জলবায়ু বিপর্যয়ের গ্রাউন্ড জিরোতে পরিণত হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটির অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষণ স্থান গ্রেট বেরিয়ার রীফ বিলীন হতে চলেছে, বিশ্ব ঐতিহ্যভুক্ত রেইন ফরেস্টগুলো পুড়ছে, সমুদ্রের তলদেশের উদ্ভিদগুলোর একটি বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে, প্রধান প্রধান শহরের পানির স্তর নিচে নেমে গেছে এবং দেশটির একটি বৃহৎ অংশ নজিরবিহীন দাবানলে পুড়ে যাচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার হাজার হাজার মানুষ কমলা রঙের ধোঁয়ার মধ্যে বাস করছে, মানুষ ও পশু- পাখি নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছুটছে। মানুষজন মুখোশ ছাড়া রাস্তায় আসতে পারছে না। অস্ট্রেলিয়ার পানিতে চশমা ছাড়া সাঁতার কাটার জো নেই। দিন ও রাত ধোঁয়াচ্ছন্ন থাকছে। দাবানলগুলো থেকে প্রতিনিয়ত আগুন বের হচ্ছে। মনে হচ্ছে পুরো অস্ট্রেলিয়া অগ্নিকুন্ডে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। আগুনের শিখা দুইশ’ ফিট পর্যন্ত উঁচু হচ্ছে। অগ্নিঘূর্ণিঝড় হচ্ছে। শিশুরা ক্রমেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। বিমানগুলো এসব আকাশপথ এড়াতে চাইছে।
অস্ট্রেলিয়ার চলমান দাবানলে ইতোমধ্যে ১৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন একর জমি পুড়ে গেছে। গত বড়দিনে ক্যানেবেরার আকাশ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ছিল। বিজ্ঞানীদের অনুমান, দাবানলে প্রায় ৫০ কোটি প্রাণী মারা গেছে। তাদের আশঙ্কা, আগুনে অস্ট্রেলিয়ার কিছু প্রাণী ও উদ্ভিদ চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে। এ পর্যন্ত অন্তত ২৩ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে বহু। দাবানলে আরও হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে। ওই রাজ্যের দাবানল কবলিত এলাকা থেকে ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এসব মানুষের বাসস্থান বিলীন হয়ে গেছে। এসব এলাকায় মানবিক সঙ্কটের উপক্রম হয়েছে। সকল প্রকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলে পানি ও আকাশপথে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। পূর্বাঞ্চলের সমুদ্রসৈকতে কয়েক হাজার মানুষ আটকা পড়ে আছে। তাদের ভাগ্যে আসলে কী ঘটছে তা এখনও জানা যায়নি। -নিউইয়র্ক টাইমস