ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

সৈয়দ কায়সারের আপীলের রায় ১৪ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ১১:২৮, ১২ জানুয়ারি ২০২০

সৈয়দ কায়সারের আপীলের রায় ১৪ জানুয়ারি

বিকাশ দত্ত ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জাতীয় পার্টির সাবেক মন্ত্রী ও কায়সার বাহিনীর প্রধান সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের বিরুদ্ধে আপীলের নবম মামলার রায় ঘোষিত হবে ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার। এটি হবে আপীল বিভাগের নিষ্পত্তিকৃত মামলার নবম রায়। এর আগে আরও ৮ মামলা আপীলে নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জনের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও আলবদর কমান্ডার এটিএম আজহারুল ইসলামের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এখন পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণার অপেক্ষা। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হলেই এটিএম আজাহারুল ইসলাম রিভিউ করার সময় পাবেন। সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মামলায় ৩ ডিসেম্বর উভয়পক্ষের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট আপীল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করে। বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা এবং বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান। ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধে তাকে মৃত্যুদ- প্রদান করে চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ । ট্রাইব্যুনাল কায়সারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ১৬টি অভিযোগের মধ্যে হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, আটক, মুক্তিপণ আদায়, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠন এবং ষড়যন্ত্রের ১৪টি প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি অভিযোগে ফাঁসি, ৪টিতে আমৃত্যু কারাদ-, ৩টিতে ২২ বছরের কারাদ- ও দুটি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেয়া হয়েছে। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপীল করা হয়। সৈয়দ কায়সারের পক্ষে এ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন আপীলটি করেন। আপীলে খালাসের আরজিতে ৫৬ যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ৫০ পৃষ্ঠার মূল আপীলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীন তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, বুলেটের আঘাতের চেয়েও ধর্ষণের আঘাত অনেক যন্ত্রণাদায়ক, ভয়ঙ্কর। একাত্তর সালে শত্রুর গুলিতে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন তাদের থেকেও যন্ত্রণাদায়ক হলো যারা একাত্তর সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের যন্ত্রণা সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। সামাজিকভাবেও এ যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। একাত্তরে যুদ্ধ শিশু, ধর্ষিত নারী ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের তালিকা করে পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণ প্রদানে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। যে যুদ্ধ শিশু জন্ম থেকে সামাজিক নিগ্রহ ধিক্কারের বা গঞ্জনা নিয়ে বড় হচ্ছে তার সবাই সাহসী নারী। তাদের আমরা স্যালুট জানাই।
×