ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সজল আলী কাইজেনের নাটক ‘ক্রেজি হাজবেন্ড’ আজ

প্রকাশিত: ১২:১৫, ৪ জানুয়ারি ২০২০

সজল আলী কাইজেনের নাটক ‘ক্রেজি হাজবেন্ড’ আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এই সময়ের তরুণ প্রতিভাবান নাট্য নির্মাতা সজল আলী কাইজেন। মাঝের কিছুটা সময় বিরতির পর আবারও নাটক নির্মাণ শুরু করেছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নির্মাণ করেছেন বিশেষ একক নাটক ‘ক্রেজি হাজবেন্ড’। নাটকটি আজ শনিবার রাত ৯টায় এটিএনবাংলায় প্রচার হবে। নাটকটি পরিচালনার পাশাপাশি রচনাও করেছেন সজল আলী কাইজেন। নাটকের প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিশু সাব্বির ও নাজিয়া হক অর্ষা। আরও আছেন রুনা খান, কচি খন্দকার, মিলি বাসার, সাজু আহমেদ, উতল হাসনাতসহ আরও অনেকে। ‘ক্রেজি হাজবেন্ড’ নাটকটি একটি পারিবারিক ও ভালবাসার দ্বন্দ্বের নাটক। রাফিন চরিত্রটিকে ঘিরেই গল্পটি গড়ে ওঠে। রাফিন অস্থির টাইপের ছেলে। সমাজের আট দশটি ছেলের মতো সে না। বিয়ের পর রাফিন আরও বেশি বদলাতে থাকে। পরিবারের সদস্য, আশপাশের মানুষ, বন্ধুদের সঙ্গে এমনকি অফিসের সহকর্মীদের কাছেও রাফিন হয়ে যায় অন্যরকম মানুষ। রাফিন নিজেকে সবসময় ছোট করে রাখে। রাফিনের স্ত্রী নিশি বেশ সুন্দর। সুন্দরী বউ নিশিকে হারানোর ভয় রাফিনের মাঝে সবসময় কাজ করে। রাফিনের এই সন্দেহটাতে আগুন ঢেলে দেয় মহল্লার এক বড় ভাই। সুন্দরী বউকে চোখে চোখে রাখতে গিয়ে এবং ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করতে গিয়ে স্ত্রীকে আরও দূরে ঠেলে দিতে থাকে রাফিন। রাফিন বুঝতে পারে না স্ত্রী হিসেবে রাফিনের অতিরঞ্জিত লোক দেখানো ভালবাসা স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা ও বন্ধুরা কতটা কষ্ট পায়। স্ত্রীর জন্য সে নিজের মা, বড় ভাবিকে অপমান করে। মা, ভাবি, এবং স্ত্রী তাকে বার বার শোধরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। রাফিন শুধু ভাবে তার স্ত্রী শুধুই তার। সে ভাবে তার স্ত্রীর কাছে সে ছাড়া আর কেউ যেন অধিকার খাটাতে না পারে। নিশির দিকে কেউ তাকালে, কেউ কথা বলে রাফিন তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এমনকি গায়ে হাত পর্যন্ত তুলতে যায়। হাজার মানুষের মাঝে রাফিনের স্ত্রী নিশি একাকীত্ব অনুভব করে। অনুভব করে রাফিনের পাগলামীর কারণে সে কতটা নিচে চলে যাচ্ছে। স্ত্রীর প্রতি অতিরঞ্জিত ভালবাসার টান দেখাতে গিয়ে রাফিনের চাকরি চলে যায়, সমাজ থেকে, নিজ পরিবারের সদস্যদের কাছে সে হয়ে যায় অপরিচিত মানুষ। স্ত্রীর কাছে হয়ে যায় ভালবাসার বোঝা। কিন্তু ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায় নিশির যখন তার সামনে পিতাতুল্য মামাকে অপমান করে। নিশির বাবা মা মারা যায় ছোট বেলায় এক দূর্ঘটনায়। তারপর মামার কাছে বড় হয়। মামা বড় ব্যবসায়ী। দেশে ও দেশের বাইরে তার ব্যবসায় রয়েছে। সেই মামাকে ভুল বুঝে রাফিন অপমান করে। নিশি সিদ্ধান্ত নেয় রাফিন ছাড়া চলতে। রাফিনের মা, ভাবি এবং নিশির মামার মধ্যস্ততায় ঠিক হয় সম্পর্ক। মামা বোঝানোর চেষ্টা করে ভালবাসার মাঝে বিশ্বাস, মমত্ববোধ, বোঝাপড়া না থাকলে সেই ভালবাসা হারিয়ে যায়। দু’জনার ভালবাসার মাঝে কোন তৃতীয় পক্ষ থাকলে সেই ভালবাসা আর এক থাকে না । ভালবাসা তখন দিখ-িত হয়ে যায়। রাফিন নিশির মামার কথা শোনার পর সব ভুল স্বীকার করে এবং এটাও বলে যে, সে সত্যিকারের ক্রেজি হাজবেন্ড হতে চায় যার মধ্যে শুধু ভালবাসা, বিশ্বাস, মমত্ববোধ থাকবে। ‘ক্রেজি হাজবেন্ড’ নাটক প্রসঙ্গে নির্মাতা সজল আলী কাইজেন বলেন সমাজের দর্পণ হিসাবে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন কাজ করে। নাটক আমাদের সমাজের চিত্রগুলোকে তুলে ধরবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এ কাজটা করতে বর্তমানে অনেকাংশেই ব্যর্থ হচ্ছে কালো ছায়ার কারণে। আমি চেষ্টা করেছি সমাজে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনার মাঝে একটি ঘটনার খুব সামান্য অংশ তুলে ধরার। ক্রেজি হাজবেন্ডের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ভুলভাবে ভুল করাটা কতটা অন্যায়। একান্নবর্তী পরিবারকে ভেঙ্গে ফেলার পর আমরা আসলেই স্বার্থপর হয়ে গেছি। পারিবারিক বন্ধন দূরে রেখে নিজেকে গড়ে তোলার চেষ্টা করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। বিয়ের পর মানুষের পরিবর্তন হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সেই পরিবর্তন কতটা নেগেটিভ হচ্ছে তা দেখি না। বাহবা দিই স্বার্থপরতাকে। ক্রেজি হাজবেন্ড সেই জায়গা থেকে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। বাকিটা সমালোচকদের কাছে ছেড়ে দিলাম। আশা করি নাটকটি তাদের ভাল লাগবে।
×