ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কয়েক কোটি টাকা উদ্ধার

ধানমন্ডিতে জাল নোটের কারখানার সন্ধান, দুজন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১০:২২, ১১ জানুয়ারি ২০২০

  ধানমন্ডিতে জাল নোটের কারখানার সন্ধান, দুজন গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার এক বাড়িতে জাল নোটের এক কারখানার সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব। এ সময় সাইফুল ও শাহ আলম নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব-১০ এর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান, ওই বাড়ি থেকে কয়েক কোটি টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে সব ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার নোট। এ সময় টাকা তৈরির সরঞ্জাম হিসেবে কাগজ, প্রিন্টার, টোনার, কেমিক্যাল, ডায়াচসহ টাকা তৈরিতে যা লাগে সব পাওয়া যায়। শুক্রবার ভোরে র‌্যাব-১০ এর একটি দল ধানমণ্ডি ৭/ই রোডের ১০ নম্বরে ভবনের তৃতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল নোটসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি কাইমুজ্জামান খান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে জাল টাকার একটা প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তবে বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীতে একটি জাল টাকার চক্র কাজ করছে। এরই সূত্র ধরে র‌্যাবের গোয়েন্দা দল চক্রটি ধরতে নজরদারি শুরু করে। একপর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কদমতলী থেকে শাহ আলম নামের একজনকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে এক লাখ ৯০ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিম ধানমন্ডির সাইফুলের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাসায় তল্লাশি করে কয়েক কোটি টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। অতিরিক্ত ডিআইজি কাইমুজ্জামান খান জানান, সাইফুলের স্ত্রী ও সন্তান গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন। তিনি জানান, এই চক্রের আরও সক্রিয় সদস্য র‌্যাবের নজরদারিতে রয়েছে। যে কোন সময় তাদের গ্রেফতার করা হবে। যে টাকা পাওয়া গেছে সেটা অবশ্যই এক দুই কোটি টাকার ওপরে। গণনা না করে বলা যাচ্ছে না। সাইফুল ও শাহ আলম আগে গ্রেফতার হয়েছিল কি-না জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা এখন নিশ্চিত না তারা এর আগে আটক হয়েছিল কিনা। তবে আমাদের যে অপরাধীর ডাটা বেজ আছে সেটা পর্যালোচনা করে বলা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে ধানমন্ডিতে বসবাস করে আসছিলেন সাইফুল। ধানমর ৭/ই’র ১০ নম্বরে দুই কক্ষবিশিষ্ট বাসা ভাড়া নেন সাইফুল। মহল্লায় সুনামও বেশ। ভদ্র হিসেবেই সাইফুলের পরিচিতি মহল্লার ভাড়াটিয়া, বাসিন্দা ও দোকানদারদের কাছে। সবসময় হাসিমুখে কথা বলতেন, ভাল ব্যবহার করতেন। কিন্তু রাত হলেই তৈরি করতেন কোটি কোটি টাকার জাল নোট। ছাড়তেন বাজারে। রাত হলে বিভিন্ন জাল টাকার কারবারির সঙ্গে যোগাযোগ বেড়ে যেত। ভাড়াবাসাতেও আসতেন অন্য জাল টাকা কারবারিরা। শুক্রবার ভোরে সাইফুলকে গ্রেফতারের পর এলাকাবাসীরা অবাক হয়ে যান। এমনকি তার পাশের ফ্ল্যাটে বাসিন্দা বাড়ির মালিক তাজ্জব বনে যান। তিনি জানান, পাশের ফ্ল্যাটে এমন কাণ্ড। কিন্তু এতদিন ধরে টেরই পেলাম না। আর কেউ ভাবেননি হাসিমাখা সাইফুল আড়ালে রাজধানীর অন্যতম জাল টাকা তৈরির কারিগর।
×