ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুধীর বরণ মাঝি

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা ॥ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

প্রকাশিত: ১২:২৮, ৭ জানুয়ারি ২০২০

অষ্টম শ্রেণির পড়াশোনা ॥ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

শিক্ষক হাইমচর সরকারী কলেজ হাইমচর, চাঁদপুর। অষ্টম অধ্যায় প্রস্তুতি-১ সৃজনশীল অনুশীলন ১। ঘটনা-১ : গতকাল রিফাত TV-i সংবাদে জানতে পারল যে, ঢাকার একটি নামকরা শপিংমলের ১১ও১২ তলায় সংগঠিত একটি দুর্ঘটনায় বেশকিছু দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বহু মানুষ হতাহত হয়। একটি বিশেষ বাহিনী সদস্যরা এসে উক্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনা-২ : গত ২৫ এপ্রিল২০১৫ বেলা১১:৫৬ মিনিটে বাংলাদেশসহ সমগ্র নেপাল একযোগে কেঁপে উঠে। এত অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহুলোকের হতাহতের খবরও পাওয়া যায়। আমরা যদি একটু সাবধান হই তাহলে এ ক্ষতির পরিমাণ কমানো যেতে পারে। ক) বায়ুম-লের ওজোন স্তর ক্ষয়কারী গ্যাসটির নাম কি? খ) গ্রীনহাউস প্রতিক্রিয়া বলতে কী বোঝ? গ) উদ্দীপকে ঘটনা-১ এর দুর্যোগের কারণ ব্যাখ্যা কর। ঘ) ঘটনা-২ এর দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে তুমি কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পার? মতামত দাও। ক) উত্তর : বায়ুম-লের ওজোন স্তর ক্ষয়কারী গ্যাসটির নাম হাইড্রো ক্লোরো ফ্লোরো কার্বন (এইচসিএফসি) গ্যাস। খ) উত্তর : গ্রীনহাউস প্রতিক্রিয়া বলতে গ্রিনহাউস গ্যাসসমূহের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়াকে বোঝায়। কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, সিএফসি ইত্যাদি গ্রিনহাউস গ্যাস পৃথিবীর বায়ুম-লকে ঘিরে একটি আচ্ছাদন তৈরি করে। তাপ এই আচ্ছাদন ভেদ করে পৃথিবীতে আসতে পারে; কিন্তু বিকিরিত তাপ বায়ুম-লে আটকা পড়ে। এইভাবে তাপমাত্র বৃদ্ধির ফলেগ্রীনহাউস প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। গ) উত্তর : উদ্দীপকে ঘটনা-১ এর দুর্যোগটি হলো অগ্নিকা-। অগ্নিকা- যেমন প্রাকৃতিক কারণে ঘটে আবার অসাবধানতা ও দুর্ঘটনাজনিত কারণেও ঘটতে পারে। প্রচ- দাবদাহের কারণে কোন কোন দেশের বনাঞ্চালে অগ্নিকা- ঘটতে দেখা যায়। একে দাবানল বলে। আমাদের দেশে সাধারণত দাবানলের ঘটে না। এখানে অসাবধানতা ও দুর্ঘটনাই অগ্নিকা-ের মূল কারণ। অসাবধানতা ও দুর্ঘটনাজনিত অগ্নিকা- সাধারণত শিল্পকারখানা, তেল শোধনাগার, গার্মেন্টস শিল্প, পাটকল, পাটের গুদাম, রাসায়নিক গুদাম বা কারখানা এমনকি বসতবাড়ি, দোকানপাট, শপিংমল, অফিস ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ঘটতে দেখা যায়। এছাড়াও গ্রাম ও শহরাঞ্চালে জলন্ত চুলা, কুপি, মশার কয়েল, সিগারেটের আগুন, হারিকেন প্রভৃতি থেকেও অসাবধানতাবশত অগ্নিকা-ের সূত্রপাত ঘটে। উদ্দীপকে ঘটনা-উদ্দীপকে ঘটনা-১ এর দুর্যোগ অর্থাৎ অগ্নিকা-ের কারণও ছিল মানুষের অসাবধানতা। ঘ) উত্তর : ঘটনা-২ এর দুর্যোগটি হলো- ভূমিকম্প। পৃথিবীতে যত রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে তার মধ্যে ভূমিকম্পই সবচেয়ে অল্প সময়ে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ ঘটায়। ভূমিকম্পের ব্যাপারে আগাম কোন সতর্ক সঙ্কেত দেয়া সম্ভব হয় না। ভূমিকম্পের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে তা হলো- বাড়তি দরজা থাকা প্রয়োজন। প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রী, হেলমেট, টর্চলাইট প্রভৃতি মজুদ রাখতে হবে। ভূমিকম্পের সময় আশ্রয় নেয়ার জন্য একটি মজবুত টেবিল রাখতে হবে। ভারি আসবাবপত্র মেঝের উপরে রাখতে হবে। ব্যবহারের পর বৈদ্যুতিক বাতি ও গ্যাসের চুলা বন্ধ রাখতে। সেই সঙ্গে ভূমিকম্প শুরু হলে শক্ত টেবিল বা শক্ত কাঠের আসবাবপত্রের নিচে অবস্থান নিতে হবে। দ্রুততার সঙ্গে বৈদ্যুতিক সুইচ ও গ্যাসের সংযোগ বন্ধ করে দিতে হবে। বাড়ির আশপাশে খোলা জায়গা থাকলে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে খোলা জায়গায় যেতে হবে। ভূমিকম্পের সময় লিফট ব্যবহার করা উচিত না। সেই সঙ্গে ভূমিকম্পের পরে আহত লোকজনকে হাসপাতালে নিতে প্রয়োজনীয় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দুর্গত মানুষের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, খাবার ও পানির ব্যবস্থা করতে হবে। তবে ভূমিকম্পের সময় আত্মরক্ষা এবং ভূমিকম্পের পর উদ্ধার কাজ ও ত্রাণ কাজ সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দিতে হবে। তাই বলা যায়, ঘটনা-২ এর দুর্যোগ অর্থাৎ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে।
×