ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্ব এজতেমা : টঙ্গীর এজতেমা ময়দানে ময়লা পানি, কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন

প্রকাশিত: ০৮:৪২, ১২ জানুয়ারি ২০২০

বিশ্ব এজতেমা : টঙ্গীর এজতেমা ময়দানে ময়লা পানি, কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রবিবার শেষ হলো ৫৫তম বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব। গাজীপুরে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে এ পর্বের এজতেমায় অংশ নেন মাওলানা জোবায়ের অনুসারী আলেম ওলেমা কওমীপন্থী তাবলীগ অনুসারীগণ। প্রথম পর্বের এজতেমা শেষ হওয়ার পর চারদিন বিরতি দিয়ে ১৭ জানুয়ারি হতে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ধাপের তিনদিন ব্যাপী এজতেমা। এ পর্বে মাওলানা সা’দ কান্ধলভী অনুসারী ওয়াসেকুল ইসলামের তাবলীগ অনুসারীরা অংশ নিবেন। প্রথম পর্বে অংশ নেওয়াদের ফেলে যাওয়া ময়লা আবর্জনার কারণে পানি নিষ্কাশন ড্রেন উপচে ময়দানে ময়লা পানি ঢুকেছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে রবিবার বিকেল হতে সেগুলো অপসারণের কাজ করে দ্বিতীয় পর্বের মুসুল্লীদের জন্য ব্যবহার উপযোগী করার প্রাণানন্ত চেষ্টা চলছে। জানা গেছে, এবারের বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব সম্পন্ন হওয়ার পর থেকেই এ পর্বে অংশ নেওয়া মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা টঙ্গীর এজতেমা ময়দান ত্যাগ করতে শুরু করেছেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ জানান, রবিবার রাত ১২টার মধ্যে প্রথম পর্বে অংশ গ্রহণকারী মুসুল্লীরা এজতেমা ময়দান ত্যাগ করার কথা রয়েছে। তারা ময়দান খালি করে ওই সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন। জেলা প্রশাসন এজতেমা ময়দানের দায়িত্ব গ্রহণের পর দ্বিতীয় পর্বের এজতেমা অনুষ্ঠাণের জন্য সোমবার এ পর্বের আয়োজকদের কাছে হস্তান্তর করার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে এজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ গ্রহণের জন্য বিপুল সংখ্যক মুসুল্লী আশেপাশের মসজিদ সহ বিভিন্নস্থানে অবস্থান করছেন। অনুমতি পেলেই তারা এজতেমা ময়দানে প্রবেশ করে এজতেমা অনুষ্ঠাণের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকবেন। তারা আরো জানান, প্রথম পর্বে অংশ নেওয়া মুসুল্লীরা এজতেমা ময়দানের যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে গেছেন। এতে ব্যবহারের অনুপেযোগী হওয়ায় সিটি কর্পেরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা রবিবার বিকেল হতেই ময়দান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ শুরু করেছে। এছাড়াও প্রথম পর্বের মুসুল্লীরা পলিথিনসহ ময়লা আবর্জনা ভর্তি বস্তা পয়ঃ ও পানি নিষ্কাশন ড্রেনে ফেলেছে। এতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে ড্রেনের পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে ড্রেন উপচে ময়লা পানি ময়দানের বিভিন্নস্থানে প্রবেশ করে জমেছে। প্রায় ২০-২২ ফুট গভীর এসব ড্রেনের ময়লা আবর্জনা অপসারণ করে পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতা দুর করতে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবুও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এজতেমার জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ময়দানটি ব্যবহারের উপযোগী করার প্রাণপণ চেষ্টা চলছে। আশা করছি শীঘ্রই ময়দানটি দ্বিতীয় ধাপের এজতেমার জন্য ব্যবহার উপযোগী কওে তোলা সম্ভব হবে। সিটি মেয়র আরো জানান, সচেতনতার অভাবে এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মুসুল্লী জানান, মতবিরোধের কারণে গত বছরও মাওলানা জোবায়ের ও মাওলানা সা’দ অনুসারীরা পৃথক দু’পর্বের এজতেমায় অংশ নেন। দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেওয়া মুসুল্লীদের দুর্ভোগে ফেলে তাদের কর্মসূচিকে বাঁধাগ্রস্থ করতে প্রথম পর্বে অংশ নেওয়া কিছুসংখ্যক মুসুল্লী টয়লেটের কমোড ভাংচুর করে। তারা টয়লেটের পাইপে এবং ড্রেনের ভিতর আবর্জনাসহ ভারী বস্তু ঢুকিয়ে অকেজো করার চেষ্টা করে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা ওয়াশার যৌথ প্রচেষ্টায় সেগুলো ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হলেও দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেওয়া মুসুল্লীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এবারের এজতেমার প্রথম পর্ব শেষে সেরকমটাই করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
×