ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ১১:১৬, ১০ জানুয়ারি ২০২০

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ শেখ মুজিব নামটি মুছে ফেলার কত না চেষ্টা আমরা দেখেছি! যে নেতার নিজের বলতে কোন জীবন ছিল না, পুরোটাই দেশের মানুষের জন্য ব্যয় করেছিলেন; সেই দেশ, দেশের মানুষ তাঁকে ভুলে যাবে? তবু চেষ্টা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে সেনাবাহিনীর এক দল শ্বাপদ হামলে পড়েছিল ৩২ নম্বরের বাড়িতে। সপরিবারে হত্যা করেছিল জাতির জনককে। এর পর থেকে উল্টো পথে হাঁটা। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি মুজিব নামটি এমনকি উচ্চারণ করতে দেয়নি কোথাও। বেতার টেলিভিশনে এ নাম ছিল নিষিদ্ধ। ইতিহাসের বরপুত্রকে ইতিহাস থেকে ছেঁটে ফেলার মতো নির্বুদ্ধিতা আমরা দেখেছি বৈকি। এভাবে দীর্ঘ ২১টি বছর কেটে গেছে। কিন্তু কী অবাক কা-! মুজিব রয়ে গেলেন তাঁর মতোই। মানুষের কোমল হৃদয়ে দিব্যি বেঁচে ছিলেন তিনি। অন্ধকারের বুক চিরে আজ সূর্যের মতো উদিত হয়েছেন। জ্বল জ্বল করছেন। সামনে মহান নেতার জন্মশতবার্ষিকী। বড় উপলক্ষ সামনে রেখে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে পরের বছর ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে মুজিববর্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে ক্ষণগণনা শুরু হবে। এরই মাঝে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল ঘড়ি বসানো হয়েছে। এসব ঘড়ি জানিয়ে দেবে, মূল শুরুর কতটা বাকি। উৎসবের আগাম জানান দেবে ঘড়িগুলো। মাহেন্দ্রক্ষণ সামনে রেখে রাজধানীর সর্বত্রই সাজ সাজ রব। মুজিবের প্রতি বাঙালীর চির আবেগ ক্রমে প্রকাশিত হচ্ছে। এ আবেগ এ ভালবাসার জয় হোক। একটি মুজিবরের থেকে/লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি/ আকাশে বাতাসে ওঠে রণি...। বাংলার আকাশে বাতাসে মিশে থাকুক মুজিব। জন্মশতবর্ষের প্রাক্কালে সকলের তা-ই প্রত্যাশা। অন্য প্রসঙ্গ। শীত বেড়েছে। গত বছরও বলা হচ্ছিল, শীত নেই। দেশ থেকে শীত বিদায় নিয়েছে। এবার বিপরীত ছবি। কয়েকগুণ শক্তি নিয়ে যেন ঝাঁপিয়েই পড়েছে শীত। ঢাকাবাসী এরই মাঝে কাবু। আবহওয়া অফিস বলছে, শৈত্যপ্রবাহ একটু কমলেও, থামেনি। আজ শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা ফের কমতে থাকবে। তার মানে দুর্ভোগ বাড়বে হতদরিদ্রদের। রাজধানীর ফুটপাথে শুয়ে কাটানো মানুষগুলো পাশে দাঁড়ানোর এখনই সময়। আমরা কি দাঁড়াব না তাদের পাশে? শেষ করা যাক দুঃখজনক একটি প্রসঙ্গ টেনে। গত রবিবার শহর ঢাকার রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে এক তরুণীকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাতে বাস থেকে নামতেই তার ওপরে হামলে পড়ে ধর্ষক। কুর্মিটোলা এলাকার নির্জন রাস্তা থেকে তরুণীটিকে সে পাশের জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানেই চলে বর্বর নির্যাতন। এ ঘটনায় আবারও সামনে এসেছে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি। নারীর জন্য কতটা নিরাপদ রাজধানী শহর? হ্যাঁ, বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু দায় তো এড়ানো যাবে না। আমাদের প্রশাসন পুলিশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি দায়টি স্বীকার করছে? দোষীকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধরার কৃতিত্ব পাবে র‌্যাব। কিন্তু নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার মেয়েটির কী হবে? কে নেবে তার জীবনের ভার? ঘটনায় যে ভীতি ছড়িয়ে গেল অন্য মেয়েদের মনে, কে তাদের ভরসা দেবে? জরুরী প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের উত্তর এখই চাই। দিতে হবে।
×