ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে যে কোন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে পারবে বিএসইসি

প্রকাশিত: ০৯:২১, ৬ জানুয়ারি ২০২০

  বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে যে কোন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে পারবে বিএসইসি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে যে কোন ব্যক্তি ও সংস্থা তালিকাভুক্ত কোম্পানি, স্টক এক্সচেঞ্জ এবং স্টক ব্রোকার ও ডিলারদের কার্যক্রম পরিদর্শন করতে পারবে। অবশ্য এক্ষেত্রে কাকে পরিদর্শনের দায়িত্ব দেয়া হবে সেটি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নির্ধারণ করবে। ১৯৮৭ সালের দ্য সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলসটিতে বেশকিছু পরিবর্তন এনে সম্প্রতি দ্য সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস ২০১৯-এর খসড়া প্রকাশ করেছে কমিশন। প্রস্তাবিত এ খসড়ায় পরিদর্শনের বিষয়টি সংযোজন করা হয়েছে। সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস ২০১৯-এর খসড়ায় পরিদর্শন সংক্রান্ত একটি আলাদা ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে, যা এর আগের ১৯৮৭ সালের রুলসে ছিল না। নতুন সংযোজিত ধারায় বলা হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে যে কোন সময় যে কোন ব্যক্তি কিংবা সংস্থাকে তালিকাভুক্ত কোম্পানি, স্টক এক্সচেঞ্জ এবং স্টক ব্রোকার ও ডিলারদের কার্যক্রম পরিদর্শনের ক্ষমতা প্রদান করতে পারবে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক তালিকাভুক্ত কোম্পানি, স্টক এক্সচেঞ্জ, স্টক ব্রোকার ও ডিলার, প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালক, কর্মকর্তা, নিরীক্ষক কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কমিশনের বা পরিদর্শন কর্মকর্তার লিখিত অনুরোধের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও তথ্য সরবরাহ করবে। প্রস্তাবিত খসড়ায় জীবন বীমা খাতের কোম্পানি বাদে অন্যান্য তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর হিসাব বছর শেষ হওয়ার চার মাসের মধ্যে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে এবং এর ১৪ দিনের মধ্যে কমিশন ও স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে পাঠাতে হবে। আর জীবন বীমা কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩০ জুনের মধ্যে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। যুক্তিসঙ্গত কারণ কিংবা প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে আবেদনের ভিত্তিতে কমিশন নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির সময়সীমা বাড়াতে পারবে। ১৯৮৭ সালের রুলসেও একই নিয়ম ছিল। তবে আগের রুলসে কোন কারণে নির্ধারিত সময় কিংবা বর্ধিত সময়ের মধ্যে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করতে ব্যর্থ হলে কমিশনের খরচে নিরীক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। আর প্রস্তাবিত খসড়ায় কমিশনের খরচের বদলে ইস্যুয়ারের খরচে নিরীক্ষক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত খসড়ায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিশেষ নিরীক্ষা সংক্রান্ত গাইডলাইন আগের মতোই রাখা হয়েছে। তবে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএফআরএস) ও বাংলাদেশ এ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডের (বিএসএস) পরিবর্তে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) ও ইন্টারন্যাশনাল এ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডের (আইএএস) বিষয়টি সংযোজন করা হয়েছে। তাছাড়া কর্পোরেট গবর্ন্যান্স গাইডলাইনের যেসব রেফারেন্স ১৯৮৭ সালে রুলসে ছিল, সেটি পরবর্তন করে কর্পোরেট গবর্ন্যান্স কোডের আওতায় প্রয়োজ্য বিধান ২০১৯ সালের রুলসে সংযোজন করা হয়েছে। আগের রুলসের শিডিউল ১-এ ব্যালান্স শিট, প্রফিট এ্যান্ড লস এ্যাকাউন্ট এবং ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্টের মধ্যে কী কী বিষয় থাকতে হবে, সে বিষয়ে বিশদভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রস্তাবিত খসড়ায় এ সংক্রান্ত শিডিউলটি রাখা হয়নি। তাছাড়া প্রস্তাবিত খসড়ায় বেশকিছু সংজ্ঞাগত বিষয় আরও বিশদভাবে বিস্তৃত পরিসরে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আগামী বছরের ১২ জানুয়ারির মধ্যে প্রস্তাবিত খসড়া রুলসের ওপর মতামত প্রদানের সুযোগ রাখা হয়েছে। মতামত পাওয়ার পর সেগুলো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংয়োজন বা বিয়োজন করে রুলসটিকে চূড়ান্ত করে বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশ করবে বিএসইসি।
×