ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি মোকাবেলায় ক্লিন ইমেজের আমাদের ২ মেয়র প্রার্থীই যথেষ্ট ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১১:০৭, ১৩ জানুয়ারি ২০২০

 বিএনপি মোকাবেলায় ক্লিন ইমেজের  আমাদের ২ মেয়র প্রার্থীই যথেষ্ট ॥  কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপিকে মোকাবেলা করতে আওয়ামী লীগের ক্লিন ইমেজের দুই মেয়র প্রার্থীই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের প্রয়োজন হবে না। ঢাকা সিটি নির্বাচনে বিএনপিকে মোকাবেলার জন্য আওয়ামী লীগের ক্লিন ইমেজের দুই মেয়র প্রার্থীই যথেষ্ট। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী আচরণবিধি যেন লঙ্ঘন না হয় সেজন্য মন্ত্রী-এমপিদের সতর্ক হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। রবিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানম-ির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর সভাশেষে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। মন্ত্রিত্ব ও এমপিত্ব ছেড়ে নির্বাচনের প্রচারে নামতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের আহ্বানের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যতক্ষণ থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার বিষয় এসেছে, আমি একবারও কী কোন আচরণবিধি লঙ্ঘনের মতো কাজ করেছি? কোন সভা-সমাবেশে অংশ নিয়েছি? তাহলে মির্জা ফখরুল কেন এ অবান্তর প্রশ্নটি করতে গেলেন? মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশে করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাকে আমি শুধু বলব, আপনার চ্যালেঞ্জ করা লাগবে না। আপনি নিজে এমপি হয়ে পদত্যাগ করে একটি নাটক করেছেন। এই নাটকে আবার আরেকজন অংশ নিয়েছেন। এখানে চ্যালেঞ্জের কোন বিষয় নয়। আপনি যদি চ্যালেঞ্জ করেন, তাহলে আমি বলব, আমাদের মন্ত্রী-এমপিদের প্রয়োজন হবে না। আমাদের দুই ক্লিন ইমেজ ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মেয়র পদপ্রার্থীই যথেষ্ট। এর জন্য আমরা মন্ত্রী আর এমপিদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রয়োজন নেই। ইসির নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক হিসেবে আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় অন্য কাউকে দায়িত্ব দেবেন কি না এ প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনী প্রচারের বাইরেও দলের অনেক কাজ আছে। তাঁরা সেটাই করবেন। আর নির্বাচন পরিচালনার বিষয়টি তাঁরা ঘরোয়াভাবে করবেন। নির্বাচনী প্রচারে তারা অংশ নেবেন না, এটি দলীয় সিদ্ধান্ত। আচরণবিধি অনুযায়ী ওই দুই প্রবীণ নেতা টিম লিডার হিসেবেও থাকতে পারবেন কি-না প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, আমরা আমাদের দলীয় কমিটি তো করতে পারি। তারা তো ক্যাম্পেনে থাকবেন না। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী রেখে ‘মুজিববর্ষ’ উদ্যাপন জাতির মন জয় করতে পারবে না- মির্জা ফখরুলের এ বক্তব্যের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ভুয়া জন্মদিবসে মির্জা ফখরুলরা কেক কাটলে কী জনগণের মন জয় করা যাবে? তিনি জানান, আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে গঠিত আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের নেতারা ১৮ জানুয়ারি টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে তাঁরা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন, সেখানে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হবে। এরপর দলের যৌথসভায় অংশ নেবেন তাঁরা। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গত ৩ জানুয়ারি এই কর্মসূচী স্থগিত করা হয়েছিল। নতুন কর্মসূচী অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি সকাল সাতটায় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টার থেকে তাঁরা বাসে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন। কর্মসূচী শেষে ওদিনই ঢাকায় ফিরে আসবেন। এছাড়া দেশের শীতপ্রবণ এলাকায় সরকারী ও দলীয় পর্যায়ে এ পর্যন্ত ৪৫ লাখ শীতবস্ত্র ও নগদ তিন কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ৭ মার্চের মধ্যে পুনর্গঠন এর আগে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে দলের সম্পাদকম-লীর সভা হয়। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের আগে শুরু হওয়া জেলা সম্মেলনের অসমাপ্ত কাজ আগামী ৭ মার্চের আগে শেষ করার কথা জানান কাদের। তিনি বলেন, যেসব জেলা মেয়াদোত্তীর্ণ আছে সেগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। আমাদের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাজ বণ্টন করে দেয়া হয়েছে। মুজিববর্ষ শুরু হওয়ার আগেই অর্থাৎ ১৭ মার্চের আগে ও ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আছে, এর আগে যতটা সম্ভব অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে নেত্রীর নির্দেশ পেয়েছি। নির্দেশ মোতাবেক সম্পাদকম-লীকে অবহিত করেছি, যতদ্রুত সম্ভব তারা কর্মকা- পরিচালনা করবেন। সভায় আগামী ৬ মার্চের মধ্যে সারাদেশে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা সম্মেলনের আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। এরমধ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা ও মহানগর নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সম্মেলনের দিন-ক্ষণ চূড়ান্ত করে আমাদের জানাবেন। সভাটি পরে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, সফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও সাখাওয়াত হোসেন, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খানম, আইন সম্পাদক এ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, মহিলা সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মেয়র খোকন আ’লীগের সদস্য মনোনীত ঢাকা দক্ষিণ সিটির বর্তমান মেয়র ও আসন্ন মেয়র নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত সাঈদ খোকনকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য করা হয়েছে। গত ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক জাতীয় কাউন্সিলের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মনোনয়ন দেন।
×