ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের ত্রিপুরা সফরে নৈবেদ্য থিয়েটারের ‘চন্দ্রবিন্দু’

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ১২ জানুয়ারি ২০২০

ভারতের ত্রিপুরা সফরে নৈবেদ্য থিয়েটারের ‘চন্দ্রবিন্দু’

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ দেশের উদীয়মান নাট্য সংগঠন নৈবেদ্য থিয়েটার। ইতোমধ্যে তিন তিনটি প্রযোজনা মঞ্চায়নের মাধ্যমে বেশ পরিচিতি পেয়েছে দলটি। দলের তৃতীয় প্রযোজনা ‘চন্দ্রবিন্দু’ নাটকের দুটি মঞ্চায়নের জন্য ইতোমধ্যে ভারতে পৌছেছে দলের সদস্যরা। ভারতের ত্রিপুরায় দুটি নাট্য উৎসবে নাটক মঞ্চায়নের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছে নৈবেদ্য থিয়েটার। দলসূত্রে জানা গেছে, আজ এবং আগামীকাল নৈবেদ্য থিয়েটারের নতুন প্রযোজনা ‘চন্দ্রবিন্দু’ নাটকের দুটি মঞ্চায়ন হবে। এর মধ্যে ত্রিপুরায় ধর্মনগরের বিবেকানন্দ ভবনে আয়োজিত ষষ্ঠ নাট্যোৎসবের চতুর্থ দিন আজ ‘চন্দ্রবিন্দু’ নাটকের ২২তম এবং আগামীকাল উদয়পুরের কাকরাবন কমিউনিটি হলে নাটকের ২৩তম মঞ্চায়ন হবে। এর আগে ঢাকায় ‘চন্দ্রবিন্দু’ নাটকের ২১টি সফল প্রদর্শনী সম্পন্ন করেছে নৈবেদ্য থিয়েটার। ‘চন্দ্রবিন্দু’ নাটকটি রচনা করেছেন সালাহ্উদদীন আহমেদ মিলটন। নাটকটির গল্প ভাবনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন তরুণ নির্দেশক রাজীর রেজা। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন সিরাজউল ইসলাম দাদু, বিবি কানিজ ফাতেমা, রাজীব রেজা, রাইমা, ইমরুল আল হাসান, মৃনাল চৌধুরী। নাটকের পোশাক পরিকল্পনা ও সেট ডিজাইন বিবি কানিজ ফাতেমা, আবহ সঙ্গীত ইসমাইল ভূঁইয়া, আলোক কাওসার। ভারত সফর প্রসঙ্গে নৈবেদ্য থিয়েটারের দল প্রধান বিবি কানিজ বলেন পুরাতনদের পাশাপাশি দলে রয়েছে নতুনরাও যাদের অনেকেরই নেই দেশের বাইরে কাজ করার অভিজ্ঞতা তবে আত্মবিশ্বাস রয়েছে প্রবল। আমি মনেকরি একজন মঞ্চ অভিনেতার অনুপ্রেরণা হচ্ছে দর্শক, দর্শক যত বেশি হয় উৎসাহটা ততই বাড়ে। সে দর্শক হোক দেশী বা বিদেশী। গত ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আমরা প্রস্তুতি শো করেছি। আশা করছি ত্রিপুরার প্রতিটা শো আমাদের খুব ভাল হবে। অভিনেতা ও নির্দেশক রাজীব রেজা বলেন এই অঞ্চলের দর্শকদের চাহিদাটা কেমন তার একটা ধারণা আমার রয়েছে, তাই আমি আমার কাজগুলো সেখান থেকে করার চেষ্টা করি। এ অঞ্চলের মানুষ যতই আধুনিক হোক না কেন শেকড়ের দিকে তাদের নজর থেকেই যায়, আর এই গল্পটা হচ্ছে সেই রকম শেকড়ের একটি গল্প তবে সম্পূর্ণ মৌলিক। আমর বরাবরই একটু ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে কাজ করতে ভাল লাগে। এ নাটকটিকে ঐতিহাসিক না বলে প্রাগঐতিহাসিক বলা যেতে পারে, তবে এ কোন বাস্তব গল্প নয় এ নাটকটি আমার একটি ভাবনার ফসল। নিঃসন্দেহে এটি একটি অসাধারণ গল্প। ফোক ধারার এমন একটি পরিবেশনা আশাকরি বাংলাদেশের দর্শকদের মতো তাদেরও ভাল লাগবে। নাটকের তুলে ধরা হয়েছে সবার ওপরে মানুষ এই বিষয়কে ধরেই গড়ে উঠেছে এ নাটকের কাহিনী। জাতি-ধর্ম বা জন্ম পরিচয় দিয়ে মানুষ বিবেচ্য নয়, সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক মানুষ হিসেবে। মহাভারতের কর্ণ বা একলব্যকে যুগে যুগেই দেখা যায়, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ চলে এখনও। আর চন্দ্রবিন্দু ? সে বর্ণমালার এমন এক অংশ যে কখনও একা পূর্ণাঙ্গ নয়, নিজেকে প্রকাশ করতে প্রয়োজন অন্যের সহযোগিতা, তেমনই মানুষ, আর তাই তো সংসার। তবে সবাই কি তার কাক্সিক্ষত অবলম্বনটা পায় ? আর পেলেও বা তা কতটুকু অর্থবহ হয়ে ওঠে- তার অনেকটাই এ নাটকে উঠে এসেছে। বর্তমান সময় থেকে অনেকটা পেছনে গিয়ে চন্দ্র রাজ্যকে পটভূমি করে চন্দ্রবিন্দু নামক চরিত্রসহ বেশকিছু চরিত্রের মধ্যদিয়ে কালে কালে চলে আসা প্রেম, আকাক্সক্ষা, মানুষ ও মানবতার যুদ্ধকে এই নাটকের মধ্যদিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, সময়ের উদীয়মান এ নাট্যদলটি তাদের কাজ দিয়ে অল্প সময়ে উঠে এসেছে ঢাকার মঞ্চে। ইতোমধ্যে মঞ্চে এনেছে ৩টি প্রযোজনা। সিপাহী বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট নিয়ে নাটক ‘বিদ্রোহ এবং’ দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় গোড়ামি নিয়ে স্যাটায়ার নাটক ‘তুইও রাজাকার’, প্রাগ ঐতিহাসিক সময়ের শিক্ষা, রাজনৈতিক ও সামাজ ব্যবস্থা নিয়ে নাটক ‘চন্দ্রবিন্দু’। নৈবেদ্য থিয়েটারের প্রতিটি প্রযোজনাই আলোচিত ও দর্শক সমাদৃত হয়েছে।
×