ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

গলে যাচ্ছে হিমবাহ

প্রকাশিত: ১১:২৯, ৪ জানুয়ারি ২০২০

গলে যাচ্ছে হিমবাহ

অস্ট্রেলিয়ার দাবানলের ছাই উড়ে গিয়ে দুই হাজার পাঁচ শ’ কিলোমিটার দূরে নিউজিল্যান্ডের তাসমানের ফ্রানজ জোসেফ ও ফক্স হিমবাহের ওপরে পড়েছে। বুধবারও হিমবাহ সাদা ছিল। যেজন্য কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন দমকলকর্মীরা। তবে ২৪ ঘণ্টা না যেতেই আবারও অস্ট্রেলিয়ার দাবানল ভয়াবহ রূপ নেয়। সেজন্য দেশটির আকাশ এখন কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। পরিবেশবিদরা বলছেন, সেই ধোঁয়ার আকার জাপানের চেয়ে ১৫ গুণ বড়। প্রায় ৫৫ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়েছে সেটি। ফিনিশ মেটিয়োরোলজিক্যাল ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী এ্যান্টি লিপোনেন তাকে কল্পনার মেঘ বলেছেন। তাতে দেখা গেছে, আইসল্যান্ড থেকে তুরস্কসহ পুরো ইউরোপকে ঢেকে ফেলা যাবে। তাসমান সাগর পেরিয়ে নিউজিল্যান্ড থেকেও দেখা যাচ্ছে সেই ধোঁয়া। তার জেরে কালো হয়ে উঠছে নিউজিল্যান্ডের বহু হিমবাহ। দ্রুত গলতে শুরু করেছে বরফ। পর্যটক ও স্থানীয়দের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই ছবি। পরিবেশবিদরা বলছেন, বিশালাকারের ওই ধোঁয়াই বিপদের কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার থেকে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় তাপমাত্রা আরও বেড়েছে। দাবানলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নিউ সাউথ ওয়েলস ও ভিক্টোরিয়ার তাপমাত্রা বেড়ে ৪৫ ডিগ্রী ছাড়িয়েছে। ঝড়ো হাওয়ার দাপ বেড়েছে। দুটি প্রদেশে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় আগুন লাগার খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকরা শহর ছেড়ে সমুদ্রের দিকে পালাচ্ছে। দাবানলের জেরে ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েসের বেশ কিছু এলাকা বর্তমানে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সেখানে বিমান পাঠিয়েও উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে দাবানলের প্রকোপ বাড়ায়। বেশিরভাগ সুপারমার্কেট বন্ধ। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গেলে দোকানে কয়েক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে লোকজনকে। ওইসব এলাকায় আকাশ বা জলপথেই খাবার, পানি ও জ্বালানি পাঠানো হচ্ছে। বিধ্বংসী দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জঙ্গল ও বন্যপ্রাণীর। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, কয়েকটি প্রজাতি একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুবিজ্ঞানীদের ধারণা, পুড়ে মারা গেছে অন্তত ৫০ কোটি পশু-পাখি-সরীসৃপ। তাদের মধ্যে আট হাজারই কোয়ালা। পরিবেশ সংরক্ষণ কাউন্সিলের সদস্য মার্ক গ্রাহাম পার্লামেন্টে বলেছেন, এত দ্রুত আগুন ছড়াচ্ছে যে ধীরগতির কোয়ালারা পালানোর সময় পাচ্ছে না। বিপদে পশু শাবকেরাও। আগুনের ভয়ে সপ্তাহ খানেকের শাবককে ছেড়ে পালাচ্ছে তাদের মায়েরা। বেশ কিছু পশুপ্রেমী সংগঠন তাদের উদ্ধার করলেও মা ছাড়া শাবকদের বাঁচানো খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। -ওয়াশিংটন পোস্ট
×