ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয়ের রেশ, ঘরে ঘরে উল্লাস ॥ ৪৮ বছর পরের এই দিন, সেই দিন হয়েই রইল...

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ১০ জানুয়ারি ২০২০

বিজয়ের রেশ, ঘরে ঘরে উল্লাস ॥ ৪৮ বছর পরের এই দিন, সেই দিন হয়েই রইল...

সমুদ্র হক ॥ ‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়/ তুমি আজ ঘরে ঘরে, এতো খুশি তাই/কী ভালো তোমাকে বাসি আমরা, বলো কী করে বোঝাই....এ দেশকে বলো তুমি বলো কেন এত ভালোবাসলে/সাত কোটি মানুষের হৃদয়ের এতো কাছে কেন আসলে...’ সন্ধ্যার কণ্ঠের গানের এই কথাগুলোর মতোই ছিল ৪৮ বছর আগের ১০ জানুয়ারি দিনটি। মুক্তিযুদ্ধ শেষে বিজয়ের আনন্দের রেশ। ঘরে ঘরে উল্লাস। খবর শোনা বলতে তখন শুধু রেডিও সম্বল। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কার্যক্রম শেষ হয়ে বাংলাদেশ বেতারের কার্যক্রম শুরু হয়েছে ঢাকায়। এই কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হলো : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হানাদার পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ফিরছেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ডিসি-১০ উড়োজাহাজে তিনি লন্ডন ও দিল্লী হয়ে ঢাকার মুক্ত মাটি স্পর্শ করবেন। তখন ঢাকা বিমানবন্দর ছিল তেজগাঁওয়ে। বাংলাদেশ বেতার বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অনুষ্ঠান ঢাকা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সম্প্রচার করবে। শুরু হলো দেশজুড়ে আনন্দের উল্লাস। অপেক্ষা মাহেন্দ্রক্ষণের। সেদিনের সকালে তেমন কুয়াশা ছিল না। শীতের রোদেলা দিন ছিল। যাদের থ্রি ব্যান্ড, টু ব্যান্ড ও এক ব্যান্ডের রেডিও ছিল তারা সকাল থেকেই বাংলাদেশ বেতারের কাঁটা স্থির করে রেখেছে। প্রচার কার্যক্রমে মুক্তিযুদ্ধের গান বাজানো হচ্ছে। এর ফাঁকে প্রচার হচ্ছে বিশেষ সংবাদ বুলেটিন। চলছে ধারাবর্ণনা। কখন বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী ডিসি-১০ উড়োজাহাজ ঢাকা বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করবে এই প্রতীক্ষা। যারা ধারাবর্ণনা দিচ্ছেন তাদের বেশিরভাগেরই কণ্ঠ পরিচিত। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠানে তাদের কণ্ঠ শোনা গেছে। ধারাবর্ণনার মধ্যে শোনা যাচ্ছিল বিমানবন্দর ও আশপাশে অবস্থানরত লাখো মানুষের শোরগোল। জয় বাংলা ধ্বনিতে মুখরিত ঢাকা। যার প্রতিধ্বনি সারাদেশে পড়ছে রেডিওর সামনে অবস্থান নেয়া কোটি মানুষের কণ্ঠে।
×