ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কোয়েল পাখিতে স্বাবলম্বী আতিকুল

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ১১ জানুয়ারি ২০২০

  কোয়েল পাখিতে স্বাবলম্বী আতিকুল

বেকার অবস্থায় কেউ কেউ হতাশায় ভুগলেও ব্যতিক্রমী কারও কারও মনের মাঝে নানা শখেরও উদয় হয়। তেমন এক বেকার যুবক আতিকুল ইসলাম। তার মনে হতাশার পরিবর্তে ভাল কিছু করার শখের উদয় হয়। প্রায় ৭ বছর আগে আতিকুলের মনে কোয়েল পাখি পালন করার শখ জাগে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। শখের বসে কোয়েল পাখি পালন করে সফলতার মুখ দেখছেন আতিকুল ইসলাম আতিক। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে আতিকুল বেকার থেকে এখন স্বাবলম্বী। সে এখন ‘মায়ের দোয়া কোয়েল ফার্ম’ নামের খামার মালিক। গ্রামের বাড়িতে নিজেদের জমিতে একটি শেড নির্মাণ করে সেখানে ৩ হাজার কোয়েল পাখি পালন করছেন। তার খামার থেকে প্রতিদিন মেলে প্রায় দেড় হাজার কোয়েল পাখির ডিম। অবশিষ্ট দেড় হাজার পাখি মাংসের জন্য পালন করা হচ্ছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগের কোন সহযোগিতা ছাড়াই এত দূর এসেছেন বলে জানান আতিকুল। সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির পাশেই কোয়েল পাখির জন্য সে একটি মাঝারি আকারের সেড তৈরি করেছেন। আতিকুল এবং তার পরিবারের লোকজন এগুলোর দেখাশোনা করে থাকেন। তার এই খামার থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ডিম বিক্রি হয় প্রায় দেড় হাজার। প্রতিটি ডিম ২টাকা ২০ পয়সা দামে বিক্রি হয়। আতিকুলের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা যায়, প্রায় ৭ বছর পূর্বে শখের বসে সে কোয়েল পাখি পালন শুরু করেন এবং এতে সে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। শখের বশে কোয়েল পাখি পালন শুরু করলেও বর্তমানে কোয়েল পাখি নিয়ে চলছে তার বাণিজ্যিক কার্যক্রম। ভবিষ্যতে সে তার এই কার্যক্রমকে আরও প্রসারিত করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। সে আরও বলেন, যদি প্রাণীসম্পদ বিভাগের সহযোগিতা এবং সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পায় তাহলে একটি ডিম ফোটানোর মেশিন ক্রয় করে বাচ্চা উৎপাদন এবং বাজারজাত করার শখ বাস্তবায়ন করতে পারবেন। আলাপকালে তিনি আরও জানান, একটি মা কোয়েল পাখি বছরে প্রায় দেড় থেকে দুই শত ডিম দিয়ে থাকে। প্রতিটি ডিমের ওজন ১৫ থেকে ২০ গ্রাম। বাচ্চা ফুটানোর পর ২ মাস বয়স হলেই কোয়েল পাখি ডিম দিতে শুরু করে। তিনি দাবি করেন একটি মুরগির ডিমের চেয়ে তিনগুণ বেশি ক্যালরি থাকে কোয়েলের ডিমে। এছাড়া কোয়েল পাখির মাংস বেশ সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। ফলে ক্রমেই কোয়েল পাখির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল হোসেন বলেন আতিকুল ইসলাম কোয়েল পাখির খামার দিয়ে এলাকায় অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার খামারে উৎপাদিত কোয়েল পাখির ডিমের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশ এলাকায়। তার কোয়েল পাখির খামারের সফলতা দেখে এলাকার বেকার যুবকদের মধ্যে স্বাবলম্বী হবার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান জানান, খামারী আতিকুল এবিষয়ে আমাদের কাছে কখনও কোন সহযোগিতা চায়নি। চাইলে কোয়েল পাখির রোগ-বালাই সংক্রান্ত চিকিৎসার প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করব। যদিও কোয়েল পাখির রোগ ব্যাধি কম। -মোঃ হারেজুজ্জামান হারেজ, সান্তাহার থেকে
×