ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় নিভৃত শিল্পী অন্বেষণের উদ্যোগ ‘মেঠোসুর’

প্রকাশিত: ০৮:৫৬, ১৩ জানুয়ারি ২০২০

 বগুড়ায় নিভৃত শিল্পী অন্বেষণের  উদ্যোগ ‘মেঠোসুর’

সমুদ্র হক ॥ মঞ্চে শিল্পীর কণ্ঠে যখন লালনের কথা ‘আপন ঘরের খরব নে...’ সুর ওঠে দর্শক শ্রোতাদের মনে ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়- আমরা কী নিজেদের ঘরের খবর রাখি! বাংলার মাঠে প্রান্তরে কত প্রতিভা লুকিয়ে আছে, কত প্রতিভা অসময়ে ঝরে পড়ছে। তাদের সুযোগ করে দিতে বগুড়ায় এই প্রথম ‘মেঠোসুর’ সঙ্গীত শিল্পী অন্বেষণ শুরু হয়েছে। উদ্যোগ নিয়েছে ড. এনামুল হক আর্ট এ্যান্ড কালচারাল একাডেমি। বরেণ্য ব্যক্তিত্ব জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক ড. এনামুল হক লোকজ সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করছেন দীর্ঘদিন ধরে। মাঠের শিল্পীর খোঁজে বগুড়ায় এলে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন বিশিষ্ট নাট্যজন গ্রাম থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না। তার সাংগঠনিক দক্ষতায় বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেয় বগুড়া টিএমএসএস। বগুড়া নগরী থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে নদী তীরে গ্রামীণ পরিবেশে গড়ে তোলা টিএমএসএস বিনোদন পার্কে স্থাপিত মঞ্চে মেঠো সুরের অন্বেষন শুরু হয় গতবছর। একাডেমির কিউরেটর নজরুল ইসলাম বলেন, দোদুল্যমানতা ছিল। শিল্পীরা কি অংশগ্রহণ করবে! আশাও ছিল। মম ইন পাঁচ তারকা হোটেল থেকে বিনোদন পার্ক পর্যন্ত সকাল থেকে রাত ছোট যানবাহন চলাচল করে। দেশের ৪২ জেলার ৫৮৩ জন প্রতিযোগী নাম রেজিস্ট্রেশন করে। কোন ধরনের ফি ধার্য হয়নি। যারা দূর থেকে এসেছিলেন তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়। এমনটি জানালেন প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইসলাম। শিল্পী অন্বেষণের পালা শেষ পর্যায়ে। আর ২২ জন অংশ নেবে। প্রতি শুক্রবার বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট সংখ্যার শিল্পী অংশগ্রহণ করে। তাদের আগেই জানিয়ে দেয়া হয়। মঞ্চে বিচারক থাকেন তিনজন। প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন মণিকা রানী ঘোষ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সঙ্গীতে অনার্স ও মাস্টার্স। নিজেও শিল্পী। সিলেকশনে নিয়ম মানা হয়। যেমন একজন প্রতিযোগী লোকজ গান পরিবশেন করলে একজন বিচারক আধুনিক গান শুনতে চান। শিল্পী পুরানো দিনের গান ‘যার ছায়া পড়ছে মনের আয়নাতে...’ সুর তুললে অনেক মধ্য বয়সী তারুণ্যের দিনে ফিরে যান। প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে একজনকে ‘পারফরমার অব দ্য ডে’ নির্বাচন করা হয়। বাকিদের ‘তুমি গায়ক’ কার্ড দেয়া হয়। ফাইনাল রাউন্ডে ১০ জনকে রাখা হবে। তাদের ভেতর থেকে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় বিজয়ী পাবেন সনদ ও ক্রেস্টের সঙ্গে নগদ অর্থ পুরস্কার। বিভিন্ন মানের পুরস্কার পাবেন ৪১ জন। আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার এটিএন বাংলা শিল্পীদের টিভি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবে। টিএমএসএসের নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেন, প্রথম এই আয়োজনে কিছুটা ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। তবে আগামীতে একেবারের মাঠ পর্যায় থেকে শিল্পী খুঁজে বের করে আনা হবে। এজন্য একটি সেল গঠন করা হয়েছে।
×