ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মধ্যপ্রাচ্যবাসীর দৃষ্টিতে কাশেম সোলাইমানি

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ৭ জানুয়ারি ২০২০

মধ্যপ্রাচ্যবাসীর দৃষ্টিতে কাশেম সোলাইমানি

বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানী কুদস ফোর্স কমান্ডার কাশেম সোলাইমানি হত্যার পর ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। তার হত্যার প্রতিশোধের দাবিতে ইরানবাসী সোচ্চার। বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চৌকস বাহিনীর প্রধান হিসেবে ইরানের স্বার্থরক্ষা এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির প্রভাব বিস্তারের কৌশলগত উদ্দেশ্যের কারণে সোলাইমানি শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। কুদস ফোর্স ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কোরের (আইআরজিসি) একটি শাখা। এটি ইরাক, আফগানিস্তান, লেবানন, সিরিয়া এবং ইয়েমেনসহ অনেক দেশে ইরানের স্বার্থ রক্ষায় পরিচালিত হয়। আলজাজিরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সোলাইমানির মৃত্যু ওই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব ব্যাহত করবে না। কারণ তিনি একটি সিস্টেমের অংশ হিসেবে পরিচালিত হতেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ওই সিস্টেম সাজানো হয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক ইরান এবং দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ ফাতমে আমান বলেন, ওই অঞ্চলে ইরানের কৌশলের মতোই সোলাইমানি গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। সোলাইমানি একটি বৃহৎ সামরিক সংস্থা থেকে মাত্র একজন জেনারেল ছিলেন। তার মৃত্যুর পরও ওই বাহিনীর সবকিছু চালিয়ে নেয়ার সামর্থ্য রয়েছে। সোলাইমানির মৃত্যু একটি বড় ধাক্কা, তবে এটা ওই সিস্টেমের প্রতি বড় ধাক্কা নয় বলে জানান তেহরানভিত্তিক ইরানী বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক রুয়েদা। তিনি বলেন, ওই অঞ্চলে ইরানের কৌশল বাস্তবায়নে সোলাইমানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার মৃত্যু সত্ত্বেও ইরান ওই অঞ্চলে তার বর্তমান কৌশল নিয়েই লেগে থাকবে, বলেন কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের গালফ স্টাডিজ সেন্টারের পরিচালক মাহাজুব জয়েরি। তিনি আরও বলেন, সিরিয়া সরকারকে সাহায্যে তার ভূমিকার জন্য ওই এলাকার অনেকেই যখন তার প্রশংসা করছেন, সোলাইমানি হাজারো সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর জন্য দায়ী। অনেকেই ইরাকের সাম্প্রতিক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে এবং সাধারণ নাগরিক নিহতের ঘটনায় সোলায়মানিকে দোষারোপ করেন। সোলাইমানির তত্ত্বাবধানে লেবাননের হিজবুল্লাহর হাতে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, সাইবার যন্ত্রপাতি জমা হয়েছে। তিনি হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের মাঝে অনেক জনপ্রিয়। ইসরাইলের বিরুদ্ধে তার আক্রমণাত্মক ভূমিকার কারণে তিনি ফিলিস্তিনীদের কাছে বিশেষ করে গাজাবাসীর কাছে বীরের মর্যাদা পান। হামাসের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথাও জানা যায়। বিশেষজ্ঞ আমান বলেন, গত কয়েক দশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের দাবি জানানো প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়নের ক্ষেত্রে সোলাইমানির ভূমিকার কারণে তিনি উদারপন্থী ও নাগরিক অধিকার কর্মীদের মধ্যে অজনপ্রিয় ছিলেন। তবে তার মৃত্যু ইরানে তার মর্যাদা অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এটা কট্টরপন্থীদের আরও শক্তিশালী করেছে এবং নাগরিক সমাজকে দুর্বল করে দিয়েছে।
×