জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ইরানের সঙ্গে কোন শর্ত ছাড়াই আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে দেয়া এক চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্র কাশেম সোলাইমানিকে হত্যার যুক্তি তুলে বলেছে, নিজেদের রক্ষা করার জন্যই এ কাজ করা হয়েছে। সোলাইমানি হত্যার জবাবে গত বুধবার ভোরে ইরাকে অবস্থিত দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। যদিও এতে মার্কিন সৈন্যদের কোন ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে। ইরানও জাতিসংঘে বলেছে, নিজেদের রক্ষার জন্যই এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প যেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে না পারেন সেজন্য তার যুদ্ধক্ষমতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। খবর এএফপি, এনডিটিভি, ইরনা, ইয়াহু নিউজ, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস, আল-জাজিরা, মিডল ইস্ট আই ও বিবিসির।
নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া এক চিঠিতে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেলি ক্র্যাফট বলেছেন, ইরানের দ্বারা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা যাতে হুমকির মুখে না পড়ে এবং উত্তেজনা যাতে বৃদ্ধি না পায় সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা করতে তৈরি আছে। যুক্তরাষ্ট্রের চিঠিতে বলা হয়, সোলাইমানি হত্যাকাণ্ড সঠিক পদক্ষেপ ছিল। জাতিসংঘ সনদের ৫১ ধারায় বলা হয়েছে, কোন রাষ্ট্র যদি নিজেদের রক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেয় তাহলে সেটি দ্রুত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে অবহিত করতে হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের সৈন্য এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজন অনুযায়ী অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেবে। অন্যদিকে জাতিসংঘ সনদের ৫১ ধারা উল্লেখ করে ইরানও চিঠির মাধ্যমে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে। জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত মাজিদ তখত রাভানচি এক চিঠিতে জানিয়েছেন, ইরান কোন যুদ্ধ কিংবা উত্তেজনা বাড়াতে চায় না। মার্কিন ঘাঁটিতে সুনির্দিষ্ট এবং যথাযথ সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ইরান আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত। এই অভিযান ছিল সুনির্দিষ্ট সামরিক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে সামরিক ছাড়া কোন বেসামরিক মানুষ এবং তাদের সম্পদের কোন ক্ষতি হয়নি, চিঠিতে জানিয়েছেন ইরানের রাষ্ট্রদূত।
এদিকে, ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প যেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে না পারেন সেজন্য তার যুদ্ধক্ষমতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে বৃহস্পতিবার ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ডেমোক্র্যাট সদস্যদের হাতে। স্পীকার ন্যান্সি প্যালোসি এক বিবৃতিতে ভোটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় ট্রাম্প যেন ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে না পারেন সেজন্য তার যুদ্ধক্ষমতা কমিয়ে আনতেই ভোটের আয়োজন করা হয়েছে।
