ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সাঘাটার প্রভাবশালীদের দখলে ৯ বিল

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

সাঘাটার প্রভাবশালীদের দখলে ৯ বিল

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ১৪ জানুয়ারি ॥ সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের বিলবস্তার গ্রুপ হিসেবে পরিচিত বিলবস্তার বিল ও বারকুরা বিলের জলার পরিমাণ ৭ একর এবং ঘুড়িদহ ইউনিয়নের চেরাগীদহ, বিষ পুকুর, গলাকাটা, মাদারদহ, ঝাড়াবর্ষা, ঘুড়িদহ, গাউসাদহসহ এই ৭ বিল ১৪ একর জলাশয় মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে প্রভাবশালীরা জবর দখল করে নিয়েছে। ফলে ওই এলাকার ভূমিহীন মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিভুক্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় ২শ’ ৫০ প্রকৃত মৎস্যজীবী পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। উল্লেখ্য, সরকারের ‘জাল যার- জলা তার’ নীতি অনুসারে এই সমস্ত বিল জলাশয় সরকারের বন্দোবস্ত নিয়ে মৎসজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। কিন্তু এলাকার প্রভাবশালী আমজাদ কাজী, খোরশেদ আলমসহ আরও কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাদের সহযোগীরা ভুয়া মৎস্যজীবীদের নামে বন্দোবস্ত নিয়ে নিজেরাই জবর দখল নিয়ে মাছ চাষ করে আসছে। এছাড়া মৎস্যজীবী বাদল চন্দ্র দাস, খুশিরাম দাস ও মানিক চন্দ্র দাসের নামে বিলগুলো বন্দোবস্ত দেয়া হলেও তারা বাধ্য হয়ে প্রভাবশালী হাবিবুর রহমান ও তার সহযোগীদের কাছে বিক্রি করে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৎস্যজীবীদের অভিযোগে জানা গেছে, তারা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মৎস্যজীবী সেজে সমিতির কোন নির্বাচন না করেই মৎস্যজীবীর নেতা হিসেবে ওই সমস্ত জলাশয় ডেকে নিয়ে প্রভাবশালীদের কাছে বিক্রি করে দেন। সরজমিনে জানা যায়, ঘুড়িদহ ইউনিয়নের সাবেক মেম্বর ও মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য সুধন্য চন্দ্র দাস এবং ঝাড়াবর্ষা ও ঘুড়িদহ গ্রামের ভূমিহীন মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মালতি রানী, সাঘাটা উপজেলা সমিতির সহ-সভাপতি সুমিত্রা রানী, ঝাড়াবর্ষা গ্রাম কমিটির সভাপতি কদমবালা, সদস্য নলিতা রানী দাস, লংকেরশ্বর দাস, মানিক চন্দ্র দাস, অমূল্য চন্দ্র দাস, ভুট্টারাম দাসসহ অন্যরা তাদের করুণ অবস্থা তুলে ধরেন এবং এর প্রতিকার দাবি করেন। তারা জানান, প্রভাবশালীদের দাপটে উল্লিখিত জলাশয়গুলোতে মাছ ধরতে না পারায় তারা এখন পাইকারদের কাছ থেকে মাছ কিনে নিয়ে এসে বাজারে বিক্রি করে অর্ধাহার-অনাহারে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের দাবি এতদঞ্চলের ভূমিহীন মৎস্যজীবী সমিতির প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মধ্যে জলাশয়গুলো বন্দোবস্ত দেয়া হোক। তদুপরি জলমহাল না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র মৎস্যজীবীদের সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করা এবং প্রভাবশালীদের হুমকি মোকাবেলায় সংখ্যালঘু মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বাংলাদেশ সরকারের ভূমি আপীল বোর্ডের ধারা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
×