ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ষণের আলামত মিলেছে, মামলা হয়েছে

ছাত্রী ধর্ষণ ॥ বিক্ষোভ সমাবেশে দিনভর উত্তাল ঢাবি ক্যাম্পাস

প্রকাশিত: ১১:০৫, ৭ জানুয়ারি ২০২০

ছাত্রী ধর্ষণ ॥ বিক্ষোভ সমাবেশে দিনভর উত্তাল ঢাবি ক্যাম্পাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে ডাক্তারি পরীক্ষায়। এর প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। অবিলম্বে অপরাধীর গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ ছাড়াও বিক্ষোভ করেছে ছাত্রলীগ। সকাল থেকেই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। দিনভার প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাসে নতুন কর্মসূচীর ডাক দেয়া হয়েছে। একই দাবিতে ঘটনাস্থল কুর্মিটোলায়ও সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেছে ঢাবির শিক্ষার্থীরা। এদিকে কুর্মিটোলার ঝোপঝাড় থেকে ওই ছাত্রীর বই, ঘড়ি, চাবির রিংসহ ব্যবহৃত জিনিসপত্র উদ্ধার হয়েছে। ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেছেন। ধর্ষণের আলামত মিলেছে নিপীড়নের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পেয়েছে। সোমবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগে তার পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, ওই শিক্ষার্থী স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা মানসিক ট্রমায় আছেন। তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য সাত সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এদিকে কুর্মিটোলা এলাকা ঝোপঝাড় থেকে ওই ছাত্রীর বই, ঘড়ি, চাবির রিংসহ ব্যবহৃত জিনিস উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সেখানে থেকে পুরুষের এক জোড়া স্যান্ডেলও পাওয়া গেছে। এরই সূত্র ধরে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, মেয়েটির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করছে। আমাদের কয়েকটি টিম এ নিয়ে কাজ করছে। দোষীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সোমবার দুপুরে নিপীড়নের শিকার ওই শিক্ষার্থীর ঢামেক ফরেনসিক বিভাগে শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন শেষে ডাঃ সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, মেয়েটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পেয়েছি। অপরাধী একজন না একাধিক। তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। তার শারীরিক পরীক্ষাকারী চিকিৎসক ডাঃ সোহেল মাহমুদ জানান, মেয়েটির গলা, হাত, গালসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন আছে। কিছু আঘাত হয়েছে ধর্ষণকারীর দ্বারা। আর কিছু হয়েছে ঘটনাস্থলের কারণে। জঙ্গলের কারণে তার পায়ে কিছু আঘাত হয়েছে। তার গলায় আমরা ধর্ষণকারীর হাতের চিহ্ন পেয়েছি। বোঝা গেছে, যে ধর্ষণকারী তার গলা টিপে ধরেছিল। হাতেও একই ধরনের চিহ্ন আছে যেটা থেকে অনুমিত হচ্ছে যে, তাকে জোর করে আঘাত করা হয়েছে। লাথি মারা হয়েছে এরকম আঘাতের চিহ্নও পেয়েছি শরীরে। তবে প্রতিবেদন কবে দেয়া হবে সে এমন প্রশ্নের জবাবে কিছু বলেননি ডাঃ সোহেল মাহমুদ। তিনি জানান, শারীরিকভাবে ওই তরুণী শঙ্কামুক্ত। যেহেতু তার শরীরে বড় ধরনের কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। ফলে দু-একদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবে। এদিকে দ্বিতীয় বর্ষের ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডাঃ সালমা রউফকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে বোর্ড ইতোমধ্যে তাদের কাজও শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ঢামেক হাসপাতালের ওসিসির বাইরের কেউ এসে যেন ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলতে বা দেখা করতে না পারে। সেজন্য সেখানে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ওই শিক্ষার্থী স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা মানসিক ট্রমায় আছেন। তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তার সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দিতে চেষ্টা চলছে। ঢামেক পরিচালক জানান, মেয়েটির আমরাও কিছু সমস্যা চিহ্নিত করেছি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ অবস্থায় তার সঙ্গে দেখা করা, কথা বলা তার জন্য অস্বস্তিকর। কেউ যেন আমরা তার কাছে না যাই। ধর্ষণের আলামতের বিষয়ে তিনি বলেন, ধর্ষণের বিষয়টি ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগ দেখছে। পাশাপাশি তাকে ঢামেকের নাক-কান-গলা বিভাগ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তার যেহেতু শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। সেজন্য রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগসহ আরও কিছু বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে সাত সদস্যের বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ড ইতোমধ্যে তাদের কাজও শুরু করেছে। অন্যদিকে এদিন বিকেলে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনে আয়োজিত কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ঘটনাটি শুনেছি। তার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করছে। আমাদের কয়েকটি টিম এ নিয়ে কাজ করছে। আমরা এখনও সুনিশ্চিত নই। কী কারণে, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। এ সময় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসহ পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ঝোপঝাড় থেকে ওই ছাত্রীর বই, ঘড়ি, চাবির রিংসহ ব্যবহৃত জিনিসপত্র উদ্ধার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাব, সিআইডি ক্রাইম সিন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে যাওয়ার পথে ঝোপের মধ্যে পড়েছিল ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বই, ঘড়ি, চাবির রিং, ইনহেলারসহ কিছু সামগ্রী। এমনকি সেখানে পুরুষের এক জোড়া স্যান্ডেলও পাওয়া যায়। সোমবার সকালে ওই ঝোপের মধ্য থেকে এসব আলামত উদ্ধার করে র‌্যাব-ডিবি পুলিশ। র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ান বিন কাশেম জানান, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় র‌্যাব ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। আপাতত তদন্তের স্বার্থে বেশিকিছু বলছি না। