মন্ত্রিসভায় সংশোধিত ভোটার তালিকা আইন অনুমোদন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় আরও এক মাস বাড়ছে। এজন্য সংশোধিত ভোটার তালিকা আইন অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘ভোটার তালিকা (সংশোধন) আইন, ২০২০’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রিসভা প্রতিবছর ১ মার্চের পরিবর্তে ২ মার্চ ‘জাতীয় ভোটার দিবস’ পালনের প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে। কৃষকদের সাশ্রয়ী মূল্যে বিভিন্ন ধরনের কৃষিযন্ত্র কেনার সুযোগ করে দেয়ার পাশাপাশি সহজ শর্ত ও ন্যূনতম সুদ বা সুদবিহীন ঋণ দিতে একটি নীতিমালা করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে ‘জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা ২০১৯’ এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় সিনিয়র এক মন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থমন্ত্রী অল্প সময় অনেক সাফল্য দেখিয়েছেন। তিনি সেরা অর্থমন্ত্রী হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ফ্লোর নিয়ে বলেন, আমাদের অর্থমন্ত্রী নিঃসন্দেহে ভাল। তার সাফল্য আছে। তবে এই সাফল্যে আরও অনেকের অংশ রয়েছে। অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি এই সাফল্য সংশ্লিষ্ট সকলের। গোটা জাতিও এই সাফল্যের অংশীদার। সাবেক অর্থমন্ত্রীরও অবদান রয়েছে। এই সাফল্য শুধু আজকের নয়, বিগত ১১ বছরের অর্জন। মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন বিশ্বের কোথাও যুদ্ধ হলে সারাবিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোন কারণে সেখানে যুদ্ধ বেঁধে গেলে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। আমরাও এই প্রভাব থেকে রেহাই পাব না। তাই যুদ্ধ হোক এটা কারও কাম্য নয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী কম্পিউটার ডাটাবেজে সংরক্ষিত সব ভোটার তালিকা প্রতিবছর ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে হালনাগাদ করার বিধান রয়েছে। সংশোধিত আইনে হালনাগাদের সময় ২ জানুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়েছে। সময় বাড়ানোর কারণ তুলে ধরে খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, এই স্বল্প সময়ের মধ্যে খসড়া হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করে চূড়ান্ত করে ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করে সারাদেশের জন্য সিডি আকারে প্রস্তুত করা অনেক কষ্টসাধ্য। এ কারণে বিদ্যমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময়সীমা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে ২ মার্চকে জাতীয় ভোটার দিবস হিসেবে গ্রহণের জন্য নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনও দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এর আগের ঘোষণা অনুযায়ী গত বছর ১ মার্চ-ই প্রথম ‘জাতীয় ভোটার দিবস’ পালন করা হয়। যন্ত্র কিনতে সুদবিহীন কৃষিঋণ কৃষকদের সাশ্রয়ী মূল্যে বিভিন্ন ধরনের কৃষিযন্ত্র কেনার সুযোগ করে দেয়ার পাশাপাশি সহজ শর্ত ও ন্যূনতম সুদ বা সুদবিহীন ঋণ দিতে একটি নীতিমালা করেছে সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এই নীতিমালা কার্যকর হলে দেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের পরিধি আরও সম্প্রসারিত হবে এবং শ্রমিকের ঘাটতি পুষিয়ে নেয়া যাবে। এই নীতিমালার আওতায় কৃষকরা সাশ্রয়ী মূল্যে বিভিন্ন ধরনের কৃষিযন্ত্র কেনার সুযোগ ও সহজশর্তে ন্যূনতম সুদ বা সুদবিহীন ঋণ সুবিধা পাবেন। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা নীতিমালাটি অনুমোদন দিয়ে অনুশাসন দিয়েছে ব্যক্তি পর্যায়ের বাইরে সমবায় পদ্ধতিতেও যেন এসব যন্ত্রপাতি কেনা ও ব্যবহারের বিষয়টা নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে কৃষি যন্ত্র ব্যবহারের সময় ফসল রোপণ, কর্তন, মাড়াইয়ে শ্রমিক অনেক কম লাগবে। ফলে কৃষি শ্রমিকের অপ্রতুলতা মোকাবেলা করে কৃষি উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পাবে, ফসলের অপচয় রোধ হবে, শ্রমিক খরচ কম হওয়ার ফলে উৎপাদন খরচ কমে আসবে, কৃষকরা লাভবান হবেন এবং দেশের যুবসমাজ কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ হবে। অপরপক্ষে বাণিজ্যিক কৃষি ব্যবস্থারও প্রসার হবে।