ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হতে আগ্রহী এ ক্যারিবিয়ান

গিবসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে বিসিবির

প্রকাশিত: ১২:১৫, ৭ জানুয়ারি ২০২০

গিবসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে বিসিবির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছর জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্ট বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেস বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পান। কিন্তু বছরের শেষে (ডিসেম্বর) ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার (সিএসএ) অনুরোধে ল্যাঙ্গাভেল্টকে ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এরপর থেকেই নতুন পেস বোলিং কোচের সন্ধানে আছে বিসিবি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কয়েকজন সাবেক পেসার কাজ করছেন চলমান বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) দলগুলোর সঙ্গে। এর মধ্যে বিসিবির নজরে আছেন সিলেট থান্ডারের পেস বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করা সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ন্যান্তি হেওয়ার্ড এবং কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের প্রধান কোচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক পেসার ওটিস গিবসন। এমনটাই জানা গেছে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে। তবে সোমবার গিবসন নিজেই দাবি করলেন বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিসিবির সঙ্গে আলোচনা চলছে তার। কয়েকদিন আগেই তিনি ল্যাঙ্গাভেল্টের জায়গায় কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। আপাতত কোন দেশের সঙ্গে কোচিংয়ে জড়িত নেই গিবসন। গত বছর জুলাইয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং কোচ হিসেবে রাখেনি সিএসএ। ২০১৭ সালের আগস্টে প্রধান কোচ হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার। রাসেল ডোমিঙ্গো তখন সবেমাত্র দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। সে বছরই অক্টোবরে গিবসনকে দায়িত্ব দেয়া হয় প্রোটিয়াদের পেস বোলিং কোচ হিসেবে। কিন্তু ২০১৯ বিশ^কাপের পর পুরো কোচিং স্টাফেই পরিবর্তন আনে। তখন থেকেই আর কোথাও কোন দায়িত্বে নেই গিবসন। ইংল্যান্ডে নিজের পেশাদার কোচ হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন গিবসন। ২ বছর ইংল্যান্ডের জাতীয় একাডেমিতে পেস বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য পিটার মুরসের অধীনে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব পান গিবসন। সেই সফরে বোলারদের দারুণ পারফর্মেন্সে সন্তুষ্ট হয়ে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তাকে পূর্ণ মেয়াদের জন্য এ্যালান ডোনাল্ডের পরিবর্তে বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ করে গিবসনকে। ২০১০ পর্যন্ত ছিলেন তিনি ইংল্যান্ডের দায়িত্বে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ হয়ে যান। ২০১৪ পর্যন্ত সেখানেই কাজ করার পর ২০১৫ সালে পুনরায় ইংল্যান্ডের বোলিং কোচ হয়েছিলেন। ছিলেন ২০১৭ সালের প্রথম পর্যন্ত। সবমিলিয়ে বিশ্বের বড় বড় তিনটি জাতীয় দলের বোলিং কোচ ও প্রধান কোচ হিসেবে সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা গিবসনের। তাকে এবার বঙ্গবন্ধু বিপিএলের দল কুমিল্লা প্রধান কোচ হিসেবে এনেছে। বিপিএল শুরুর পরই জানা যায় ল্যাঙ্গাভেল্ট আর বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ হিসেবে থাকছেন না। সিএসএয়ের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দিয়েছে বিসিবি। সে সময় গিবসন তার আগ্রহের কথা জানান বাংলাদেশ দলের হয়ে কাজ করার। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশের পেসারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ায় মনোযোগ দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই সাবেক ক্যারিবীয় কোচ। কুমিল্লায় বাংলাদেশী পেসারদের মধ্যে আছেন আল-আমিন হোসেন, আবু হায়দার রনি- দু’জনেরই জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এছাড়া উদীয়মান পেসার সুমন খানও এখন শিষ্য গিবসনের। এ বিষয়ে গিবসন বলেন, ‘কিছু ক্রিকেটারকে আমি এর মধ্যেই চিনতে পেরেছি। আল-আমিন আছে আমাদের দলে, সে জাতীয় দলের পেসার। একটা সম্পর্ক তাই গড়ে উঠেছে।’ গিবসন নিজেও ক্রিকেটার ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি টেস্ট এবং ১৫ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি। অভিজ্ঞতা থাকার ফলে ক্রিকেটারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে সমস্যা হয় না বলে মনে করেন তিনি। গিবসন বলেন, ‘আমি নিজেও ক্রিকেটার ছিলাম, তাই ক্রিকেটারদের সঙ্গে সম্পর্ক কিভাবে গড়ে তুলতে হয়, জানা আছে আমার। এখানে এসে তাই তরুণ পেসারদের, এমনকি অভিজ্ঞদেরও কিছু শেখাতে আমার সমস্যা নেই।’ বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ হিসেবে এখন পর্যন্ত গিবসনই একমাত্র প্রার্থী। সেক্ষেত্রে বলাই যায়, জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ হওয়ার দৌড়ে অনেকখানিই এগিয়ে তিনি। আর বিসিবিও যেহেতু পেস বোলিং কোচের সন্ধানে তাই সুযোগটা নিতে চাইছেন গিবসন নিজেও। তিনি বলেন, ‘আলোচনা চলছে, অবশ্যই ইতিবাচক আলোচনা হচ্ছে। এটা আমি অস্বীকার করব না। তবে চূড়ান্ত কিছু হওয়া এখনও অনেক অনেক দূর।’ আলোচনা ইতিবাচক হলে বাংলাদেশ জাতীয় দলের দায়িত্ব নেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েই আছেন গিবসন। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই। আমি ক্রিকেট ভালবাসি ও বোলারদের কোচিং করাতে পছন্দ করি। যদি এখানে এসে কাজ করা ও তরুণ ফাস্ট বোলারদের শেখানোর সুযোগ হয়, আমি অবশ্যই সুযোগটি নিতে চাইব।’
×