ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

খালে বাঁধ ॥ বরিশালে আগাম বোরো চাষ ব্যাহত

প্রকাশিত: ০৯:২০, ৭ জানুয়ারি ২০২০

খালে বাঁধ ॥ বরিশালে আগাম বোরো চাষ ব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ আগৈলঝাড়া উপজেলায় আগাম বোরো চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। গত কয়েকদিনের কনকনে শীত উপেক্ষা করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের চারা বীজ লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। তবে খালে পানি সেচের প্রতিবন্ধকতায় বাম্পার ফলন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদার মাহফুজ খান সড়ক উন্নয়ন কাজের জন্য খালে দেয়া একাধিক বাঁধের কারণে অন্যান্য বছরের মতো এ বছর পানি সঞ্চালন না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খালের মধ্যে কাজ শেষ হলেও একবছর আগে দেয়া বাঁধ ও বাঁধের আনুসঙ্গিক সরঞ্জামাদি অদ্যাবধি সরানো হয়নি। যে কারণে পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, উপজেলায় ২৬ হাজার ৪০৮ জন চাষী পরিবার একমাত্র ধানের ওপর নির্ভরশীল। ইতোমধ্যে পানি সঙ্কটের কারণে জমি চাষাবাদ করতে না পারার আশঙ্কায় গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের কালাম মৃধা, ওসমান হাওলাদার ও মধ্যশিহিপাশা গ্রামের ব্লক ম্যানেজার রব হাওলাদার কৃষি অফিস থেকে ভাড়া নেয়া সেচ পাম্প ফেরত দিয়েছেন। ওই ব্লক ম্যানেজাররা জানান, সড়ক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও দীর্ঘদিনেও খালের মধ্যে দেয়া বাঁধ ও বাঁধের পাইলিং ঠিকাদার অপসারণ করেননি। এছাড়াও সড়কের গাইড ওয়াল নির্মাণের সময় কাটা মাটি খালের তলদেশ থেকে অপসারণ করা না হলে চলতি মৌসুমে তারা খালে পানি পাবেন না। ফলে ধানের বাম্পার ফলন তো দূরের কথা, পানির অভাবে বোরো ব্লক শুরুই করতে পারবেন না। খালে পানি সঙ্কটের কারণে উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাজিহার, বাকাল ও গৈলা ইউনিয়নের কয়েক হাজার চাষী পরিবার। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ৯ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ১৪৮ মেট্রিক টন চাল। এরমধ্যে চাষযোগ্য জমির মধ্যে সাত হাজার আটশ’ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান ও এক হাজার সাত শ’ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বোরো ধান আবাদ করা হবে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ইতোমধ্যে ৮০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ২০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল বোরোসহ মোট এক শ’ হেক্টর জমিতে আগাম চাষ শুরু করেছেন চাষীরা। কনকনে শীত উপেক্ষা করে গত কয়েকদিন যাবত উপজেলার নিচু জমিগুলোতে শুরু হয়েছে আগাম ইরি-বোরো ধানের চারা বীজ রোপণের কাজ। উপজেলা কৃষি অফিসার নাসির উদ্দিন বোরো মৌসুমে খালে পানি সঙ্কটের শঙ্কার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারের উদাসীনতার বিষয়টি বিভাগীয় কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
×