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঝোপের মধ্য থেকে ওই ছাত্রীর বিশ্ববিদ্যালয়ের বই, বিভাগের প্রসপেক্টাস, চাবির রিং, একটি কালো গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট, স্যানিটারি ন্যাপকিন, একজোড়া স্যান্ডেল (পুরুষের), ঘড়ি, ইনহেলার ও স্পাইরাল মেশিন উদ্ধার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ডিবি পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন, আলামত সংগ্রহ ও পর্যবেক্ষণ করেছে। ধর্ষণের ঘটনায় মামলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার সকালে এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় বাদী হয়ে মামলা করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহান হক বলেন, মামলার এজাহারে মেয়েটিকে একজন ধরে নিয়ে ধর্ষণ করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতার চেষ্টা চলছে। এদিকে পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদিপ্ত কুমার চক্রবর্তী জানান, রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় সড়কের পাশের ঝোপের মধ্যে ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতকে শনাক্ত ও তাকে ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ধর্ষককে শনাক্ত করতে পুলিশ মাঠে নেমেছে বলেও জানান তিনি। ডিসি সুদিপ্ত কুমার সাংবাদিকদের জানান, আমরা ঘটনার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। অপরাধীকে খুঁজে বের করার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। আলামত হিসেবে ভিকটিমের বস্ত্র পাওয়া গেছে, একটি ঘড়ি, দুটি ইনহেলার, একজোড়া জুতা, বইসহ আরও কিছু আলামত সিআইডি সংগ্রহ করেছে। তারা পরীক্ষা করার পর বিস্তারিত বলা যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি জানান, ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে অভিযুক্ত একজন। এই এলাকাটি অনেক ব্যস্ত। এখানে সাধারণত সবাই রানিংয়ে থাকেন। জায়গাটা নির্জন হওয়ায় এ ঘটনা ঘটাতে সাহস পেয়েছে অপরাধী। এই এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া আছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেছেন বলেও জানান এই উপ-কমিশনার। অন্যদিকে সিআইডি ক্রাইম সিনের পুলিশ পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম আলামত সংগ্রহের পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঝোপের মধ্যে ইউনিভার্সিটির বই, চাবির রিংসহ চাবি, ইনহেলার, গ্যাস লাইটার, কালো প্যান্ট, টুপি, জুতা, ঘড়িসহ কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো ল্যাবে পাঠানো হবে। চার দফা ধর্ষণের শিকার সোমবার সকাল থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওসিসির সামনের গেটে নিরাপত্তাকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন ভিড় সামলাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পুলিশের বিভিন্ন টিম, একের পর এক দল বেঁধে আইনজীবীরা আসছেন। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে আসছেন। সেখানে অপেক্ষারত বাইরে থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফ করছেন দফায় দফায়। কখনও দল বেঁধে আসছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ওসিসির ভেতর থেকে বের হয়ে ওই শিক্ষার্থীর শিক্ষিকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের হাউস টিউটর জানান, মেয়েটাকে চারদফায় ধর্ষণ করা হয়েছে। কি বলব, কি করব বুঝতে পারছি না। অসহায় লাগছে। ওর বাবা-মা আছেন এখন ভেতরে। সেখানে অপেক্ষারত এক আইনজীবীর জানান, মেয়েটি আমার ভাগ্নি। ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। শুনেছি ও ঘুমাচ্ছে। লাইফ থ্রেট নেই। কিন্তু ট্রমাটাইজড। ওসিসিতে থাকা ওই মেয়ে এক সহপাঠীর বড়বোন জানান, ওর শরীরে অনেক আঘাত, প্রচণ্ড ব্যথাও আছে। গলাসহ সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। ওকে অনেক মারপিট করা হয়েছে। মানসিকভাবে শক্ত রাখার চেষ্টা করছি। ওসিসির থেকে বেরিয়ে আসা একজন সিনিয়র নার্সও জানালেন, মেয়েটার শরীরে অনেক জখমের চিহ্ন। সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ভেতরে ডাক্তার-কাউন্সিলর সবাই আছেন। তাকে কোন ধরনের প্রশ্ন করছি না আমরা। নিজে থেকে কিছু বললে শুনছি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, রবিবার বিকেলে কুর্মিটোলায় ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক্ষণিকা’ নামের দোতলা বাসে (ঢাবি-টঙ্গী রুট) শেওড়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামার পরপরই তিনি আক্রান্ত হন। রাত পৌনে ১টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়। ওই শিক্ষার্থীর বরাত দিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল ফাঁড়ি পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, রবিবার বিকেলে ক্লাস শেষে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে কুর্মিটোলায় নামেন ওই তরুণী। উদ্দেশ্য ছিল রাতে বান্ধবীর বাসায় থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাস থেকে নামার পরপরই অজ্ঞাত পরিচয় কোন লোক তার মুখ চেপে ধরে। পরে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তিনি চেতনা হারান। রাত ১০টার দিকে চেতনা ফিরলে ওই শিক্ষার্থী একটি অটোরিক্সা নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যান। পরে তাকে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। এরপর সহপাঠীরা তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে নিয়ে যান। