ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হতাশা কেটেছে বিশ্বকাপ তারকা কলিনড্রেসের

প্রকাশিত: ১০:২৫, ৬ জানুয়ারি ২০২০

 হতাশা কেটেছে বিশ্বকাপ তারকা কলিনড্রেসের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২৩ নবেম্বর, ২০১৮। স্থান ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে নবাগত বসুন্ধরা কিংস ৩-১ গোলে হেরে গেল আবাহনী লিমিটেডের কাছে। ফাইনালে হেরে সেদিন হতাশায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন বিশেষ একজন। ৫ জানুয়ারি, ২০২০। একই স্থান, একই আসরের ফাইনালের পর সেই বিশেষ ব্যক্তির এবারের অনুভূতি ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। আগে শোনা যাক কি বলেন তিনি, ‘আমরা খুবই খুশি যে চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি। বসুন্ধরা কিংসের হয়ে খেলতে পেরে আমি খুবই গর্বিত।’ কথাগুলো ড্যানিয়েল কলিনড্রেসের। বসুন্ধরা কিংসের কোস্টারিকান এই উইঙ্গারের মনে যে আক্ষেপ-অতৃপ্তি ছিল, সেটি দূর হয়েছে রবিবার। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন কাপের ফাইনালে বসুন্ধরা কিংস ২-১ গোলে হারায় রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিকে। কলিনড্রেস আরও যোগ করেন, ‘লীগের আগে এই ট্রফিটা অবশ্যই বড় প্রেরণা। আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরব। এএফসি কাপ এবং লীগে ভাল করার চেষ্টা করব। আবারও স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জিততে চাই।’ শিরোপা জেতার পথে দলের সবগুলো গোলই এসেছে কলিনড্রেসের মাথা ও পা থেকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না যে ম্যাচের পার্থক্য আমি একাই গড়ে দিয়েছি। এই ট্রফির জন্য সবাই কঠোর পরিশ্রম করেছে। খেলোয়াড়, কোচ, দলের স্টাফ সবারই অবদান আছে। আমি খুশি এই কারণে যে বসুন্ধরা এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দল।’ গত মৌসুমে জিততে পারেননি বলে হতাশ ছিলেন, সেটা স্বীকার করেন কলিনড্রেস, ‘হ্যাঁ, গত মৌসুমে ফেডারেশন কাপ জিততে পারিনি বলে খুব কষ্ট পেয়েছি। তখন বলেছিলাম যে পরের মৌসুমে হবে। এখন সেই মৌসুমটা। গত বছর যে ট্রফিটা জিততে পারিনি, সেটা এখন আমাদের হাতে। সত্যিই অনুভূতিটা অন্যরকম।’ রূপকথা লেখার খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলেন সৈয়দ গোলাম জিলানী। রহমতগঞ্জের আলোচিত কোচ বলেন, ‘আসলে এ পর্যন্ত আসব, এতটা আশা করিনি। ফাইনালের মতোই ফাইনাল হয়েছে। দুটি গোল আমাদের ভুলের কারণে হজম করেছি। লিটন খুবই ভাল গোলরক্ষক, সে জাতীয় দলের গোলরক্ষক। এখন অপ্রত্যাশিতভাবে হয়ে গেছে কিছুই করার নেই। বলা চলে দুই গোল আমরা গিফট করেছিলাম। পিছিয়ে পড়ার পর আমরা গোল পরিশোধ করে ম্যাচে ফিরেও এসেছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় গোল হওয়ার পর ফিরে আসা সম্ভব হয়নি।’ জিলানী আরও যোগ করেন, ‘৮৬ বছর পর টিম ফাইনালে উঠেছে। আমি মনে করি পুরো রহমতগঞ্জবাসী খুবই সুখী। চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি বলে আক্ষেপ নেই। আমার দল যথেষ্ট চেষ্টা করেছে আর নিজেদের ভুলেই গোল খেয়েছি। আর খেলায় তো হার-জিত আছেই। এই নিয়ে আমার কোন দুঃখ নেই। ‘আমার আসল শক্তি ছিল ডিফেন্সে। আশরাফ উঠে যাওয়ার পর রক্ষণভাগ দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তারপরও ছেলেরা যেভাবে ফিরে এসেছিল, তাতে করে ভাল কিছুর সম্ভাবনা ছিল। এখন হয়নি, তাই এটা বলে আর লাভ নেই। ‘আমি মনে করি কলিনড্রেসই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন। তিনি তো একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড়। কলিনড্রেসকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা ছিল আমাদের। তাকে ব্লক করে খেলানোর প্ল্যান ছিল। আমার টিম খেলছেও। কিন্তু সিওপোপ ওঠে যাওয়ার পরই সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেছে।’ কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজোন বলেন, ‘স্বাধীনতা কাপ, প্রিমিয়ার লীগের পর ফেডারেশন কাপ জিতেছি, এটা আমাদের জন্য ভাল দিক। আমরা শিরোপা জয়ের ধারার মধ্যে আছি এবং আমি এতে খুশি। সামনে আমাদের আরও অনেক প্রতিযোগিতা আছে, ফেডারেশন কাপ জয় আমাদের আরও উজ্জীবিত করবে।’ ফাইনাল শেষে চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী। আসরে কে কী পেল * চ্যাম্পিয়ন : বসুন্ধরা কিংস (ট্রফি, মেডেল ও ৫ লাখ টাকা)। * রানার্সআপ : রহমতগঞ্জ এমএফএস (ট্রফি, মেডেল ও ৩ লাখ টাকা)। * ম্যান অব দ্য ফাইনাল : বিশ্বনাথ ঘোষ (বসুন্ধরা কিংস)। * সর্বোচ্চ গোলদাতা : রিভেরা সিডনি এ্যাডাম (৪টি, বাংলাদেশ পুলিশ)। * প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট : ড্যানিয়েল কলিনড্রেস (বসুন্ধরা কিংস)। * ফেয়ার-প্লে ট্রফি : মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
×