ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিয়মকানুন জানতে চান গ্রাহকরা

বিমানের নিজস্ব এ্যাপসে টিকেট কাটার হার প্রতিদিন বাড়ছে

প্রকাশিত: ১১:২৩, ৪ জানুয়ারি ২০২০

বিমানের নিজস্ব এ্যাপসে টিকেট কাটার হার প্রতিদিন বাড়ছে

আজাদ সুলায়মান ॥ চালু করার পর থেকে মোটামুটি ভালই সাড়া পড়েছে বিমানের নিজস্ব এ্যাপসে। প্রতিদিনই বাড়ছে এ্যাপসে টিকেট কাটার হার। তবে গ্রাহক এ্যাপসে টিকেট কাটার পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক নিয়মকানুন জানাতে ও প্রচার চালাতে মতামত দিচ্ছেন। গত ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের বহুল প্রতীক্ষিত এ্যাপস উদ্বোধনের পর মুহূর্ত থেকেই এ্যাপসে টিকেট কাটা শুরু হয়। বিদেশ থেকেই নক করেন প্রথম ব্যবহারকারী। বিমান সূত্র জানিয়েছে- দিন দিনই বাড়ছে। সেটা যত বেশি প্রচার হবে ততই এর ব্যবহার বাড়বে। শুধু টিকেট কাটা নয়, এর মাধ্যমে ফ্লাইটের বিস্তারিত তথ্যাদিও জানার সুযোগ রয়েছে। এ্যাপটিতে রয়েছে ইন্টারএ্যাক্টিভ ড্যাশবোর্ড, ফ্লাইট খোঁজা ও টিকেট বুক করার অপশন, বুকিংয়ের পর অর্থ পরিশোধ পদ্ধতি, বুক দেয়া টিকেটের বিস্তারিত হালনাগাদ, অনলাইনে পেমেন্ট সুবিধা, টু-ফ্যাক্টর সুবিধার নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ইন্টারএ্যাক্টিভ এসএমএস ও ই-মেইল নোটিফিকেশন। এ্যাপসের ব্যবহার বিধি সম্পর্কে বিমানের মার্কেটিং শাখার কর্মকর্তা সালাহ্ উদ্দিন জানান-এই এ্যাপের শুরুতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ই-মেইল বা ফোন নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করে নিতে হবে। তাহলেই এর সব ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে। লগ-ইন অবস্থায় সবশেষ সার্চের ওপর এ্যাপের ড্যাশবোর্ডেই সেই সংক্রান্ত নানান তথ্যাদি পাবেন ব্যবহারকারীরা। সবশেষ হালনাগাদ তথ্যাদি, নতুন অফারের খবর ইত্যাদি পাওয়া যাবে ড্যাশবোর্ডে। বিমানের মাধ্যমে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যগুলোর নিয়মিত আপডেট, বিভিন্ন অফারের তথ্যাদি ড্যাশবোর্ডে সব সময়ই হালনাগাদ হতে থাকবে। ফলে এ্যাপ ব্যবহারকারীরা পরবর্তী ভ্রমণের জায়গা নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারবেন। বিমান জানিয়েছে-দুনিয়াব্যাপী বিমানের ২৫ ভ্রমণস্থলের তথ্যাদির সার্চ পদ্ধতি এ্যাপটিতে সহজে লাগবে। একইভাবে টিকেট বুকিং দেয়ার পদ্ধতিও অনেক সহজ করা হয়েছে। কোন স্থানে ওয়ান-ওয়ে বা আসা-যাওয়ার তথ্যাদি আগে যাওয়া একই স্থানের ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক হবে। পছন্দসই সময় নির্ধারণ করে টিকেট বুকিং দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে অর্থ পরিশোধ না করেও বুকিং নির্ধারণের সুযোগ যুক্ত হয়েছে এ্যাপটিতে। বুকিং দেয়ার পর ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত টিকেট থাকবে বুকিংকারীর নামে। এর মধ্যে অর্থ পরিশোধ করলেই টিকেট কাটার পূর্ণাঙ্গ কাজটি সম্পন্ন হয়ে যাবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই। এছাড়া এ্যাপটির ‘মাই ট্রিপ’ বিভাগ থেকে ভ্রমণকারীর নামের শেষাংশের সহায়তায় অনলাইন ট্রাভেল পোর্টালের মতো বুকিংয়ের তথ্যাদির বিস্তারিত জানার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া এখন চাইলেই অগ্রিম রিজার্ভেশন করা, বাতিল ও রিফান্ড ব্যবস্থা, ফ্লাইট নম্বরের সহায়তায় সাতদিনের সব তথ্যাদি পাওয়া যাচ্ছে এ বিভাগ থেকে। এসব তথ্য চেক ও বুকিং করার পাশাপাশি বর্তমানে ভিসা, মাস্টার, এমেক্স, নেক্সাস, রকেট ও বিকাশের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশী টাকার পাশাপাশি চাইলে অন্য যেকোন মুদ্রার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। এ্যাপের মাধ্যমে সব কাজের আলাদা এসএমএস ও ই- মেইল নোটিফিকেশন পাবেন ব্যবহারকারী। এর মাধ্যমে রিজার্ভ সম্পন্ন হওয়ার তথ্য, পেমেন্ট ও টিকেটের বিস্তারিত নিবন্ধনসহ অন্যান্য গুরত্বপূর্ণ তথ্যের নোটিফিকেশন পাওয়া যাবে। এ সম্পর্কে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহিবুল হক বলেন, অনেকের ধারণা এ্যাপসের মাধ্যমে যাত্রীদেরকে কমিশন ১০ শতাংশ হারে প্রদান করা হলে বুঝি আর্থিক ক্ষতি হবে। আসলে বিষয়টি তা নয়। এতে বিমান ও যাত্রী উভয়েই আর্থিকভাবে লাভবান হবে। প্রচলিত পদ্ধতিতে ট্রাভেলস বা টিকেট এজেন্সিকে ৭ থেকে ৯ শতাংশ হারে বিক্রীত টিকেটের ওপর কমিশন দিতে হয় যেখানে যাত্রীর কমিশন একেবারেই সীমিত। এখন এ্যাপসে টিকেট কাটলে যাত্রী সরাসরি ১০ শতাংশ হারে কমিশন পাবেন। একই সঙ্গে বিমানেরও আর্থিক ক্ষতি হবে কম। এজন্যই যে ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে বিক্রীত টিকেটের ওপর আইএটিএ এর মাধ্যমে জিডিএস বাবদ বুকিং বাবদ ১৫ থেকে ৩০ ডলার পর্যন্ত কর্তন করে রাখে। এ হিসেবে মোটের ওপর বিমানের বছর শেষে অনেক বড় অঙ্কের টাকা পরিশোধ করতে হয়। এ্যাপসের মাধ্যমে টিকেট বিক্রি করা হলে এই টাকাটা লাগবে না। এ হিসেবে দেখা যায়, এ্যাপসে যত টিকেট বিক্রি হবে ততই বিমানের সাশ্রয় হবে।
×