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যায়। এ খবর জানাজানি হয়ে গেলে রাতেই হাসপাতালে যান ঢাবির শিক্ষকরাও অনেকে। সেখানে জড়ো হতে থাকেন ছাত্রলীগ ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মী। এরপর সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে শুরু হয় প্রতিবাদ বিক্ষোভ। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও সোচ্চার হয়েছেন বিভিন্ন কর্মসূচীতে। শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে স্লোগান দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে ‘স্বাধীন দেশে আর কত? ‘বিচার চাইবো একসাথে ধর্ষকের বিরুদ্ধে, ধর্ষণ করতে বর্জন ঢাবি করো গর্জন’। রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন করে ছাত্রলীগ। সেখানে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এ ধর্ষণের প্রতিবাদ জানিয়ে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন কর্মসূচীর ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার (আজ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেলা ১১টায় মানববন্ধন হবে। এছাড়া বুধবার ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি ইউনিটে মানববন্ধনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ সময় ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- করার আইন শীঘ্রই পাস করার অনুরোধ করেন ছাত্রলীগ নেতারা। মানববন্ধনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাবি শাখার শীর্ষ নেতাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ছিলেন ডাকসুতে ছাত্রলীগের প্রতিনিধিত্ব করা নেতারাও। অনতিবিলম্বে ধর্ষকের বিচার দাবি করেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এখন থেকে প্রত্যেকের নিজের দিকে খেয়াল রেখে প্রতিবেশীর দিকে সবসময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। কোন ধরনের সন্দেহমূলক আচরণ দেখা গেলে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ করতে হবে। ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, মানুষরূপী এই জানোয়ারদের গ্রেফতার করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এই বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা পিছু হটবো না। আমরা অনিরাপত্তা বোধ করছি। প্রশাসনকে আমরা এ ব্যাপারে জানিয়েছি যাতে করে শাস্তি প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন। ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, এই আন্দোলন শুধু ঢাবির শিক্ষার্থী বলে নয়, দেশের যে কোন প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কেউ যেন এমন ঘটনার শিকার না হন সেই লক্ষ্যেই এই আন্দোলন। ঢাবি প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়ে সাদ্দাম বলেন, সেক্সচুয়াল হেরেজমেন্ট কোড করুন এবং এ ধরনের ঘটনার বিচার দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এদিকে বিভিন্ন সংগঠনের মতো বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ও কয়েকটি বাম সংগঠন শাহবাগ মোড় অবরোধ করে। সেখানে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণকারীর দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন নূর। তিনি বলেছেন, শুধু আইওয়াশমূলক কথাবার্তা না বলে দ্রুত ধর্ষণকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা কোনভাবেই এ ঘটনা ছেড়ে দেবে না। সম্প্রতি ডাকসু ভবনে তার ওপর হামলার ঘটনায় সরকারের তরফ থেকে বিচারের আশ্বাসের পর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের তিনজনকে গ্রেফতার করা হলেও জড়িত অন্যরা এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযোগ করে তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য বলেন, সুতরাং প্রত্যেকটি ঘটনা ঘটলেই আইওয়াশমূলক বক্তব্য না দিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিন। অন্যথায় ছাত্র জনতা সবাই এ ধরনের ঘটনাগুলো প্রতিরোধে এগিয়ে আসবে। এর আগে এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে। বিচারহীনতার কারণে বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আজকে দেশে মানুষ ধর্ষণের শিকার হয়ে বিচার চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আজকে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। বসে থাকার সুযোগ নেই। আমি ছাত্র-জনতাকে সম্মিলিতভাবে এ ধরনের ঘটনা রুখে দিতে আহ্বান করছি। শুধু বক্তব্য, সেমিনার ও নারীর অধিকার নিয়ে কথা বললেই হবে না। শাহবাগের অবরোধ কর্মসূচীতে ভিপি নূরের সঙ্গে ছিলেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, ফারুক হোসেন, মশিউর রহমান, স্বতন্ত্র জোটের নেত্রী শামসুন নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনিম ইমি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফেডারেশনে ঢাবি শাখার সভাপতি আবু সালমান সিদ্দিক প্রমুখ। এছাড়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেনের নেতৃত্বে ডাকসু থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ছাত্রদল। অপারেজয় বাংলার সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ছাত্রসংগঠনটি। এর আগে মধুর ক্যান্টিন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে যান ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী। এ সময় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসাইন শ্যামল বলেন, দিন বদলের কথা বলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু আজ দুর্নীতি, হত্যা, ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলছে। ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে ছাত্রদল সভাপতি খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি এবং সরকার পতনের আন্দোলন-সংগ্রামে শামিল হওয়ার জন্য ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। আরও ছিলেন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঢাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ। ক্ষুব্ধ, লজ্জিত উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর পাশে পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, মেয়েটির পাশে দাঁড়ানো আমাদের প্রথম দায়িত্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছে। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা প্রয়োজন তাই করবে। তাকে মনে রাখতে হবে সে আমাদের মেয়ে, আশা রাখি তার মনোবল শক্ত থাকবে। ওই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী। উপাচার্য বলেন, ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়, দুঃখজনক ও অনাকাক্সিক্ষত। আমরা মর্মাহত। তার বাবা ভেতরে আছে, তবে আমরা সবাই তার পাশে আছি। তাকে মানসিকভাবে শক্ত ও সমর্থ করে তোলাই আমাদের প্রধান কাজ। তার অভিভাবকত্ব যেহেতু আমাদের, তাই তার সর্বোত্তম দায়িত্ব আমাদের। আমাদের সবটুকু তার জন্য নিবেদিত। পুলিশ এ ঘটনায় তৎপর আছে। দ্রুততম সময়ে দোষীদের আটক করে আইনের আওতায় আনার জন্য তাদের অনুরোধ করেছি। ধর্ষণের ঘটনায় ঢাবি কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ঢাবি ভিসি বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থানায় ছাত্রীটির বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। তা না হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই মামলা করত। এরপরেও যেটুকু সহায়তা দরকার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সে সহায়তা দেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়টিকে কলঙ্কজনক ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ। তিনি বলেছেন, বিষয়টি দুঃখজনক, নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। আমাদের লজ্জার শেষ নেই। মেয়েটিকে প্রথমে পেটানো হয়েছে, পরে তাকে অপমান করেছে দুর্বৃত্তরা। আমরা সরকারের কাছে এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই। ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কুর্মিটোলায় ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে কুর্মিটোলায় সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অপরাধীদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঘটনাস্থলের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ৩টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বাসে করে শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করেন। পরে তারা সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ ও ধর্ষককে গ্রেফতার এবং বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দেন। ‘ধর্ষকের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই’ স্লোগান তোলেন প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা। ডাকসু থেকে পদযাত্রা, রাতে স্মারকলিপি ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় দুই দিনব্যাপী কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। সোমবার ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচী জানানো হয়েছে। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ডাকসু থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত নিপীড়নবিরোধী পদযাত্রা ও আলোক প্রজ্বলন করা হয়। রাত ৯টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাত ও স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। এছাড়া আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টা রাজু ভাস্কর্যে নিপীড়নবিরোধী ছাত্র-শিক্ষক-নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় নিপীড়নবিরোধী ডাকসু মঞ্চ থেকে ধারাবাহিক সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ জানানো হবে। তিন দাবি নিয়ে অনশনে ঢাবি শিক্ষার্থী ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে তিন দাবি নিয়ে অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। সোমবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সিফাতুল ইসলাম নামে দর্শন বিভাগের এক শিক্ষার্থী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসেন। তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আরও দুজন শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। সিফাতুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছোট বোন আহত হওয়ায় আমি বড় ভাই হিসেবে তাৎক্ষণিক এই অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মহিলা পরিষদের আহ্বান মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডাঃ ফওজিয়া মোসলেম বলেছেন, ২০১৯ সালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে প্রায় চার হাজারেরও বেশি। কিন্তু বিচার হয়েছে মাত্র একটির। আমারা এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে চাই। রাজু ভাস্কর্যের সামনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত মানববন্ধন তিনি এ কথা বলেন। মানববন্ধনে ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে যখন প্রধানমন্ত্রী চান তখন বিচার হয়, অন্য সময় হয় না। আমরা এই রাজনীতি থেকে বের হতে চাই। তিনি আইনমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশের আইনমন্ত্রী কি কাজ করেন তা আমরা জানি না। তাকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
×