ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেয়ারবাজারের নিম্ন সূচক

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১১ জানুয়ারি ২০২০

শেয়ারবাজারের নিম্ন সূচক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১০ সালের মহাধসের পর এক সপ্তাহে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে এতো বড় দরপতনের ঘটনা ঘটেনি। পতনের তীব্রতা এতোটাই ছিল যে, লেনদেন শুরু হওয়ার পরই আশঙ্কা শুরু হয়েছিল কতো কম সূচক কমে ততোটাই মঙ্গল। দিশেহারা বিনিয়োগকারীদের হৃদয়ের ক্ষরণ বাড়ার কারণে মুখে কালো কাপড় বেধে রাস্তায় দাড়াতেও হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এ নিয়ে সদ্য শেষ হওয়া সপ্তাহে সূচকটি হারিয়েছে প্রায় ২৬১ পয়েন্ট, যা শতাংশের হিসাবে ৬ শতাংশেরও বেশি। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সূচকের এ পতন সর্বশেষ পৌনে আট বছরের সর্বোচ্চ। এর আগে এত বড় পতন হয়েছিল ৩৮৬ সপ্তাহ বা পৌনে আট বছর আগে, ২০১২ সালের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে। ওই সপ্তাহে ব্যাপক দরপতনে ডিএসইও ওই সময়ের প্রধান সূচক ডিএসই জেনারেল ইনডেক্স (ডিজেন) কমেছিল ২৮২ পয়েন্ট। শতাংশের বিবেচনায় যার পরিমাণ ছিল ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। দরপতনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের সর্বশেষ অবস্থা ৪১৩৯ পয়েন্টে। গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস ব্যাপক পতন দিয়ে শুরু হয় শেয়ারবাজারের লেনদেন। সপ্তাহজুড়েই শেয়ারবাজারে পতনের তান্ডব দেখা গেছে। পতনের তান্ডবে উভয় শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। পতনের তান্ডবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬২ পয়েন্ট এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক ৭৭৬ পয়েন্ট কমেছে। আর ব্যাপক পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন এক সপ্তাহে ১৭ হাজার ১৬১ কোটি ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা বা ৫.০৩ শতাংশ কমেছে। জানা গেছে, গত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১ হাজার ৫৭৭ কোটি ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৮৪ টাকার লেনদেন হয়েছে। যাে আগের সপ্তাহ থেকে ২৭৪ কোটি ২৩ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৩ টাকা বা ২১.০৫ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩০২ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার ৭৩১ টাকার। ডিএসইতে গত সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৩১৫ কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ২১৬ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৩২৫ কোটি ৭২ লাখ ৩৫ হাজার ১৮২ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ১০ কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৬৬ টাকা বা ৩.১৬ শতাংশ কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬২ পয়েন্ট বা ৫.৮৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৬৪ পয়েন্ট বা ৬.২৯ শতাংশ এবং সিএসই-৩০ সূচক ১০০ পয়েন্ট বা ৬.৬২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৪৬ পয়েন্ট ও ১ হাজার ৪০৬ পয়েন্টে। ডিএসইতে চালু হওয়া নতুন সূচক সিডিএসইটি প্রথম প্রথম সপ্তাহে ৫২ পয়েন্ট কমে ৮৪৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৫৭টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টি বা ১০ শতাংশের, কমেছে ৩১০টির বা ৮৭ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টির বা ৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহজুড়ে ৬৫ কোটি ১২ লাখ ৩৮ হাজার ১৩৫ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৬১ কোটি ২৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৭৮ টাকার। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ৩ কোটি ৮৫ লাখ ১৪ হাজার ৬৫৭ টাকা বা ৬ শতাশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৭৬ পয়েন্ট বা ৫.৭৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৬৯ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসসিএক্স ৪৭৩ পয়েন্ট বা ৫.৭৭ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ৬৮১ পয়েন্ট বা ৫.৯৫ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ৬১ পয়েন্ট বা ৬.১৮ শতাংশ এবং সিএসআই ৫৪ পয়েন্ট বা ৬.১৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৭ হাজার ৭৩৫ পয়েন্ট, ১০ হাজার ৭৫৯ পয়েন্ট, ৯২৪ ও ৮১২ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের হাত বদল হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির বা ১৩ শতাংশ, দর কমেছে ২৪৭টির বা ৮৫ শতাংশ এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টির বা ২ শতাংশ।
×