ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্যাটিংয়ে মালান, বোলিংয়ে রানা শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন

বাকি রইল ‘প্লে-অফে’র দুই দল

প্রকাশিত: ১০:২৩, ৬ জানুয়ারি ২০২০

 বাকি রইল ‘প্লে-অফে’র দুই দল

মিথুন আশরাফ ॥ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) ‘প্লে-অফে’ খেলবে চার দল। দুই দল এরইমধ্যে মিলে গেছে। সমান ১৪ পয়েন্ট করে নিয়ে রাজশাহী রয়্যালস ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স লীগপর্ব শেষ হওয়ার আগেই সেরা চারে থাকা নিশ্চিত করে নিয়েছে। এখন বাকি আছে আর দুটি দলের ‘প্লে-অফ’ নিশ্চিত করা। সিলেট পর্বে দলগুলোর উত্থান-পতন হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে ব্যাটিংয়ে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান ডেভিড মালান ও বোলিংয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মেহেদী হাসান রানাই শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন। এবার মঙ্গলবার থেকে ঢাকায় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে লীগের পঞ্চম ও শেষপর্ব শুরু হবে। দুপুর দেড়টায় কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ও সিলেট থান্ডারের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হতে যাওয়া এই পর্বেই সব হিসেব মিলে যাবে। ১১ জানুয়ারি লীগপর্ব শেষ হওয়ার পর একটি এলিমিনেটর, দুটি কোয়ালিফায়ার ম্যাচ হওয়ার পর ১৭ জানুয়ারি ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। সেই সঙ্গে শেষ হবে বঙ্গবন্ধু বিপিএল। সিলেট পর্বে অর্থাৎ লীগের চতুর্থ পর্বে সিলেট থান্ডারের লীগ থেকে বিদায় ঘটেছে। সেই সঙ্গে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম ‘প্লে-অফ’ খেলা নিশ্চিত করেছে। এখন তাদের লক্ষ্য পয়েন্ট তালিকায় সেরা দুইয়ে থাকা। তা হতে পারলে যে ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ‘প্লে-অফে’ এক ম্যাচ হারলেও আরেক ম্যাচ জিতে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলার আশা জিইয়ে থাকে। তাই রাজশাহী ও চট্টগ্রাম হাতে থাকা দুই ম্যাচেও জিততে নামবে। তবে ‘প্লে-অফে’ ওঠার জন্য যে দুই দল বাকি, এ দুই দলের মধ্যে থাকতে ঢাকা প্লাটুন, খুলনা টাইগার্স, কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ও রংপুর রেঞ্জার্সের মধ্যে লড়াই জমে উঠেছে। তা লীগপর্ব শেষ হওয়া পর্যন্ত জমে থাকতে পারে। এখন রাজশাহী ও চট্টগ্রামের আছে ১৪ পয়েন্ট করে। তৃতীয় স্থানে আছে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা প্লাটুন। ১০ পয়েন্ট নিয়ে খুলনা আছে চতুর্থ স্থানে। পঞ্চম স্থানে থাকা কুমিল্লার পয়েন্ট ৮। ষষ্ঠ স্থানে থাকা রংপুরেরও পয়েন্ট ৮। সিলেট তলানিতে আছে। পয়েন্ট মাত্র ২। বোঝাই যাচ্ছে, যে দলগুলো ১৪ পয়েন্ট পাবে তাদের ‘প্লে-অফে’ খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে। ১২ পয়েন্টেও শেষ পর্যন্ত ‘প্লে-অফে’ খেলার সম্ভাবনা থাকবে। তবে ১৪ পয়েন্ট হলে নিশ্চয়তা মিলে যাবে। সেই হিসেবে ঢাকা সুবিধাজনক স্থানেই আছে। হাতে থাকা ৩ ম্যাচের মধ্যে যে কোন একটি ম্যাচ জিতলেই ‘প্লে-অফ’ খেলা নিশ্চিত করে নেবে ঢাকা। তখন ১৪ পয়েন্ট হয়ে যাবে। ঢাকার নিচে থাকা তিন ম্যাচ করে হাতে থাকা খুলনা, কুমিল্লার মধ্যে দুটি দলের ১৪ পয়েন্ট হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। দুই ম্যাচ হাতে থাকা রংপুরের তো তা