ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিকল্প ব্যবস্থা না করেই বাস্কেটবলের জিমনেশিয়াম ভাঙ্গা হচ্ছে!

প্রকাশিত: ১২:০৯, ৪ জানুয়ারি ২০২০

বিকল্প ব্যবস্থা না করেই বাস্কেটবলের জিমনেশিয়াম ভাঙ্গা হচ্ছে!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দেশের ৫৩টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে হাতেগোনা ক’টিতে খেলা হয় নিয়মিত। তাদের মধ্যে একটি বাস্কেটবল। প্রায় ২০ বছর ধরে ধানমন্ডির আবাহনী ক্লাবের পাশে অবস্থিত জিমনেশিয়ামে সারা বছর খেলায় মেতে থাকেন পুরুষ ও নারী বাস্কেটবল খেলোয়াড়রা। জাতীয় দলের অনুশীলনও এখানেই হয়। কিন্তু সেই জিমনেশিয়াম এখন ভাঙ্গনের মুখে। শেখ কামাল ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরির জন্য ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে সেই জিমনেশিয়াম। বিকল্প ব্যবস্থা না করায় বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে নারী দলের অধিনায়ক শারমিন খাতুন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমিও শুনেছি বাস্কেটবল জিমনেশিয়াম ভেঙ্গে ফেলবে। এটা ভেঙ্গে ফেললে আমাদের খেলাই বন্ধ হয়ে যাবে। বাস্কেটবল খেলতে গেলে প্রচুর অনুশীলনের প্রয়োজন। আর খেলা তো সবসময়ই থাকে। তাই বাস্কেটবলের জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থা করা উচিত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের।’ একই হতাশা এসএ গেমসে পুরুষ দলের অধিনায়ক শামসুজ্জামান খান শোয়েবের কণ্ঠেও। জানা গেছে, শেখ কামাল ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরির জন্য ইতোমধ্যেই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। পুরো কমপ্লেক্স তৈরি করতে প্রায় দুই থেকে তিন বছরের মতো সময় লেগে যেতে পারে। এই দু’বছর কি হবে বাস্কেটবলের? ২০১৮ সালে প্রিমিয়ার লীগের চ্যাম্পিয়ন দল হরনেটস এসসি’র সাধারণ সম্পাদক ও ফেডারেশনের সদস্য রঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘প্রত্যেক বছর দেশী ও বিদেশী অনেক খেলা থাকে আমাদের। ফি বছরের মতো এবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনুর্ধ-১৮ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, পুরুষ ও নারীদের সিনিয়র সাউথ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন, থ্রি অন থ্রি বিচ গেমস, এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স কাপ এবং ঘরোয়া আসরের মধ্যে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ, প্রিমিয়ার, প্রথম বিভাগ, ফেডারেশন কাপ, ক্লাব কাপের খেলা রয়েছে। তাছাড়া ১৭ মার্চ শুরু হতে যাওয়া মুজিববর্ষে আমরা বঙ্গবন্ধুর নামে আন্তর্জাতিক বাস্কেটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে যাচ্ছি। এখন যদি বিকল্প ব্যবস্থা না থাকে তাহলে আমরা এতগুলো টুর্নামেন্টে কিভাবে অংশগ্রহণ করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’ ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরি করতে আগের সব স্থাপনা ভাঙ্গার কাজ শুরু হলেও কোন চিঠি পায়নি বাস্কেটবল ফেডারেশন। আর এতেই হতাশায় মুষড়ে পড়েছেন সবাই। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক লে. কমান্ডার (অব.) একে সরকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যৈষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের অন্যতম প্রিয় খেলা ছিল বাস্কেটবল। ওনার সঙ্গে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে আমিও খেলেছি। অনেক বছর ধরে এই জিমনেশিয়ামটি আঁকড়ে ধরে আছে খেলোয়াড়রা। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলে শত শত বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের ভবিষ্যত কি, তা আমার জানা নেই।’ এ বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) শাহ আলম সর্দার বলেন, ‘কমপ্লেক্স তৈরি করতে গেলে বাস্কেটবল জিমনেশিয়াম ভাঙ্গতে হবে। তবে কিভাবে খেলা কোর্টে রাখা যায় সে বিষয়ে ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসা দরকার। কথা বলা প্রয়োজন। খেলোয়াড়দের অবশ্যই ক্ষতি হবে। কথা বলার পর হয়তো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট শেষ হলেই আমরা ভাঙ্গার কাজ শুরু করতে পারি। তাছাড়া বাস্কেটবলের জন্য বিকল্প একটি ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।’
×