ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আচরণবিধি মেনে চলতে ইসির কঠোর নির্দেশনা

প্রচারে নামার অপেক্ষায় দুই সিটির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ৫ জানুয়ারি ২০২০

প্রচারে নামার অপেক্ষায় দুই সিটির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রার্থিতা বাছাই শেষে এখন প্রচারে নামার অপেক্ষায় ঢাকার দুই সিটির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। আগামী শুক্রবার থেকে তারা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাবেন। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় নামার আগে কিছুটা ওয়ার্মআপ করে নিচ্ছেন। বিশেষ করে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি, নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা, ভোটারের সঙ্গে যোগাযোগ ও নির্বাচনী প্রচারের কৌশল নির্ধারণেও ব্যস্ত রয়েছেন। ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ৯ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগে কেউ প্রচারে নামতে পারবেন না। তারা জানিয়েছে ১০ তারিখ থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু হলেও প্রার্থীদের ভোটের প্রচারে নামার আগে মানতে হবে ইসির বিধি-নিষেধ। আচরণবিধি মেনেই প্রচার চালাতে হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দ নেয়ার পর প্রচারে নামবেন প্রার্থীরা। তবে প্রতীক বরাদ্দ নেয়ার পর কেউ সাদাকালো ছাড়া রঙিন পোস্টার ব্যবহার করতে পারবেন না। পোস্টারে নিজ ছবি, প্রতীক ছাড়া অন্য কারো ছবি ব্যবহার করা যাবে না। তবে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হলে তিনি দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন। সভা-সমাবেশ করে ভোট চাইতে পারবেন না। পথসভা করতে হলে ২৪ ঘণ্টা আগে অনুমতি নিতে হবে। এছাড়াও নির্বাচনী এলাকায় কোন প্রকার চাঁদা বা অনুদান প্রদানে অঙ্গীকার করতে পারবেন না। শনিবার ইসির এক বিশেষ নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা নির্বাচনী ফল গেজেট আকারে প্রকাশের আগ পর্যন্ত কোন প্রকার চাঁদা, অনুদান বা প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন না। এতে বলা হয়েছে, শুধু প্রার্থী নয়, প্রার্থীর পক্ষে অন্য ব্যক্তিকেও এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। ইসির নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা সংক্রান্ত চিঠি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফল সরকারী গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত কোন প্রার্থী বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে কোন রাজনৈতিক দল, অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত কোন প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন প্রকার চাঁদা-অনুদান দিতে বা অঙ্গীকার করতে পারবে না। এ বিধিমালার বিধান লঙ্ঘন দ-নীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রহণ করেছে যে, নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যু কার্যক্রমসহ নতুন ধরনের কোন প্রকার অনুদান/ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না। তবে যেসব ত্রাণ কার্যক্রম আগ থেকে পরিচালিত হচ্ছে অর্থাৎ চলমান ত্রাণ কার্যক্রম চালু থাকবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচনের কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় নতুন ভিজিডি কার্ড ইস্যুসহ নতুন ধরনের কোন প্রকার অনুদান/ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কোন এলাকায় অনুদান/ত্রাণ বিতরণ সংক্রান্ত নতুন কার্যক্রম গ্রহণ আবশ্যক হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনের সম্মতি গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া প্রার্থীর প্রতি আচরণবিধি প্রতিপালনে ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থী বা দল প্রচারে সমান অধিকার ভোগ করবে। কোন প্রার্থী বা তার পক্ষে কোন রাজনৈতিক দল বা অন্য কোন ব্যক্তি প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনী প্রচার করতে পারবে না। নির্বাচনের আগে প্রার্থী সরকারী সার্কিট হাউস, ডাকবাংলো বা রেস্ট হাউসে অবস্থান করতে পারবেন না। প্রার্থীর পক্ষে বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিপক্ষে প্রচারের স্থান হিসেবে সরকারী কার্যালয় বা কর্তৃপক্ষকে ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রার্থী বা তার দল বা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি পথসভা বা ঘরোয়া সভা ছাড়া অন্য কোন জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না। পথসভা করতে চাইলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে স্থান ও সময় সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশকে জানাতে হবে। প্রার্থীর প্রচারে দৈর্ঘ্যে ৬০ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ৪৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে সাদা-কালো পোস্টার ব্যবহার করতে হবে। নির্বাচনী এলাকায় কোন দেয়াল বা যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগাতে পারবেন না। নির্বাচনী প্রচারে প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রতি থানায় একটির বেশি নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন করতে পারবেন না। আর কাউন্সিলর প্রার্থী ৩০ হাজার ভোটারের জন্য একটি ক্যাম্প এবং নির্বাচনী এলাকায় সর্বোচ্চ তিনটি ক্যাম্প বা অফিস ব্যবহার করতে পারবেন। ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল বা অন্য কোন যান্ত্রিক যানবাহনে করে মিছিল, মশাল মিছিল বা শোডাউন করতে পারবেন না। প্রচারে হেলিকপ্টার বা অন্য কোন আকাশযান ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের যাতায়াতের জন্য প্রার্থী কোন যানবাহন ভাড়া বা ব্যবহার করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে রঙের কালি, চুন বা কেমিক্যাল দিয়ে দেয়াল বা যানবাহনে লিখন, মুদ্রণ, ছাপচিত্র করে নির্বাচনী প্রচার করতে পারবেন না। প্রচারে গেট, তোরণ বা ঘের নির্মাণ করা যাবে না। ৩৬ বর্গমিটারের বেশি স্থান নিয়ে ক্যাম্প বা অফিস নির্মাণ করা যাবে না। প্রার্থীর ছবি বা প্রতীক চিহ্ন সংবলিত শার্ট, জ্যাকেট বা ফতোয়া ব্যবহার করা যাবে না। মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোন ধর্মীয় উপাসনালয়ে নির্বাচনী প্রচার চালানো যাবে না। একটি ওয়ার্ডে পথসভা বা নির্বাচনী প্রচারের কাজে একের অধিক মাইক্রোফোন বা বেশি মাত্রার শব্দের যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী এলাকায় দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে মাইক ব্যবহার করা যাবে। সরকারী সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং সরকারী কর্মকর্তা নির্বাচনী এলাকায় প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। তবে ওই ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার হলে তিনি কেবল ভোট প্রদান করতে পারবেন। নির্বাচনের কাজে সরকারী প্রচারযন্ত্র, যানবাহন বা অন্য কোন সরকারী সুযোগ-সুবিধা ভোগ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যবহার করতে পারবেন না। নির্বাচনের আগে প্রার্থী সরকারী, আধা সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কোন প্রকল্প অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বা ফলক উন্মোচন করতে পাবরেন না। নির্বাচনী প্রচারে স্থায়ী বা অস্থায়ী বিলবোর্ড বা অন্য কোন কাঠামো স্থাপন ও ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্ধারিত ব্যয়সীমা অতিক্রম করতে পারবেন না।
×