হবেই না। তবে সব দলেরই ১২ পয়েন্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেক্ষেত্রে ঢাকা যদি সবকটি ম্যাচে হারে, তাহলেও ‘প্লে-অফে’ খেলতে পারে। রানরেটে ঢাকাকে পেছনে ফেলা যে কঠিনই হবে। খুলনা ও কুমিল্লার মধ্যকার দুটি ম্যাচ থাকায় যে কোন এক দলের বারোটা বাজতে পারে। কুমিল্লার ১৪ পয়েন্ট হতে হলে তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিততে হবে। সেক্ষেত্রে খুলনার সঙ্গে যে দুটি ম্যাচ আছে, তাও জিততে হবে। কুমিল্লা যদি খুলনাকে টানা দুই ম্যাচে হারায় তাহলে খুলনার সর্বোচ্চ ১২ পয়েন্ট হতে পারে। আবার খুলনা যদি কুমিল্লাকে টানা দুই ম্যাচে হারায়, তাহলে কুমিল্লার বিদায় ঘণ্টা বাজবে। তখন কুমিল্লার সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট হতে পারে। আর যদি কুমিল্লা ও খুলনার মধ্যকার দুটি ম্যাচে একটি করে জয় দুই দলের মিলে তাহলে খুলনার সর্বোচ্চ ১৪ পয়েন্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। তবে কুমিল্লার ১২ পয়েন্টের বেশি তখন হবে না। রানরেটও তখন কম থাকবে। আর রংপুর টানা দুই ম্যাচ জিতলেও ১২ পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে অনেক পিছিয়ে থেকে বাদ পড়ে যেতে পারে। তার মানে পয়েন্ট তালিকার হিসেবে কাগজে-কলমে রংপুরের আশা থাকলেও হতাশাই যুক্ত হবে। তবে ঢাকা, খুলনা ও কুমিল্লার মধ্যে জমপেশ লড়াই হবে। যদি ঢাকা একটি ম্যাচ জিতে তারা ‘প্লে-অফে’ খেলবে। তখন খুলনা ও কুমিল্লার মধ্যে শুধু লড়াই বাকি থাকবে। দলীয়ভাবে যেমন লড়াই দেখা যাবে ঢাকায় শেষপর্বে, ঠিক তেমনি ব্যক্তিগত লড়াইও জমে উঠবে। এখন পর্যন্ত মালান ৬২.৮৩ গড়ে ৩৭৭ রান করে রান সংগ্রাহক তালিকায় শীর্ষে আছেন। তবে তাকে ছুঁতে খুব বেশি সময় লাগার কথা নয় খুলনা টাইগার্সের দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান রাইলি রুশোর। স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য মালান চলে গেছেন ইংল্যান্ডে। তিনি আর বিপিএল খেলছেন না। তাতে করে ৪৮.৫৭ গড়ে ৩৪০ রান করা রুশোর সামনে শীর্ষে ওঠার সুযোগ আছে। তৃতীয় স্থানে থাকা রংপুর রেঞ্জার্সের নাঈম শেখের (৩৭.৫৫ গড়ে ৩৩৮ রান), চতুর্থ স্থানে উঠে আসা সিলেট থান্ডারের মোহাম্মদ মিঠুনের (৩৬.৭৭ গড়ে ৩৩১ রান), পঞ্চম স্থানে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ইমরুল কায়েসের (৫৩.১৬ গড়ে ৩১৯ রান) শীর্ষে ওঠার সুযোগ থাকছে। সবাইকে ছাপিয়ে আবার ঢাকা প্লাটুনের তামিম ইকবাল (৫৩.০০ গড়ে ৩১৮ রান) ও মুশফিকুর রহিমও (৫১.৫০ গড়ে ৩০৯ রান) শীর্ষে চলে যেতে পারেন। দারুণ ব্যাটিং যে করে চলেছেন তারা। বোলিংয়েও শীর্ষস্থান নিয়ে লড়াই জমে উঠেছে। মেহেদী হাসান রানা ১৭ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছেন। তবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রংপুর রেঞ্জার্সের মুস্তাফিজুর রহমান (১৬ উইকেট) ছন্দে ফিরে আসায় রানার শীর্ষস্থান টালমাটাল অবস্থায় থাকছে। তা অটুট নাও থাকতে পারে। শীর্ষস্থানে ওঠার চেষ্টা করছেন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের আফগানিস্তান স্পিনার মুজিব উর রহমান (১৩ উইকেট), রংপুর রেঞ্জার্সের লুইস গ্রেগরি (১৩ উইকেট), চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের রুবেল হোসেন (১৩ উইকেট) ও সিলেট থান্ডারের এবাদত হোসেনও (১৩ উইকেট)। তবে রানার এতটাই কাছে আছেন মুস্তাফিজ, শেষ পর্যন্ত ছন্দে ফেরা ‘কাটার মাস্টার’ই শীর্ষস্থানে চলে আসতে পারেন।
×