ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতুর ২১তম স্প্যান বসছে ১৫ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ১১ জানুয়ারি ২০২০

 পদ্মা সেতুর ২১তম স্প্যান বসছে  ১৫  জানুয়ারি

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মা সেতুর বছরের প্রথম স্প্যান বসছে ১৫ জানুয়ারি। জাজিরা প্রান্তের ৩২ ও ৩৩ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হবে ‘৬বি’ নম্বর ২১ তম স্প্যানটি। এর আগে এ স্প্যানটি ১২ জানুয়ারি বসানোর কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। এসব তথ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর দায়িত্বশীল এক প্রকৌশলী জানান, সেতুর ২১তম স্প্যান বসানোর প্রাথমিক তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ জানুয়ারি। কিন্তু তা এখন সম্ভব নয়। কারণ, সেতুর ৪০০ কেভি বৈদ্যুতিক লাইনের পাইল ড্রাইভ চলছে। এ বৈদ্যুতিক লাইনটি মাওয়া ফেরিঘাটের ওই দিক দিয়ে যাবে। সেখানে সেতুর ক্রেনগুলো রয়েছে। এগুলো সরিয়ে নেয়ার পর জানুয়ারির ১৪ অথবা ১৫ তারিখে ২১ তম স্প্যানটি বসানো সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে বছরের প্রথম স্প্যান বসাতে বিলম্ব হলেও জানুয়ারি মাসে যে তিনটি স্প্যান বসানোর পূর্ব পরিকল্পনা ছিল সেটা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি ছাড়াও ২০ জানুয়ারি ‘১-ই’ নম্বর স্প্যানটি মাওয়া প্রান্তের ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটিতে এবং ৩০ জানুয়ারি ‘৬-এ’ নম্বর স্প্যানটি সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩১ ও ৩২ নম্বর খুঁটিতে বসানোর কথা রয়েছে। এদিকে সেতুর সর্বপ্রথম তৈরি করা ‘১এফ’ স্প্যানটি ৬ ও ৭ নম্বরের নিজস্ব খুঁটিতে সফলভাবে স্থাপন করা হয়েছে। গত ৬ জানুয়ারি দুপুরে এটি স্থানান্তরিত করা হয়। স্থান সংকুলান না হওয়ায় ‘১এফ’ স্প্যানটি অস্থায়ীভাবে সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটিতে বসানো ছিল। এখন স্থায়ীভাবে এটি ৬ ও ৭ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হলো। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর সেতুর ২০ তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে ৩ কিলোমিটার দৃশ্যমান অর্থাৎ সেতুটির অর্ধেক দৃশ্যমান হয়েছে। এ সিডিউল মেনে স্প্যান বসাতে পারলে চলতি বছরের জুলাই নাগাদ ৪১টি স্প্যান বসানো সম্পন্ন হবে। পদ্মা সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে মাওয়ায় এসেছে ৩৩টি স্প্যান। আরও দুইটি স্প্যান চীন থেকে ডিসেম্বরের ২৬ তারিখে বাংলাদেশের পথে রওনা হয়েছে। এটি নদী পথে বাংলাদেশে পৌঁছাতে ২১ দিন লাগে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী ৭ দিনের মধ্যে এ দুটি স্প্যান বাংলাদেশের মংলা বন্দরে এসে পৌঁছাবে। সেখান থেকে মাওয়া এসে পৌঁছাতে আরও দু’তিন দিন লাগবে। বাকি ছয়টি স্প্যান চীনে তৈরি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে। মার্চের মধ্যে সব স্প্যান দেশে চলে আসবে। সেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ২০টি স্প্যান স্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়েছে যার দৈর্ঘ্য তিন কিলোমিটার। এ সিডিউল মেনে স্প্যান বসাতে পারলে আগামী বছরের জুলাই নাগাদ ৪১টি স্প্যান বসানো শেষ হবে। এদিকে বসানো স্প্যানের নিচের তলায় রেলওয়ে স্ল্যাব এবং ওপরের তলায় রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ২৯১৭ টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এ পর্যন্ত ২০৯৭ টি তৈরি করা হয়েছে। আর ২৯৫৯ টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে সব তৈরি হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৬৮ টি রোডওয়ে স্ল্যাব এবং ৪৯৫টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে। এছাড়া মূল সেতুর মোট ৪২টি পিয়ারের (খুঁটি) মধ্যে ৩৬টি পিয়ারের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। বাকি রয়েছে মাত্র ৬টি পিয়ার। ৮, ১০, ১১, ২৬, ২৭ এবং ২৯ নম্বর পিয়ার এখন পদ্মার তলদেশ থেকে উপরের দিকে উঠছে বা উঠে গেছে। ৮, ১০ , ১১ এবং ২৯ চারটি পিয়ারের কাজ ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি শেষ হবে। অবশিষ্ট ২৬ এবং ২৭ নম্বর পিয়ারের কাজ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। ৬ দশমিক ১৫ কিমি দৈর্ঘ্যের দ্বিতল সেতুটি কংক্রিট ও স্টীল দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এই সেতুর দু’প্রান্তে আরও প্রায় তিন কিলোমিটার সংযোগ সেতু রয়েছে। সেই সংযোগ সেতুর কাজের অগ্রগতিও সন্তোষজনক। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে।
×