ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দুই সিটি নির্বাচনে এমপিদের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা বাতিল দাবি ১৪ দলের

প্রকাশিত: ১১:১৮, ১২ জানুয়ারি ২০২০

দুই সিটি নির্বাচনে এমপিদের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা বাতিল দাবি ১৪ দলের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আইন বাতিল করার দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের ধানমণ্ডির বাসভবনে অনুষ্ঠিত জোটের এক বিশেষ সভা শেষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু এমপি বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছে সংসদ সদস্যরা সিটি নির্বাচনে প্রচার চালাতে পারবেন না। একজন কাউন্সিলর প্রার্থী যিনি সংসদ নির্বাচনের সময় এমপির পক্ষে কাজ করেছেন, এখন সেই এমপি তার নির্বাচনে রিটার্ন দিতে পারবে না- এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা নাগরিক অধিকার খর্ব করার জন্য করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সাবেক মন্ত্রীরা প্রচার চালাতে পারলে বর্তমান এমপিরা পারবেন না কেন? এটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলো কিভাবে? এই আইন বাতিল করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। এটা স্থানীয় নির্বাচন হলেও এই নির্বাচনকে অরাজনৈতিক নির্বাচন বলার সুযোগ নেই। স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গীবাদী শক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। তবে যেহেতু আইনটি বলবত আছে তাই আচরণবিধি মেনে ১৪ দল ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থনে কয়েকটি জায়গায় জনসভা করবে। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপি পরাজয় ধরে নিয়েই নির্বাচন করছে। তারা ভোটগ্রহণ চলাকালে নির্বাচন বর্জন করে। তাই তারা আগে থেকেই ফিল্ড তৈরি করে রাখার জন্য, প্রস্তুতি রাখার জন্য এসব কথা বলছে। পূর্ব ষড়যন্ত্র থেকেই বিএনপি সিটি নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। সভাপতির বক্তৃতায় আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এমপি বলেন, নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী এমপিরা প্রচারে যেতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশন এটা বলায় আমরা দুঃখ পেয়েছি। আমরা মনে করি সংসদে এই আইনটি পরিবর্তন করা দরকার। বিএনপির নেতারা ‘টপ টু বটম’ নির্বাচনের প্রচারে নামতে পারবে, আর আমরা পারব না- এটা দুঃখজনক। তারপরও যেহেতু নির্বাচন কমিশনের আইন আছে আমরা সেটা মেনেই চলছি। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এ সিটি নির্বাচন হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির লড়াই। এই নির্বাচন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের জন্য একটি চ্যালেঞ্জে। বাঙালী জাতি স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির সঙ্গে আপোস করতে পারে না। এই নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আমাদের মানুষের বাড়ি বাড়ি, ঘরে ঘরে যেতে হবে, বিনয়ের সঙ্গে ভোট চাইতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম নির্বাচনে বিজয়ী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমাদের ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে, কিন্তু তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য তাদের নির্বাচিত করতে হবে। আমাদের ১৪ দলের শক্তি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। আর বিএনপির শক্তি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি ও জঙ্গীবাদ লালনের শক্তি। তাই ১৪ দল ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম আতিক ও দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী করতে হবে। ১৪ দলের এই বিশেষ সভা থেকে এই দুই প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার, জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্তা, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ শাহাদাত হোসেন, বাসদের রেজাউর রশীদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×