ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খেলবেন আজ মাশরাফি?

প্রকাশিত: ০৯:৫১, ১৩ জানুয়ারি ২০২০

 খেলবেন আজ মাশরাফি?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শনিবার ছিল বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) লীগপর্বের শেষদিন। শেষ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি হয় মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বাধীন ঢাকা প্লাটুন। এই ম্যাচেই ঘটেছে বিপত্তি। অফস্পিনার মেহেদী হাসানের করা একাদশ ওভারে সপাটে ব্যাট চালিয়েছিলেন খুলনার বিধ্বংসী দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো। সেই বলটি এক্সট্রা কাভারে থাকা মাশরাফি ঝাঁপিয়ে ক্যাচ ধরতে গিয়ে হাতে আঘাত পান। মাঠ ছাড়ার পর ফেটে যাওয়া বাঁ হাতের তালুতে ১৪টি সেলাই দিতে হয়েছে। কিন্তু এরপরও সোমবার এলিমিনেটর ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে খেলতে চান মাশরাফি। কিন্তু চিকিৎসকদের কথা অনুসারে এমন একটি ইনজুরি কাটিয়ে উঠতে অন্তত ৭ দিন সময় লাগে এবং ৩ দিন পর্যন্ত কোনকিছুই না করার কড়া নির্দেশনাও থাকে। তবে মাশরাফি নিজে যেমন খেলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তেমনি ঢাকার ম্যানেজার আহসানউল্লাহ হাসানও রবিবার দাবি করলেন লড়াকু মাশরাফির ওপর খেলার সিদ্ধান্তটি ছেড়ে দিয়েছেন তারা। শেষ পর্যন্ত যদি খেলেন মাশরাফি, তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানকেই হার মানাবেন তিনি এবং এই ঝুঁকিটি তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে পুরোপুরি শেষ করে দিতে পারে আরেকটি আঘাত পেয়ে গেলে। সেই দায়ভার কে নেবে? এবার বঙ্গবন্ধু বিপিএলে দেশের শীর্ষ ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার শেষে দল পেয়েছেন মাশরাফি। দীর্ঘদিন ক্রিকেটের বাইরে থাকা এবং বর্তমানে সংসদ সদস্য হিসেবে ব্যস্ততার জন্যই হয়তো তাকে নিতে দলগুলো দ্বিধায় ভুগেছে। শেষ পর্যন্ত ঢাকা প্লাটুনের অধিনায়ক হিসেবেই এই বিপিএলে খেলছেন মাশরাফি। কিন্তু মাঠের পারফর্মেন্সে তেমন সুবিধা করতে পারেননি এবার। ১২ ম্যাচ খেলে মাত্র ৮ উইকেট শিকার করতে পেরেছেন। ৩৬.৮৭ গড় এবং ৭.৫৬ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন ৩৯ ওভার। তার নেতৃত্বে দল এবার শীর্ষ দুই অবস্থানে থাকতে পারেনি লীগপর্ব শেষে। চতুর্থ অবস্থানে থেকে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে তারা। এবার এলিমিনেটর ম্যাচ খেলতে হবে আজ চট্টগ্রামের বিপক্ষে। হারলেই বিদায় নিতে হবে, আর জিতলে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলার সুযোগ। তখন ফাইনালে ওঠার দ্বারটাও উন্মুক্ত হয়ে যাবে। তাই আজ খেলতে মুখিয়ে আছেন মাশরাফি। শনিবার লীগপর্বের শেষ ম্যাচে মেহেদীর করা ১১তম ওভারে রুশোর সপাটে খেলা বলটি ক্যাচ নিতে গিয়ে বাঁ হাত ফেটে যায় তার। রক্তাক্ত হাত নিয়েই মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়েছে তাকে। পরে তার বাঁ হাতের তালুতে দিতে হয়েছে ১৪টি সেলাই। এ বিষয়ে ম্যাচশেষে ঢাকার ওপেনার এনামুল হক বিজয় বলেন, ‘সম্ভবত ১০টি সেলাই দিতে হয়েছে ভাইয়ের হাতে। এতগুলো সেলাই নিয়ে খেলা কঠিন।’ পরে জানা গেছে ১৪টি সেলাই লেগেছে মাশরাফির। কিন্তু সেলাই করার সময়ই তিনি নিজে ঘোষণা দিয়েছেন, ‘পরবর্তী ম্যাচটা খেলব আমি।’ কিন্তু চিকিৎসকরা টানা ৩ দিন বাঁ হাতে কিছু করতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। আর ৭ দিন লাগবেই এমন ইনজুরি কিছুটা কাটিয়ে ওঠার জন্য। তার বিষয়ে দলের ম্যানেজার আহসানউল্লাহ বলেন, ‘তার (মাশরাফি) পরবর্তী ম্যাচে খেলা অনিশ্চিত বলা চলে, কারণ হাতের তালুতে ১৪টি সেলাই পড়েছে। কিন্তু সে এখনও আশা ছাড়ছে না। ম্যাচে ফিরতে সে শেষ চেষ্টা হলেও করবে। যেহেতু তার ডানহাতে চোট লাগেনি, তাই সে খেলতে মুখিয়ে আছে। কিন্তু আমরা মাশরাফির এই অবস্থা নিয়ে চিন্তিত। তবে ১৩ জানুয়ারির (আজ) এলিমিনেটর ম্যাচে তার খেলার সম্ভাবনা খুবই কম। জানেনই তো মাশরাফি একজন লড়াকু মানুষ। এখন বিষয়টি তার ওপর ছেড়ে দিয়েছি।’ চোট বাঁ হাতে হওয়ার কারণেই খেলার জন্য উন্মুখ মাশরাফি। কিন্তু সেটি হবে বিপজ্জনক, বিসিবি’র চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ‘সেলাই পড়েছে তাই সাতদিন সময় নিতেই হয়। অনেক সময় খেলা যায়, গুরুত্বপূর্ণ খেলা থাকলে আমরা ব্যবস্থা নিই। সেরে উঠতে সাতদিনের বেশি লাগে। কিন্তু আমরা তো চাইব সে আগামী তিনদিন যেন কিছু না করুক। তারপরও যদি বলে খেলব, খেলার ব্যবস্থা করে দেব।’
×