ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে চা উৎপাদনে রেকর্ড

প্রকাশিত: ১২:৪২, ১২ জানুয়ারি ২০২০

দেশে চা উৎপাদনে রেকর্ড

বাংলাদেশে ১৬৬ বছরের ইতিহাসে এবার সর্বকালের সর্বোচ্চ চা উৎপাদনের রেকর্ড গড়েছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ১৬২টি বাগানে চা উৎপাদন হয়েছে সাড়ে আট কোটি কেজি। প্রতি কাপ চা তৈরিতে দুই গ্রাম চা-পাতা দরকার হয়। এ হিসাবে ২০১৮ সালের উৎপাদন হিসাব করা হলে ৪ হাজার ২৫২ কোটি কাপ চা তৈরির সমান চা উৎপাদিত হয়েছে দেশে। তবে এ সময়ে চায়ের চাহিদা ছিল ৮ কোটি ১৬ লাখ কেজি। এ হিসেবে চাহিদার চেয়ে চা উৎপাদন বেশি হয়েছে ৩৪ লাখ কেজি। এ সময়ে চা আমদানি হয়েছে ৭৭ লাখ কেজি। কিন্তু তার পরের বছর উৎপাদন কমে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৮০ লাখ কেজিতে। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮ কোটি ২০ লাখ কেজি উৎপাদন হয়। কিন্তু সদ্য বিদায়ী বছরে ৮ কোটি ৫০ লাখ কেজির অধিক চা উৎপাদন হয়েছে। বছর শেষে উৎপাদন হয়েছে ৯ কোটি কেজি। এটি সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড। ৯ কোটি কেজি চা উৎপাদের ফলে চা শিল্পের ওপর থেকে অনেক শঙ্কা কেটে যাবে, চা উৎপাদনে বাংলাদেশ হয়েছে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশে বর্তমানে চায়ের চাহিদা বছরে ৯ কোটি কেজি। ২০১০ সাল থেকে এই চাহিদা পূরণ করতে চা আমদানি শুরু হয়। ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১৪ লাখ কেজি চা আমদানি হয়। চা আমদানি নির্ভর হয়ে পড়বে কি-না এ নিয়ে যে শঙ্কা জন্মে ছিল গত কয়েক বছরে চা উৎপাদনের মাধ্যমে কেটে গেছে। সঠিক সময়ে কীটনাশক ব্যবহার এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চা উৎপাদনে এই সফলতা এসেছে বলে চা-বাগান সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল চা কমিটির তথ্য মতে, চীন এখন চা উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে। আর ভারত আছে দ্বিতীয় অবস্থানে। বিশ্বে চা উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন নবম স্থানে। কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ একটানা দশম অবস্থানে ছিল। ইন্টারন্যাশনাল চা কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের সামনে চায়ের উৎপাদন দ্বিগুণ করার সুযোগ রয়েছে। এ দিকে চা গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চা বাগানের জমি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। মাত্র ৫২ ভাগ জমি চা চাষের যোগ্য। বাকি ৪৮ ভাগ জমি পতিত ও চা চাষের জন্য লিজ নিয়ে ভিন্ন খাতে ব্যবহার হচ্ছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা, লিজ নেয়া জমির সঠিক ব্যবহার, সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা, সঠিক মনিটরিং, কম মূল্যে সার-কীটনাশক সরবরাহ ও ক্লোনিং চা গাছ রোপণ করলে উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে। চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালিনীছড়া চা-বাগানে প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষ শুরু হয়। দেশ স্বাধীনের সময় দেশে ১৫০টি চা-বাগান ছিল। তখন দেশে ৩ কোটি কেজির মতো উৎপাদন হতো। বর্তমানে দেশে ১৬৬টি চা-বাগান রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজারেই ৯২টি চা বাগান রয়েছে। অন্যান্য চা বাগানগুলোর মধ্যে হবিগঞ্জে ২৪টি, সিলেটে ১৯টি, চট্টগ্রামে ২২টি, পঞ্চগড়ে ৭টি, রাঙামাটিতে ২টি ও ঠাকুরগাঁওয়ে ১টি চা বাগান রয়েছে। দেশে এখন মোট চা চাষের জমির পরিমাণ ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৯ একর। অর্থনীতি ডেস্ক
×