারিখ পরিবর্তনের জন্য আদালতে এই রিট আবেদন করেন আইনজীবী অশোক কুমার ঘোষ। তার যুক্তি ছিল, ইসির ঘোষিত নির্বাচনের তারিখ সংবিধানে বর্ণিত প্রত্যেক নাগরিকের ধর্ম পালনের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সঙ্গে ‘সাংঘর্ষিক’। আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়ে আদালত আদেশে বলেছে, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২৯ জানুয়ারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে। সুপ্রীমকোর্টের ক্যালেন্ডারেও ২৯ তারিখ ছুটির কথা বলা আছে। আর নির্বাচন কমিশন ৩০ তারিখ ভোটের তারিখ ঘোষণা করেছে। তার দু’দিন পর এসএসসি পরীক্ষা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভোটের তারিখ পেছানোর কোন সুযোগ নেই, তাই আবেদনটি সরাসরি খারিজ করা হল।’ রিট আবেদনের শুনানিতে এ্যাডভোকেট অশোক কুমার ঘোষ আদালতে বলেন, ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আর সরস্বতী পূজা শুরু হয় মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথি থেকে। তিথি শেষ হওয়ার আগে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া যায় না। পঞ্জিকা অনুযায়ী পঞ্চমী তিথি শুরু হবে ২৯ জানুয়ারি সকাল ৯টা ১০ মিনিট থেকে। শেষ হবে ৩০ জানুয়ারি বেলা ১১টায়। ঢাকেশ্বরী মঠ, মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে পূজার নিমন্ত্রণপত্র অনুযায়ী ২৯ জানুয়ারি প্রতীমা স্থাপন করা হবে। বাণী-অর্চনা ৩০ জানুয়ারি। অর্থাৎ পূজার মূল পর্ব ৩০ জানুয়ারি। তাই সিটি ভোটের তারিখ পরিবর্তন চেয়েছি। তাছাড়া গত ১০ জানুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সিটি ভোটের তারিখ পরিবর্তন করতে ইসিতে চিঠিও দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন , গত বছর দুর্গাপূজা চলার সময় রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচনের জন্য ৫ অক্টোবর তারিখ দেয়া হলে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ আপত্তি জানিয়েছিল, কিন্তু নির্বাচন কমিশন কর্ণপাত করেনি। সংবিধানের ৮ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে, ১২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়নের কথা।
×