ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যানবাহনের একাল সেকাল

প্রকাশিত: ০৮:৪৯, ১১ জানুয়ারি ২০২০

 যানবাহনের একাল সেকাল

উত্তরের নদীবেষ্টিত জেলা গাইবান্ধা। সাত উপজেলার ৪টির ২২টি ইউনিয়ন চরাঞ্চল। মূল ভূ-খ-ের বাকি ৩২টি ইউনিয়নে বসবাস করে বিপুল সংখ্যক মানুষ। সে কারণে এ জেলার যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভিন্নতা রয়েছে। আদিকাল থেকেই নদী এলাকার চরাঞ্চলের মানুষের বর্ষায় যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌকা। শুকনা মৌসুমে খেয়া নৌকা ছাড়াও যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনে টাট্টু ঘোড়ার গাড়ি, গরু ও মহিষের গাড়ি, বাই-সাইকেল এবং নারী, বয়স্ক ও অসুস্থদের জন্য ব্যবহৃত হয় খাটলী। সম্প্রতি নৌকার ধরনসহ অন্যান্য যানবাহনেও পরিবর্তন এসেছে। ছইওয়ালা ছোট ছোট নৌকার পরিবর্তে যাত্রী পরিবহন করা হয় বড় বড় গয়নার নৌকায়। মালামাল পরিবহনের বড় নৌকা এবং ছোট ডিঙি নৌকাগুলো মানুষ চালাতো বৈঠা, লগি ঠেলে ও দাড় টেনে। এছাড়া রঙিন পাল বা বাদাম খাটিয়ে এবং নদীর পাড় দিয়ে গুন টেনে নদীতে নৌকা চালানো হতো। এর পরিবর্তে একালের নৌকা শ্যালো ইঞ্জিনচালিত এবং দ্রুতগতির। ছইওয়ালা ছোট দুই মাঝির বৈঠায় চালানো নাইওরির নৌকার পরিবর্তে এখন নতুন বউ নাইওর যায় শ্যালোচালিত গয়নার নৌকায়। শুধু মাছ ধরার জন্য জেলেরাই নদীতে দাড়টানা এবং বৈঠা লগি টানা এবং পাল খাটানো ছোট নৌকা অতীতের মতই ব্যবহার করছে। পালকির প্রচলন না থাকলেও খাট্লীর প্রচলন আজও আছে। অসুস্থ রোগী বা বয়স্ক ব্যক্তিদের মানুষ কাঠের ছোট জলচকিতে দড়ি বেঁধে সেই দড়িতে বাঁশ লাগিয়ে দুজন বেহারা তা ঘাড়ে করে নিয়ে যায়। যাকে আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় খাটিল। তবে গরু মহিষের গাড়ি ব্যবহার প্রচলন বহুলাংশে কমলেও ঘোড়ার গাড়ির চলাচল এখনও আছে। বাই-সাইকেলও পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। গরুর গাড়ির জেলা খ্যাত গাইবান্ধায় এখন গরু-মহিষের গাড়ি বিলুপ্ত প্রায়। সম্প্রতি শ্যালো মেশিন চালিত ভট্ভটি, ব্যাটারি চালিত অটোবাইক, সিএনজিচালিত টেম্পো, ট্রাক্টরের ইঞ্জিন চালিত কাঁকড়া, ভাড়ায় চালিত যাত্রীবাহী মোটরসাইকেল, রিক্সা-ভ্যান, মোটর চালিত রিক্সা, ম্যাজিক নামের ১২ সিটের যাত্রীবাহি গাড়ি প্রধান যানবাহনে পরিণত হয়েছে। স্বল্প সংখ্যক সাইকেল, রিক্সা জেলায় চালু থাকলেও মোটর সাইকেল ব্যবহার প্রবণতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। -আবু জাফর সাবু গাইবান্ধা থেকে
×