ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা

প্রকাশিত: ০৮:৫৪, ১০ জানুয়ারি ২০২০

মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা

আজ থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা শুরু হচ্ছে, যার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর জন্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে ক্ষণগণনা ঘড়ি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক উদযাপন শুরু হবে ১৭ মার্চ, যা অব্যাহত থাকবে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত। উল্লেখ্য, বছরটি হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বর্ণজয়ন্তী। যুগপৎ চলতে থাকবে এই দুটি অনুষ্ঠান নানা উৎসব-আয়োজনের মধ্য দিয়ে। এই উদযাপন শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং দেশ ও জাতির জীবনে নতুন জীবনী শক্তি সঞ্চারিত করা। জাতিকে নতুন মন্ত্রে দীক্ষিত ও উজ্জীবিত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। কেননা, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন, অদ্বিতীয়। ‘বঙ্গবন্ধু তুমি ফিরে এলে তোমার স্বাধীন সোনার বাংলায়’- বাহাত্তরের ১০ জানুয়ারি বেতার থেকে বেজে উঠেছিল এই গান। সুদূর পাকিস্তানের কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠ থেকে বেরিয়ে এলেন তিনি তাঁর প্রিয় জন্মভূমিতে ৪৯ বছর আগে। বাঙালী জাতির ইতিহাসে তাই ১০ জানুয়ারি একটি চির স্মরণীয় দিন। ১৯৭২ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে ৮ জানুয়ারি মুক্ত হয়ে লন্ডন, দিল্লী হয়ে এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী সেনাদের হাতে বন্দী হওয়ার আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তাঁকে থাকতে হয় পাকিস্তানের কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে। এ সময় প্রতি মুহূর্তে তাঁকে গুনতে হয়েছে মৃত্যুর প্রহর। তবে বাঙালী জাতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পালনে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করেনি। সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। সেদিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সকলের স্বপ্ন ছিল একসূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধুই ছিলেন জাতির ঐক্যের প্রতীক। এই দিনে বঙ্গবন্ধুর আগমনে বদলে গিয়েছিল সবকিছু। মানুষ সব হতাশা ও দুর্ভোগ ভুলে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করেছিল। বস্তুত খুব অল্প সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের কল্যাণার্থে নানা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। শিক্ষা, কৃষিসহ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রকৃত ভিত্তি রচিত হয়েছিল সে সময়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর আগমন বাঙালী জাতির জন্য একটি বড় প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। তাঁর আগমনের দিনটি এখনও অনেকের মনে গভীর আনন্দের স্মৃতি হিসেবে বিরাজ করছে। এ দিনটি আমাদের দেশ গড়ার লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রেরণা যোগায়। বর্তমান সময়ে জাতির উন্নতি ও অগ্রগতির এই লগ্নে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি গভীর তাৎপর্যবহ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন ও রাজনীতি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধীদের মোকাবেলায় আমাদের নতুনভাবে উজ্জীবিত হতে হবে। জঙ্গী ও দুর্নীতিমুক্ত-অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আজ আমাদের নতুনভাবে শপথ নিতে হবে। টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিতে হবে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জয়যাত্রা। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রুদের নির্মূল করা ছাড়া এ দেশে সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসবে নাÑ এই সত্যটি বিস্মৃত হলে চলবে না। জঙ্গী ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা অত্যন্ত জরুরী। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সবার চেতনায় উজ্জীবিত, এটা সব সময়ই অম্লান। এই চেতনা সর্বদা সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রেরণা জোগায় আমাদের।
×