ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বৈতে জয় দিয়ে শুরু সেরেনা-ওজনিয়াকির

প্রকাশিত: ১২:১৫, ৭ জানুয়ারি ২০২০

দ্বৈতে জয় দিয়ে শুরু সেরেনা-ওজনিয়াকির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অকল্যান্ড ক্ল্যাসিক দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু করলেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক দুই শীর্ষ তারকা সেরেনা উইলিয়ামস এবং ক্যারোলিন ওজনিয়াকি। জয় দিয়েই নতুন বছরের অভিযানে নেমেছেন তারা। অকল্যান্ড ক্ল্যাসিকের ডাবলসে সোমবার জুটি বেঁধে সেরেনা-ওজনিয়াকি ৬-২ এবং ৬-৪ সেটে পরাজিত করেছেন জাপানের নাও হিবিনো এবং মিকোতো নিনোমিয়াকে। দুর্দান্ত জয়ে নতুন বছর শুরু করতে পেরে দারুণ খুশি তারা। সেরেনা উইলিয়ামসের সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব ক্যারোলিন ওজনিয়াকির। বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ স্থানও দখল করেছেন এই দুইজন। সোমবার নতুন করে আরেকটি পরিচয় উপহার দিলেন তারা। এদিনই যে প্রথমবারের মতো একসঙ্গে জুটি বেঁধে কোর্ট কাঁপিয়েছেন ওজনিয়াকি-সেরেনা! সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ডাবলসে বেশির ভাগ সময়ই বড় বোন ভেনাসের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন আমেরিকান তারকা। এমনকি ২০১৫ সালের পর আর কারও সঙ্গে জুটি বাঁধতে দেখা যায়নি সেরেনাকে। এর আগে ভেনাস ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে জুটি বেঁধে সেরেনা উইলিয়ামস কোর্টে নেমেছিলেন ১৮ বছর আগে! তাই ক্যারোলিন ওজনিয়াকির সঙ্গে জুটি বাঁধাটাও তার নতুন ইতিহাস। এদিকে, ওজনিয়াকি ডাবলসে খুব কম ম্যাচ খেলেন। সর্বশেষ দ্বৈতে কোন টুর্নামেন্ট খেলেছেন তিন বছর আগে! তাই দুই জনের জন্যই এটা দারুণ এক অভিজ্ঞতা। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সাবেক চ্যাম্পিয়ন ক্যারোলিন ওজনিয়াকি তাই দারুণ রোমাঞ্চিত। ম্যাচের শেষে তিনি বলেন, ‘দারুণ মজার একটা ম্যাচ খেললাম। সত্যিই আমি অনেক বেশি উপভোগ করেছি। সেরেনার সঙ্গে জুটি বেঁধে খেলাটা খুবই বিস্ময়কর!’ সেরেনা অবশ্য ওজনিয়াকির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তিনি বলেন, ‘মোটেও মনে হয়নি সে দীর্ঘদিন ধরে দ্বৈতে খেলেনি। কেননা, কোর্টে পুরোটা সময়ই অবিশ্বাস্য পারফর্ম করেছে সে।’ বর্তমান বিশ্ব টেনিস তারকাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৯ গ্র্যান্ডস্লামজয়ী তারকার নাম সেরেনা। এই ৩৮ বছরের তারকা সর্বশেষ ২০১৭ সালে বড় কোন শিরোপা জেতেন। রেকর্ড ২৩টি বড় শিরোপা জেতা সেরেনা সেবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হন। এরপরে প্রায় ৩ বছর শিরোপা জেতা হয়নি তার। এবার তার সামনে শিরোপা খরা ঘুচানোর চ্যালেঞ্জ। ২০১৭ সালে অকল্যান্ড ওপেনে শীর্ষ বাছাই হিসেবে সুযোগ পান সেরেনা। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে এই আমেরিকান তারকা স্বদেশী ম্যাডিসন ব্রেঞ্জেলের কাছে হেরে ছিটকে পড়েন। তবে তখনকার অবস্থা ও এখনকার সময় এক নয় জানিয়ে সেরেনা বলেন, ‘সেবার অকল্যান্ডে অনেক বাতাস ছিল। আর আমি বারবার রেগে যাচ্ছিলাম। সবচেয়ে বড় কথা তখন আমার স্বামীর উপর আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম না। তাকে আমার বিরক্ত লাগত। তার সঙ্গে চলতে চাইতাম না। আসলে তখন আমি যে গর্ভাবস্থায় ছিলাম সেটা আমি জানতাম না।’ সেরেনা মনে করেন, তার গর্ভাবস্থার প্রভাব ওই সময়ে কোর্টেও পড়েছে। অকল্যান্ডে কোর্টে নামার আগে সেরেনা নিজের বিয়ের ঘোষণা দেন। আর অকল্যান্ড ওপেনের সময় এই আমেরিকান টেনিস তারকা ছয় সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলার সময় নিজের গর্ভাবস্থার কথা মিডিয়াতে জানান সেরেনা। নিজের সে সময় নিয়ে এই টেনিস তারকার মন্তব্য, ‘এই অবস্থায় এসে সেসব মনে পড়লে নিজের কাছে অবাস্তব আর হাস্যকর মনে হয়। যদিও গর্ভাবস্থার এই অবস্থা নিয়ে আমরা মজা নেই, কিন্তু একজন নারীর জন্য বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। আর আমি প্রথমবারের মতো এমন অনুভূতিতে ছিলাম। আমার মনে হয়, যে কোন নারীর জন্য গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস খুব গুরুত্বপূর্ণ আর কষ্টের। আর নিজের অজানা থাকলে সেটা আরও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়।’ ২০১৭ সালে সেরেনার একমাত্র কন্যা পৃথিবীতে আসে। তার প্রায় একবছর পর কোর্টে নামেন আমেরিকান টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। নিজের প্রিয় টেনিস কোর্টে ফিরে আসা নিয়ে উইলিয়ামস বলেন, ‘আমি জানতাম, আমি আবার ফিরে আসব। অনেক সময় আমার মনে হয়েছে, এটাই বোধ হয় শেষ। কিন্তু এখন আমি নিজেকে নতুনভাবে ফিরিয়েছি। আর হ্যাঁ এবারের অকল্যান্ড ওপেনে কিন্তু আমি গর্ভবতী নই।’
×