ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শাহরিয়ার কবির

২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের তাৎপর্য

প্রকাশিত: ০৯:১০, ১০ জানুয়ারি ২০২০

২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের তাৎপর্য

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কালপঞ্জির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ দিন যদি হয় ১৯৭১-এর ৭ মার্চ, যেদিন রমনার বিশাল ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশে তাঁর সেই অবিস্মরণীয় ভাষণে বলেছিলেন- ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’; মুক্তিযুদ্ধের কালপঞ্জির শেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন হচ্ছে ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি, যেদিন জাতির পিতা পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে একই স্থানে বিশাল জনসমুদ্রে স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তির সনদ ঘোষণা করেছিলেন। স্বাধীনতা আর মুক্তি যে এক নয় এটি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেই স্পষ্ট করেছিলেন। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হলেও যে উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তা মূর্ত হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে। ’৭২-এর ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে স্বদেশে ফিরে আসেন। বাংলাদেশে ফেরার পথে দিল্লীতে যাত্রা বিরতিকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁর জন্য এক বিশাল গণসংবর্ধনার আয়োজন করেছিলেন। এই সংবর্ধনা সভায় বঙ্গবন্ধু এবং ইন্দিরা গান্ধীÑ দুজনের ভাষণই ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সংক্ষিপ্ত এক ভাষণে বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহান বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ভারতীয় জনগণের উদ্দেশে বলেছিলেনÑ আমি আপনাদের তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আমার প্রথম প্রতিশ্রুতি ছিল বাংলাদেশের শরণার্থীদের আমি সম্মানে তাদের দেশে ফেরত পাঠাব। আমার দ্বিতীয় প্রতিশ্রুতি ছিল বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীকে আমি সবরকম সহযোগিতা করব। আমার তৃতীয় প্রতিশ্রুতি ছিল শেখ মুজিবকে আমি পাকিস্তানের কারাগার থেকে বের করে আনব। আমি আমার তিনটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছি। শেখ মুজিব তাঁর দেশের জনগণকে একটিই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেনÑ তিনি তাদের স্বাধীনতা এনে দেবেন। তিনি তাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। এর জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমাকে বলা হয়েছে ভারতের সঙ্গে আপনার কীসের এত মিল? আমি বলেছি ভারতের সঙ্গে আমার মিল হচ্ছে নীতির মিল। আমি বিশ্বাস করি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতায়। শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীও তাই বিশ্বাস করেন। আমাদের এই মিল হচ্ছে আদর্শের মিল, বিশ্বশান্তির জন্য ...। সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নীতি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু একই দিনে দেশে ফিরে রমনার বিশাল জনসমুদ্রে আবারও বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে, আর তার ভিত্তি বিশেষ কোন ধর্মীয়ভিত্তিক হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।’ ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি ভারতের রাজধানী দিল্লী এবং বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় লাখ লাখ মানুষের মহাসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনৈতিক দর্শন এভাবেই ব্যক্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’-তেও তাঁর এই রাজনৈতিক দর্শন বিভিন্ন প্রসঙ্গে উল্লিখিত হয়েছে। ১৯৭২-এর ৪ নবেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রিক বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়। গণপরিষদে এই সংবিধান গৃহীত হওয়ার প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধু এক অনন্যসাধারণ ভাষণ প্রদান করেছিলেন, যে ভাষণে বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনৈতিক দর্শনের মূল প্রতিপাদ্য বিষদভাবে তুলে ধরেছিলেন, যা মূর্ত হয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের চার মূলনীতি রূপে। ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের কথা বহু দেশের সংবিধানে রয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু এর নতুন সংজ্ঞা দিয়েছেন, যা অন্য কোন দেশের সংবিধানে নেই। বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করার সময় বঙ্গবন্ধু এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বহুবার বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ ধর্মহীনতা নয়। প্রত্যেক মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালন ও প্রচারের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। শুধু রাষ্ট্র ও রাজনীতি ধর্মের ব্যাপারে নিরপেক্ষ থাকবে, কোন বিশেষ ধর্মকে প্রশ্রয় দেবে না। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগঠনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ধর্মের নামে হানাহানি এবং ধর্মব্যবসা বন্ধের জন্যই এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। এতে ধর্ম এবং রাষ্ট্রই দুই-ই নিরাপদ থাকবে। সেই সময় অনেক বামপন্থী বুদ্ধিজীবী ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাদের বক্তব্য ছিল সেক্যুলারিজমের প্রকৃত অর্থ হচ্ছেÑ ‘ইহজাগতিকতা’। ধর্মের ব্যাপারে রাষ্ট্রের নিরপেক্ষতা যথেষ্ট নয়। সব ধর্মের প্রতি সমান আচরণ প্রদর্শন করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে কোরান, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠ, ওআইসির সদস্যপদ গ্রহণ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ইত্যাদির অনেক সমালোচনা তখন হয়েছে। পশ্চিমে সেক্যুলারিজম যে অর্থে ইহজাগতিক- বঙ্গবন্ধুর সংজ্ঞা অনুসারে বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা সে রকম ছিল না। তার সেক্যুলারিজম ছিল তুলনামূলক নমনীয়, কারণ তিনি মনে করেছেন ধর্মের প্রতি ইউরোপীয়দের মনোভাব এবং বাংলাদেশসহ অধিকাংশ এশীয় দেশের মনোভাব এক রকম নয়। ইউরোপে যারা নিজেদের সেক্যুলার বলে দাবি করে তারা ঈশ্বর-ভূত-পরলোক কিংবা কোন সংস্কারে বিশ্বাস করে না। বঙ্গবন্ধু কখনও সে ধরনের সেক্যুলারিজম প্রচার করতে চাননি বাংলাদেশে। ধর্মব্যবসায়ী রাজনৈতিকদলগুলোর কারণে বাংলাদেশের মানুষ ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন ও অনীহ কিন্তু একই সঙ্গে এদেশের অধিকাংশ মানুষ ধর্মপরায়ণ। এ কারণেই বঙ্গবন্ধুকে বলতে হয়েছে- ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ ধর্মহীনতা নয়, ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার জন্য রাজনীতিও রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে পৃথক রাখা প্রয়োজন। কারণ- ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার।’ মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের প্রতিটি মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের বদৌলতে ধর্ম কীভাবে গণহত্যা ও ধর্ষণসহ যাবতীয় ধ্বংসযজ্ঞের সমার্থক হতে পারে। যে কারণে ’৭২-এর সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগঠনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি কারও মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনি। এভাবেই অনন্য হয়ে উঠেছিল ’৭২-এর সংবিধান। ’৭২-এর ৪ নবেম্বর গণপরিষদে গৃহীত বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনে আলোকিত বাংলাদেশের এই সংবিধান যে সমগ্র বিশ্বের যাবতীয় সংবিধানের ভেতর অনন্য স্থান অধিকার করে আছে- এ কথা পশ্চিমের সংবিধান বিশেষজ্ঞরাও স্বীকার করেছেন। বিশ্বের কোন দেশ কতটুকু সভ্য ও আধুনিক তা বিচার করবার অন্যতম মানদণ্ড হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ-গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি সেই দেশটির সাংবিধানিক অঙ্গীকার এবং তার প্রয়োগ। বিশ্বের প্রথম ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সংবিধানের জনক হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- যে সংবিধান গৃহীত হয়েছিল ১৭৭৬ সালে। মানবাধিকার শব্দটিরও জন্মদাতা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই যুক্তরাষ্ট্রের একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ‘সেন্টার ফর ইনক্যয়ারি’র পরিচালক ড. অস্টিন ডেসি বলেছেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতার রক্ষাকবচ হিসেবে বাংলাদেশের ’৭২-এর সংবিধানে ধর্মের নামে রাজনৈতিক দল গঠনের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানেও নেই। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ধর্মীয় মৌলবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষেত্র সংকুচিত হচ্ছে।’ শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ধর্মনিরপেক্ষতার রক্ষাকবচ হিসেবে ধর্মের নামে রাজনীতি সমাজতান্ত্রিক শিবিরের বাইরে অন্য কোন দেশ নিষিদ্ধ করতে পারেনি। এমনকি বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিবেশী ভারতের সংবিধানেও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। আমাদের দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু এবং চার জাতীয় নেতার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় এসে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালী জাতীয়তাবাদ মুছে ফেলার পাশাপাশি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠনের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আলোকাভিসারী একটি জাতিকে মধ্যযুগীয় তামসিকতার কৃষ্ণগহ্বরে নিক্ষেপ করেছেন। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ’৭২-এর মহান সংবিধানের উপর এই নিষ্ঠুর বলাৎকার বাংলাদেশে পাকিস্তানী ধারার সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী রাজনীতির ক্ষেত্র তৈরি করেছে। আত্মগোপনকারী মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক, যুদ্ধাপরাধী জামায়াতীরা আবার মাথাচাড়া দেয়ার সুযোগ পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করলে বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতির এই তথাকথিত ‘ইসলামিকরণ’ বা ‘পাকিস্তানীকরণ’ সম্ভব হতো না। বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণায় ধর্মের অবস্থান ছিল। তাঁর ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল ধর্মবর্জন নয়, রাজনীতি ও রাষ্ট্র থেকে ধর্মের পৃথকীকরণ। এশিয়া মহাদেশে প্রথম স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা যদি বঙ্গবন্ধুর প্রধান কৃতিত্ব হয়, তাঁর দ্বিতীয় প্রধান কৃতিত্ব এই বাংলাদেশের জন্য সংক্ষিপ্ততম সময়ে একটি অনন্যসাধারণ সংবিধান প্রণয়ন। পাকিস্তানপন্থী বাংলাদেশীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল- ১) ’৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য, ২) ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার বন্ধ করার জন্য এবং ৩) সংবিধান ও জাতীয় জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা মুছে ফেলে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের মতো মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানাবার জন্য। ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশের গন্তব্য। ১০ জানুয়ারির দুটি ঐতিহাসিক ভাষণে তাঁর রাজনৈতিক দর্শন যেভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল, যেভাবে তা গৃহীত হয়েছিল ’৭২-এর সংবিধানে রাষ্ট্রের চার মূলনীতি রূপে, বাংলাদেশ যদি সে লক্ষ্যে অগ্রসর হতো এতদিনে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিতি অর্জন করতে পারত। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু তাঁর একাধিক ভাষণে বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড বানাবার স্বপ্নের কথা বলেছেন। বঙ্গবন্ধুর সংবিধানে সেই দিকনির্দেশনাও ছিল। যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, তার কন্যা সেই স্বপ্ন পূরণ করবেন- বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কালগণনার শুভ লগ্নে জাতি এ প্রত্যাশা করতেই পারে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হচ্ছে। ২০২০ সালে এই দিবস নতুন তাৎপর্য নিয়ে আমাদের কাছে এসেছে। ২০২০-এর ১০ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী তৃতীয় বিশ্বের নির্যাতিত নিপীড়িত জাতিসমূহের কণ্ঠস্বর বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে মুজিববর্ষের কালগণনা আরম্ভ হচ্ছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য বহুমাত্রিক কর্মযজ্ঞের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গৃহযুদ্ধ, ছায়াযুদ্ধ, সংঘাত, সন্ত্রাস ও দারিদ্র্য লাঞ্ছিত বর্তমান বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন শান্তি ও সাম্যের নতুন বার্তা দিতে পারে। পবিত্র ধর্মকে রাষ্ট্র ও রাজনীতি থেকে পৃথক রেখে শোষিত মানুষের সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে যখন আমাদের সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে- বঙ্গবন্ধু দেশ ও কালের গণ্ডি অতিক্রম করে বিশ্বনায়কের মর্যাদায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অধিষ্ঠিত হবেনÑ মুজিববর্ষের কালগণনার শুভারম্ভে এই হোক আমাদের প্রত্যয়। ৯ জানুয়ারি, ২০২০
×