ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটের একদিন আগে মহড়া

ইভিএম ভোটে সন্দেহ দূর করতে ব্যাপক প্রচারের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ১১:১৪, ৭ জানুয়ারি ২০২০

ইভিএম ভোটে সন্দেহ দূর করতে ব্যাপক প্রচারের উদ্যোগ

শাহীন রহমান ॥ ইভিএম নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সন্দেহ দূর করতে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। বিশেষ করে এটি ব্যবহার করে যে সহজেই ভোট প্রদান করা যায়, কারচুপি বা জালিয়াতির কোন সুযোগ নেই, প্রচারে সেই তুলে ধরা হবে। এছাড়াও ইভিএম মেশিনে কিভাবে সহজে ভোট প্রদান করতে হয় তা জানানোর জন্য ভোটার ও কর্মকর্তার প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া ভোট গ্রহণের আগে ইভিএমে মহড়া ভোটের উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনে দুই সিটির সব কেন্দ্রে এবং বুথে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। কিন্তু ইসির ইভিএম তৎপরতা শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে বিএনপি। তারা বলছে সরকারী দলের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে ইভিএমের মাধ্যমে নীলনক্সার ভোটের আয়োজন করছে ইসি। যদিও ইসি বলছে ইভিএমে ভোট কারচুপির কোন সুযোগ নেই। বরং এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সহজেই ভোট প্রদান করা সম্ভব। ইন্টার সংযোগ না থাকায় এটি হ্যাকের সুযোগ নেই। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ব্যালট পেপারের মতো কেউ ইচ্ছা করলেও ইভিএমে ভোট জালিয়াতিও করতে পারবে না। ভোটার যদি ভোট দিতে কেন্দ্রে না যান, তাহলেও তার ভোট অন্য কেউ দিতে পারবে না। এর মধ্যে এমন ধরনের সফটওয়্যার রয়েছে যার ভোট কেবল সেই দিতে পারবে। একবার ভোট হয়ে গেলে দ্বিতীয়বার ভোট দেয়ার কোন সুযোগ থাকছে না। ফিঙ্গার প্রিন্ট অথবা এনআইডি অথবা ভোটার নম্বরের মাধ্যমে যাচাইয়ে ভোটার শনাক্ত হওয়ার পরই কেবল একজন ভোট দিতে পারবেন। ভোটার এই শনাক্তকরণ ডিসপ্লেতে পোলিং অফিসার বা এজেন্টরা দেখতে পাবে। মোট কথা একজন ভোটার শনাক্ত হওয়ার পরই কেবল ইভিএমে ভোট দিতে পারবেন। আসন্ন সিটি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য ইসির পক্ষ থেকে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে বিএনপি ইভিএমে আপত্তি করলে ভোটের মাঠে এবার তারা সক্রিয় রয়েছে। আওয়ামী লীগ বিএনপিসহ মোট সাতটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আগামী শুক্রবার থেকে তারা প্রচারে নামবেন। তবে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি ইসি আগ থেকেই নাকচ করে দিয়েছে। তবে তারা জানিয়েছে সিটিতে ইভিএমে ভোট হওয়ার কারণে এবার প্রতি কেন্দ্রে দুইজন করে টেকনিক্যাল পার্সন হিসেবে আর্মি সদস্য মোতায়েন থাকবে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য ৩৫ হাজার ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রথমবারের মতো পুরো ঢাকা মহানগরে একসঙ্গে ইভিএমে ভোট করতে তারা পুরোপুরি প্রস্তুত। দুই সিটিতে দুই হাজার চার শ’র বেশি কেন্দ্র রয়েছে। আর ১৪ হাজার ৬শ’র মতো ভোটকক্ষ থাকছে। তাই সব মিলিয়ে আমরা রিজার্ভসহ ৩০ হাজার ইভিএম রাখার পরিকল্পনা করেছি। প্রতি কেন্দ্রে ব্যাকআপ হিসেবে একটি করে ইভিএম রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। এদিকে আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবস্থাপনায় সশস্ত্র বাহিনীর পাঁচ হাজার ২৮০ জন সদস্য থাকবেন বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আর ইভিএমে কোন সমম্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসি। ইসি কর্মকর্তারা জানান, পাসওয়ার্ড প্রোটেকটেড হওয়ায় অনুমোদিত কর্মকর্তা ব্যতীত অন্য কারও পক্ষে এটি অপারেট করার সুযোগ থাকছে না। ইভিএম ছিনতাই করে নিয়ে অবৈধ ভোট দেয়াও সম্ভব হবে না। যেটা ব্যালট বাক্সের ক্ষেত্রে সম্ভব। ভোট দানের ক্ষেত্রে বায়োম্যাট্রিক ভেরিফিকেশন ও ব্যক্তির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক বিধায় কেন্দ্র দখল করেও ভোট দেয়া সম্ভব হবে না।
×