ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৃষ্টি শেষে শুরু মৃদু শৈত্যপ্রবাহ

প্রকাশিত: ১১:০৯, ৭ জানুয়ারি ২০২০

বৃষ্টি শেষে শুরু মৃদু শৈত্যপ্রবাহ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃষ্টি শেষে দেশের বিভিন্ন জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। বেড়ে গেছে শীতের প্রকোপ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই অবস্থা আরও দুদিন থাকবে। তারপর আবারও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে ১০ তারিখের পর দেশে শীতের প্রকোপ আরও বেড়ে যাবে। এদিকে রোদের উত্তাপ কম থাকায় প্রচ- শীতে উত্তরের জনজীবন আবারও ব্যাহত হচ্ছে। হাড় কাঁপানো শীতে ঠক ঠক করে কাঁপছে সাধারণ মানুষ। আবহাওয়াবিদ আরফির হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, আগামী দু’দিনে দেশের তাপমাত্রা খুববেশি কমবে না। তবে আগামীকাল বুধবার ও বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে আবারও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর ১০ জানুয়ারি পর থেকে তাপমাত্রা কমে আসবে। ফলে শীতের তীব্রতা ১০ জানুয়ারি পর বাড়বে। তিনি জানান, উত্তরের বেশ কিছু জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত আছে। এ কারণে সূর্যের আলোর তাপ অনুভূত হচ্ছে কম। তীব্র শীতের অনুভূতি হচ্ছে। তবে তিনি জানান আগামী দু’দিন এই অবস্থা চলতে পারে। এদিকে ঘনকুয়াশার কারণে দেশে নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। শিমুলিয়া কাঁঠালবাড়ি ফেরি চলাচল সোমবার ৭ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর সকাল ৮টা থেকে পুনরায় এই রুটে ফেরি পারাপার শুরু হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পশ্চিমাংশে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আজ আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। তারা জানায়, রাজশাহী, পাবনা, কুড়িগ্রাম, যশোর চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটা আজ অব্যাহত থাকবে এবং বিস্তৃতি লাভ করবে আরও বেশি। তারা আরও জানায়, সোমবার দেশের সর্বনিম্নতাপমাত্রা রাজশাহীতে ৮.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ ॥ ঘনকুয়াশার কারণে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌ-রুটের প্রায় ৭ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকার পর অবশেষে সোমবার সকাল সারে ৮টায় পুনরায় ফেরি সার্ভিস সচল হয়েছে। টানা ৯ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় ছিল প্রায় পাঁচশতাধিক বিভিন্ন প্রকার যানবাহন। এসবের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের সংখ্যাই ছিল বেশি। এ সময় কনকনে শীতে দীর্ঘসময় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হন। বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাট সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গত রবিবার রাত ১টা ৩০ মিনিট থেকে এ নৌ-রুটের পদ্মার অববাহিকায় ঘনকুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পরে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পরে নৌপথ দৃষ্টিহীন হয়ে পরে বয়াবাতি আর নৌপথে মার্কিং। যার ফলে নিরাপত্তার স্বার্থে এ নৌ-রুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। নওগাঁ ॥ পৌষের হাল্কা শৈত্যপ্রবাহে কনকনে শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। গ্রাম-বাংলার প্রবাদ আছে ‘মাঘের শীতে বাঘ কাঁদে’। কিন্তু মাঘ আসার আগেই শীতের তীব্রতা এতবেশি যে, বাঘ এখনই কাঁদতে হুশ পাচ্ছে না। মানুষের অবস্থাও জবুথবু। বর্তমানে শীতে ছিন্নমূল অসহায় মানুষের অবস্থা চরম শোচনীয়। জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ খরকুটো জ্বালিয়ে আগুনে শরীর তাপিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। কোন কোন এলাকায় সূর্যের দেখা মিলছে না গত কয়েকদিন ধরেই। কোথাও কোথাও দিনের বেলা সূর্য দেখা দিলেও তা খুব স্বল্প সময়ের জন্য এবং তাপবিহীন। কুয়াশার পাশাপাশি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ শীতের এ দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। গাইবান্ধা ॥ তৃতীয় দফায় আবারও হিমেল হাওয়াসহ ঘন ঘন কুয়াশা পড়া অব্যাহত থাকায় গাইবান্ধা জেলার জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। সারাদিন কোথাও সূর্যের মুখ দেখা মেলেনি। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও ঘনকুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে গোটা জেলা। সেইসঙ্গে হিমেল হাওয়া বইতে থাকে। হঠাৎ করে শীত শুরু হওয়ায় এবং রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ায় এ জেলার মানুষরা চরম বিপাকে পড়ে। হঠাৎ শুরু হওয়া এই শীতে জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ছিন্নমূলসহ চরাঞ্চলের মানুষরা বেশি দুর্ভোগের কবলে পড়ে। শীতে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা এতে কষ্ট পাচ্ছে বেশি। শহরের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে এখন মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এই সুযোগে গাউন মার্কেট ও গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ব্যবসায়ীরা কাপড়ের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে। ফলে অর্থাভাবে দরিদ্র মানুষদের পক্ষে শীতের কাপড় সংগ্রহ করা খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
×