ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অনেক মার্কিনী রিয়াদকে বন্ধু নয় বরং শত্রু মনে করেন

যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্ক কোন্ পথে

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ১১ জানুয়ারি ২০২০

যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্ক কোন্ পথে

যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি জোট বর্তমানে মার্কিন জনগণের কাছে খুবই অজনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এখন যে বৈরী অবস্থা বিরাজ করছে, তার সবই ইরানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের ফলাফল। ভক্স। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি জোট প্রশ্নাতীতভাবে ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র নীতিতে গুরুত্ব পেয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইয়েমেনে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় নীতিনির্ধারণী মহল সৌদি আরবের কড়া সমালোচনা করে আসছেন। জামাল খাশোগির সন্তানরা মার্কিন নাগরিক। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশের জনগণের উদ্দেশে এই জোট বিষয়ে খোলাখুলি করে কখনও না বললেও অনেকটা অর্থনেতিক প্রয়োজনে সৌদি সরকারে সঙ্গে বন্ধুত্ব অটুট রেখে আসছেন। দৃষ্টি পাতের বিষয় হলো সৌদি আরবের সঙ্গে যখন একটি শক্তিশালী জোট মূলধারার অবস্থানে আছে, তখন এটি মার্কিন জনগণের কাছে খুবই অজনপ্রিয়ই থাকছে। ইরানে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতা আঞ্চলিক দিক দিয়ে শক্তিমত্তার পরিচয় হলেও যুক্তরাষ্ট্র-ইরান শত্রুতা সৌদি আরবের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর। তবে অনেক মার্কিনী মনে করেন সৌদি জোট ইরানের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত নয়। কারণ সৌদি জোটকেই তারা কোনভাবে পছন্দ করেন না। অধিকাংশ মার্কিনী সৌদি আরবকে পছন্দ করেন না। দেশটিতে করা গত বছর ফেব্রুয়ারির একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, মাত্র চার শতাংশ মার্কিন জনগণ সৌদি আরবকে পছন্দ করেন এবং ২৫ শতাংশ জনগণ সৌদি সম্পর্কে মোটামুটি ভাল ধারণা পোষণ করেন। ভেনিজুয়েলা ও কিউবার চেয়ে সৌদির স্কোর এ ক্ষেত্রে অনেক কম। এদিকে ২০১৮ সালের একটি জনমত জরিপে দেখা যায়, অনেক মার্কিনী সৌদিকে বন্ধু নয়, বরং শত্রু দেশ মনে করেন। তবে দেশটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মধ্যপ্রাচ্যের ওই দেশটিকে বন্ধু রাষ্ট্র মনে করেন। অন্যদিকে ২০১৯ সালে বিজনেস ইনসাইডারের এক জরিপে উঠে আসে, ২২ শতাংশ মার্কিনী মনে করেন, সৌদি আরব তাদের বন্ধু দেশ। তবে এটি সত্যি যে, মার্কিন সরকার আর জনগণের দৃষ্টিকোণের মধ্যে পার্থক্য আছে। আর তাই ট্রাম্প প্রশাসন ও সে দেশের জনগণের মধ্যে সৌদি আরব সম্পর্কে ও জোট বিষয়ে ধারণা ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু গণতন্ত্রে জনগণকে এটা বোঝানো খুবই কঠিন যে, যা কিছু করা হচ্ছে সবই জোটের জন্য, যেটিতে জনগণের কোন বিশ্বাস নেই। মার্কিন জনগণ যখন সৌদি আরবের প্রতি সন্দেহপ্রবণ, ঠিক তখনই তারা ইরানের প্রতি সদয় বা শান্ত হবে এটি মনে করার কোন কারণ নেই। গত বছর জুনে একটি জরিপে দেখা গেছে, ইরানকে পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করার পক্ষে নেয়া প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে সিংহভাগ মার্কিন জনগণের সমর্থন ছিল। ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করার অর্থ এটি নয় যে, ইরানকে পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করা যাবে। কারণ ওবামা প্রশাসন ইরানকে পরমাণু অস্ত্র থেকে দূরে রাখতে একটি কৌশলগত চুক্তি করেছিল। ইরানের পরমাণু চুক্তিটি সত্যিই সঠিক ও উত্তম চুক্তি ছিল, সে চুক্তি হতে বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসন বের হয়ে এসেছে।
×